খাতায়কলমে ছ'টি অঞ্চল। কিন্তু বিদর্ভ এবং মারাঠাওয়াড়াকেই 'গেটওয়ে অফ মুম্বই' হিসেবে বিবেচনা করা হয় মহারাষ্ট্রে🎶। আর 'গেটওয়ে অফ মুম্বই' দিয়ে প্রবেশ করে মহারাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করবে কোন জোট (মহায্যুতি এবং মহা বিকাশ আঘাড়ি), তা নির্ধারিত হবে বুধবার (২০ মে)। বুধবার মহারাষ্ট্রের ২৮৮টি বিধানসভা আসনে ভোটগ্রহণ হতে চলেছে। রাজ্যের ২৮৮টি বিধানসভা আসনে একদফাতেই ভোটগ্রহণ হবে। পাঁচ বছর আগে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পটভূমি যা ছিল, তা পুরোপুরি পালটে যাওয়ায় আকর্ষণীয় লড়াইয়ের মঞ্চ তৈরি হয়ে আছে মারাঠাভূমে। আর তাতে কে বাজিমাত করবে, সেটা বোঝা যা🌌বে আগামী ২৩ নভেম্বর (শনিবার)।
বিদর্ভ থেকে মারাঠাওয়াড়া- মহারাষ্ট্রের ৬ অঞ্চল
মহারাষ্ট্রের ভোট-মানচিত্রে মোট ছ'টি অঞ্চল আছে - কোঙ্কন (৩৯টি আসন), মুম্বই (৩৬﷽টি আসন), পশ্চিম মহারাষꦅ্ট্র (৭০টি আসন), উত্তর মহারাষ্ট্র (৩৫টি আসন), মারাঠাওয়াড়া (৪৬টি আসন) এবং বিদর্ভ (৬২টি আসন)। খাতায়কলমে পশ্চিম মহারাষ্ট্রে সবথেকে বেশি আসন থাকলেও তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়া মারাঠাওয়াড়া এবং বিদর্ভই মহারাষ্ট্রের ভোট-ভাগ্য নির্ধারণ করবে বলে অনুমান রাজনৈতিক মহলের।
মুম্বইয়ের রাস্তা হয়ে যায় বিদর্ভ দিয়ে
ঐতিহাসিকভাবে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে বিদর্ভ অঞ্চল (বিদর্ভ অঞ্চলের নাগপুরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সদর দফতরও অবস্থিত)। আর ꧙মহারাষ্ট্রের ক্ষমতা দখল করতে বিদর্ভে সর্বোচ্চ আসন জিততে মরিয়া বিজেপি এবং কংগ্রেসের জোট। একটা সময় বিদর্ভ 🐠এলাকায় দাপট ছিল কংগ্রেসের। নব্বইয়ের দশক থেকে গুটিগুটি পায়ে বিদর্ভে দাপট বাড়াতে শুরু করে বিজেপি।
২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেবেন্দ্র ফড়ণবীস যে মহারাষ্ট্রের কুর্সিতে ছিলেন, তাতে বিদরඣ্ভ অঞ্চলের বিশেষ ভূমিকা ছিল। শুধু ফড়ণবীস নন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলে, বিজেপি সভাপতি চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে-সহ একাধিক হেভিওয়েট নেতা লড়াই করছেন বিদর্ভ থেকে। ফলে বিদর্ভ থেকে মুখ্যমন্ত্রীও পেতে পারে মহারাষ্ট্র।
ঐতিহ�🧸�াসিকভাবে ১১টি বিদর্ভ জেলার ৬২টি বিধানসভা আসনের মধ্যে যে দল বেশি আসন পায়, সেই দলই 'মন্ত্রালয়'-র (রাজ্যের সচিবালয়) ক্ষমতা দখল করে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিদর্ভে দুর্দান্ত ফল করেছিল বিজেপি। জিতেছিল ৪৪টি আসন। পাঁচ বছরে সেই সংখ্যাটা ২৯-তে ঠেকেছিল।
তবে বিজেপির মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল। ৪২টি বিধানসভায় এগিয়েছিল কংগ্রেস। আর বিজেপির লিড ছিল মাত্র ১৯টি আসন𓄧ে। আর বিধানসভা ♛নির্বাচনে ৩৫টি আসনে সরাসরি বিজেপি এবং কংগ্রেসের লড়াই হচ্ছে। বিজেপির কাছে স্বস্তির বিষয় এটাই যে কংগ্রেসের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই হলে পদ্মশিবিরই ভালো ফল করে। সেটাই আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে বিজেপিকে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা নির্বাচনের সময় ময়দানে ছিল না আরএসএস। কিন্তু বিধানসভা ভোটে দাঁতে-দাঁত চেপে ময়দানে পড়ে আছে সংঘ। সেটা বিজেপির জন্য অ্যাডভান্টেজ হবে। তবে সয়াবিন এবং তুলোর দাম নিয়ে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তাতে বিজেপি ডুবতে পারে। সেইসঙ্গে ছোট দলগুলির পারফরম্যান্স কেমন হয়, সেটা♔র উপরও বিদর্ভ অঞ্চলের ফলাফল অনেকাংশে নির্ভর করবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
মারাঠা বনাম ওবিসি ভোটের লড়াই?
সেই কৃষক অসন্তোষ মারাঠাওয়াড়া অঞ্চলেও বিজেপিকে ভোগাতে পারে। রাজনৈতিক মহলের মতে, মারাঠাওয়াড়ায় বিজেপির মাথাব্যথার কারণ হতে পারে মারাঠা ভোট। মারাঠা বনাম অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির ভোটের লড়াইয়ে মারাঠাওয়াড়ার ভাগ্য নির্ধারণ হতে পারে বলে করছে রাজনৈতিক মহল। মারাঠা সংরক্ষণের দাবিতে লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়া মনোজ জারঙ্গে পাটিল বিধানসভা ভোটে না দাঁড়ালেও তিনি বিজেপি জোটের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আ♔র্জি জাﷺনিয়েছেন।
আর সেই মারাঠা ভোট মহা বিকাশ আঘাড়ির ঝুলিতে যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষ🤪করা। সেই পরিস্থিতিতে বিজেপি কতটা সাফল্যের সঙ্গে জাতপাত এবং ধর্মীয় মেরুকরণের তাস খেলে ওবিসি ভোটকে এককাট্টা ভোটকে কতটা করতে পেরেছে, তা মারাঠাওয়াড়ার ভাগ্যনির্ধারণ꧂ করবে। আর শেষপর্যন্ত খরাপ্রবণ এলাকায় যে ফুল ফোটাতে পারবে, সেটা বোঝা যাবে ২৩ নভেম্বর।
মহারাষ্ট্রে জোটের ইতিবৃত্ত
১) মহায্যুতি: বিজেপি, শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠী) এবং এনসিপ𝄹ি (অজিত পাওয়ার গোষ্ঠী)।
২) মহা𓆉 বিকাশ আঘাড়ি: কংগ্রেস, শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী) এবং এনসিপি (শরদ পাওয়ার গোষ্ঠী)।