আট দফা নির্বাচনের নির্ঘন্ট প্রকাশের পর এই প্রথম কলকাতায় পা রাখছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রিগেড সমাবেশ হয়ে উঠতে চলেছে মেগা ইভেন্ট। এখান থেকেই বঙ্গ–বিজেপি তথা বাংলার মানুষের কাছে বার্তা দেবেন তিনি। বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই এই ব্রিগেড সমাবেশ হাইভোল্টেজ হয়ে উঠতে চলেছে। পাল্টা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রবিবাসরীয় বারবেলায় শিলিগুড়িতে ‘সিলিন্ডার মিছিল’ করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কোপ পড়েছে মধ্য–নিম্নবিত্তের হেঁসেলে। দাম বৃদ্ধিতে জেরবার সেই মা–বোনদের সঙ্গে নিয়েই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে দার্জিলিং মোড় থেকে হিলকার্ট রোড ধরে হাসমিচক (ভেনাস মোড়) পর্যন্ত মিছিল করবেন তৃণমূলনেত্রী। সুতরাং রাজ্য–রাজনীতি এখন জমজমাট হয়ে উঠেছে।এই বিষয়ে শনিবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আমি শিলিগুড়িতে প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দেবো। আমরা সিলিন্ডার বহন করব। রাজ্য সরকার মানুষকে বিনামূল্যে খাবার দেয়। রান্নার গ্যাসের দাম ৯০০ টাকা হতে চলেছে এটা মেনে নেওয়া যায় না। সাধারণ মানুষ বাঁচবে কি করে?’ নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের পরই সাধারণ মানুষের ইস্যু নিয়ে এই মিছিল। উত্তরবঙ্গে জোরদার প্রচারপর্বের সূচনায় এটাই হতে চলেছে তৃণমূল সুপ্রিমোর ব্রহ্মাস্ত্র বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।এদিকে মোদীর ব্রিগেড সমাবেশকে অন্য মাত্রা দিতে বিজেপি নেতারা চেষ্টা করছেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে হাজির করতে। কিছুদিন আগে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত। আর রবিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদযাত্রাকে বিরোধী শিবির ভোট প্রচার হিসেবে দেখলেও, এই পদযাত্রার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ তাঁদের ধারণা, শিলিগুড়ির রাস্তায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিপুল সংখ্যক মহিলার পদধ্বনি সমাজের কাছে নারীশক্তির জাগরণের বার্তা দেবে। মহিলাদের সুরক্ষা ও স্বনির্ভরতার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে বড় ভরসা, সেই দিকটিও প্রতিষ্ঠিত হবে বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।এখানে তিনটি আসনই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও আসনে প্রার্থী দিচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১৯ সালের লোকসভা আসনে এখানে জমি হারিয়েছিল ঘাসফুল। যার ফলে গতবারের লোকসভা আসন ৩৪ থেকে নেমে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছিল ২২। এবার শিলিগুড়ি থেকে প্রার্থী হয়েছেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। তিনি আগে কংগ্রেসে ছিলেন। তাই এবারের শিলিগুড়ির সিলিন্ডার মিছিলকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসাবেই দেখা হচ্ছে। রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘শিলিগুড়িতে মমতার এই পদযাত্রা শুধু শিলিগুড়ি বা উত্তরবঙ্গ নয়, গোটা দেশের কাছে নারীশক্তির বিকাশ ও স্বনির্ভরতার বিশেষ বার্তা পৌঁছে দেবে। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্ষরিক অর্থেই নারীশক্তির বিকাশ তথা উন্নয়নের আদর্শ রোল মডেল।’