রাজ্য–রাজনীতির অলিন্দে ধরেই নেওয়া হয়েছিল এবারের বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই হবে তৃণমূল কংগ্রেস বনাম বিজেপির। কিন্তু ব্রিগেডের মাঠে দাঁড়িয়ে আজ সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাইলেন বামপন্থীরাই বিকল্প। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপি নিজেদের মধ্যে এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায় দেখ করছে। আমাদের এসবের মধ্যে যাওয়ার দরকার নেই। আমাদের বিকল্প নিয়ে মানুষের কাছে যেতে হবে।’ কিন্তু মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার এই বার্তা নিয়ে যাওয়ার আর সময় নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।কিন্তু কাদের কাছে এই বিকল্প বার্তা নিয়ে যেতে হবে? সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘জাত–ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ নিপীড়িত হচ্ছেন। তাঁদের কাছেই আমাদের পৌঁছে যেতে হবে। রাজনীতিতে এখন তরজা গান চলছে। একজনই একবার এ পক্ষের হয়ে গাইছে, আবার ও পক্ষের হয়েও গাইছে। এই তরজার গান লেখা হচ্ছে যাতে মোরগ–মোরগ লড়াই হয়, আর তারা হাড়গোড় চিবিয়ে খেতে পারে। প্রকৃত শোষণ–বঞ্চনাকে চাপা দেওয়ার জন্যই তাদের এই কৌশল। আমাদের লড়াই তাদের বিরুদ্ধেই।’সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক যখন এই বিকল্পের ডাক দিচ্ছেন তখন মঞ্চে উপস্থিত বিমান বসু, সীতারাম ইয়েচুরি, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, আবদুল মান্না, প্রদীপ ভট্টাচার্য, অধীর চৌধুরী–সহ অন্যান্য বাম–কংগ্রেস–আইএসএফ নেতৃত্ব। আর রয়েছেন ঐশী ঘোষ–সৃজনের মতো তরুণ নেতৃত্বও। চলচ্চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদার, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, বাদশা মৈত্র এবং শ্রীলেখা মিত্রের মতো বিদ্বজ্জনেরা।এখানে সবার সামনে প্রকাশ্যে সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষই শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ ও কৃষক। এই বৈষম্য এবং ভাগাভাগির রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আমরা একটা বিকল্প চাই। আমরা কাজ চাই। বেকারের দাবি নিয়ে লড়াই চাই। শূন্যপদে নিয়োগ চাই। কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তৈরি করতে হবে কর্মসংস্থান। একশো দিনের কাজকে ২০০ দিন করতে হবে। খাদ্যের নিরাপত্তা দিতে হবে। বড় শিল্প করতে হবে।’ তবে এই বিকল্পের বার্তা নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তার রূপরেখা এখানে বলা হয়নি বলেই মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার এই বিকল্পের বার্তা বিধানসভা নির্বাচনে মানুষ কতটা সমর্থন করে। উত্তর মিলবে ২ মে।