এখনও তিনি বিধানসভা নির্বাচনের টিকিট পাবেন কিনা ঠিক হয়নি। অথচ নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন পুরনো কেন্দ্র থেকে তিনি দাঁড়াবেন না। হ্যাঁ, তিনি টলিউড অভিনেত্রী তথা রায়দিঘির বিধায়ক দেবশ্রী রায়। এমনকী রায়দিঘি আসন থেকে দু’বারের বিধায়ক তিনি। তাহলে সেখানে তিনি দাঁড়াতে চাইছেন না কেন? জানা গিয়েছে, ঘনিষ্ঠমহলে তিনি বলেছেন, ‘রায়দিঘি থেকে আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছি না। তবে এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। দলকে সেটা জানিয়ে দেওয়া হবে। এখানে আমি অনেক অপমানিত। টোটো কেলেঙ্কারি নিয়ে অপবাদ সহ্য করতে হয়েছে। দলেরই কিছু লোকজন সেটা করেছে। আমায় ফোনে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।’দেবশ্রীর এই সিদ্ধান্তের কথা এখন প্রকাশ্যে এসে পড়তেই অনেকে বলছেন, এবার উনি টিকিট পাবেন না। কারণ দলকে লুকিয়ে বিজেপিতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। সেটা হয়নি বলে ফেরত এসেছেন। তাছাড়া দেবশ্রীর জয়ের পিছনে তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ ২৪ পরগণার তৎকালীন পর্যবেক্ষক শোভন চট্টেপাধ্যায়ের হাত ছিল। এবার তা নেই। তাই বিকল্প কেন্দ্র খুঁজছেন তিনি। কিন্তু রায়দিঘির পরিবর্তে কোনও কেন্দ্র তাঁর পছন্দ? দেবশ্রী অবশ্য এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘সেটা ভেবে দেখা হয়নি। তবে দলে আলোচনা হলে তখন ভেবে দেখব।’ইতিমধ্যেই সেখানের প্রচারে গিয়ে রায়দিঘির বিধায়ক কোনও কাজ করেননি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় দেবশ্রী। শোভন চট্টোপাধ্যায় কিছুদিন আগে রায়দিঘিতে গিয়ে সেখানকার মানুষের কাছে দেবশ্রীকে জেতানোর জন্য সব দায় নিজের কাঁধে নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছেন। তাই কি এই কেন্দ্র থেকে তিনি সরে দাঁড়াতে চাইছেন? উঠছে প্রশ্ন। এই বিষয়ে দেবশ্রী বলেন, ‘এটা আমার পুরনো কেন্দ্র। আমি যেন আবার ওখান থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি সেটা এখানকার মানুষের দাবি। কিন্তু আমি আর চাইছি না। আমি একজন শিল্পী। সম্মানের সঙ্গে বড় হয়েছি। তাই কেউ অপমান করলে তা নিয়ে চলতে অসুবিধা হয়।’তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরের খবর, শোভন–দেবশ্রীর ভাল সম্পর্ক ছিল। ২০১৬ সালে দেবশ্রীকে রায়দিঘিতে ফের টিকিট দেওয়ার ব্যাপারে দল দ্বিধায় ছিল। তখন শোভন তাঁকে জেতানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। এখন পরিস্থিতি পালটেছে। শোভন এখন বিজেপিতে। আর জেলার নেতা–কর্মীরা দেবশ্রীর হয়ে নাকি খাটতে চাইছেন না। সুতরাং এখন প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রায়দিঘিতে। তাই আর সেই কেন্দ্র থেকে তিনি লড়াই করতে চাইছেন না বলে সূত্রের খবর।