প্রার্থী হতে না পেরে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিলেন রায়দিঘির বিদায়ী বিধায়ক দেবশ্রী রায়। সম্প্রতি দলীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে দল ছেড়েছেন তিনি। তৃণমূলের থেকে সম্পর্ক ত্যাগের পর এবিপি আনন্দে সাক্ষাৎকারে বিদায়ী বিধায়ক বলেন, ‘আমি শর্ত দিয়েছিলাম রায়দিঘি থেকে দাঁড়াব না। তারপর কুণাল ঘোষের সঙ্গে আমার দেখা হয়। ফোনে কথাও হয়। উনি বলেন, দলের বিরুদ্ধে কিছু বলবেন না আপনি। আমি ওকে বলি, দশ বছর ধরে বিধায়ক রয়েছি। চ্যালেঞ্জ করে বলছি, কোনও সংবাদমাধ্যম কিছু বলতে পারবে না যে দলের বিরুদ্ধে কিছু বলেছি।’ পরবর্তী ক্ষেত্রে তৃণমূল মুখপাত্র সমস্যা সমাধানে তাঁকে সময় দেননি বলেও উষ্মাপ্রকাশ করেন দেবশ্রী।একইসঙ্গে রায়দিঘি আসনে দু'দুবার জিতেও দলের কাছ থেকে তেমন কোনও কদর পাননি বলেও অভিযোগ করেন দেবশ্রী। ওই সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘একটা সময় রায়দিঘিতে কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে চাননি। সকলে প্রত্যাখান করেছেন। সেই দেবশ্রী রায়কে আনা হয়েছিল, এই আসনটি নেওয়ার জন্য। পরপর দু'বার এই আসনটা দিয়েছি দলকে। তার পরিবর্তে কী পেয়েছি? অবমাননা, অপমান। আমি দলকে জানিয়েও ছিলাম। কিন্তু কোনও জবাব পাইনি।’রায়দিঘি কেন্দ্রে প্রার্থী হতে না চাওয়া নিয়েও খোলসা করেছেন দেবশ্রী। তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন অপমানিত হয়েছি। আমার এলাকা থেকে নবান্নে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গিয়েছে। তাও চুপ করে থেকেছি। একজন বিশেষ ব্যক্তি। তাঁর বিধায়ক হওয়ার খুব শখ ছিল। আমার সঙ্গে নোংরামি করা হয়েছে। আমায় ভয় দেখানো হয়েছে।দলকে সব জানিয়েছি। কিন্তু জানিয়েও কিছু লাভ হয়নি।’ একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘অভিনয় জগতেই ফিরে যেতে চাই। অভিনয়ে মনোনিবেশ করতে চাই। উদাস হয়ে গেলাম। মনটা ভেঙে গেল, এমনটা নয়। আমি ভালো আছি।’উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রাক্তন মন্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একসময়ে দেবশ্রীর ‘সুসম্পর্ক’ ছিল। রাজনৈতিক মহলের মতে, দেবশ্রীর টিকিট পাওয়ার পিছনে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। কিন্তু ইদানিং তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নয়। শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে যাওয়ার পর জানা যায়, দেবশ্রী রায়ও বিজেপিতে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু শোভনের শর্ত ছিল, দেবশ্রী বিজেপিতে এলে তিনি বিজেপিতে থাকবেন না্। তবে এখন অবশ্য শোভন–বৈশাখী দু'জনেই বিজেপি ত্যাগ করেছেন। এখন দেখার দেবশ্রী কী করেন?