একসময়ের লাল দুর্গ বলে পরিচিত হুগলির আরামবাগ। সেই আরামবাগের আরান্ডিতে একেবারে জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুলে মঙ্গলবার দুপুরে গ্রামবাসীদের একাংশ তাড়া করলেন তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলকে। ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে খোলা মাঠে ছুটছেন সুজাতা মণ্ডল। তাঁর পেছনে ছুটছেন বাসিন্দাদের একাংশ। মহিলারাও ছিলেন সেই দলে। সুজাতা মণ্ডলের দাবি আমাকে বাঁশ, লাঠি, হাঁসুয়া দিয়ে মারার চেষ্টা হয়েছিল। বিজেপি আমারে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীর মাথাও ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে সুজাতা মণ্ডলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। মঙ্গলবার দুপুর। ঠা ঠা রোদের মধ্যেই এলাকায় ঘুরছিলেন সুজাতা মণ্ডল। আচমকাই খবর আসে আরান্ডি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি বুথে জ্যাম করার চেষ্টা হচ্ছে। সেই খবর শুনে নিরাপত্তারক্ষীকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় পৌঁছন সুজাতা। এদিকে গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ তিনি গ্রামে ঢুকে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছিলেন। গ্রামের কয়েকজনকে তিনি মারধরও করেছেন বলে অভিযোগ। এরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। গ্রামবাসীদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়েন সুজাতা মণ্ডল। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে জমির আল ধরে ছুটতে থাকেন তিনি। পেছনে তখন বড় বাঁশ, লাঙল হাতে উত্তেজিত জনতা। কয়েকজন পুলিশ কর্মী কোনওরকমে তাঁকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। কিন্ত কে শোনে কার কথা। জমির আলে দাঁড়িয়ে থাকা বাসিন্দাদের অনেকেরই গলায় তখন জয় শ্রীরাম ধ্বনি। কোনওরকমে এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে আসেন সুজাতা মণ্ডল। তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল প্রার্থী। এদিকে গ্রামবাসীদের একাংশের পালটা অভিযোগ সুজাতার নিরাপত্তারক্ষী এদিন গ্রামবাসীদের দিকে বন্দুক তাক করেছিলেন। এদিকে গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে। তবে এদিনের এই ছবি দেখে অনেকেরই মানস ভুঁইয়ার কথা, মঙ্গলকোটের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। তবে এদিনের সুজাতাকাণ্ডকে ঘিরে নড়েচড়ে বসেছে কমিশন। জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে এব্যাপারে রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রসঙ্গত ভোটের আগে স্বামী তথা বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর হাত কার্যত ছেড়ে, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সুজাতা মণ্ডল। এরপর আরামবাগ আসন থেকে তৃণমূলের হয়ে ভোটে লড়ার টিকিট পান তিনি। কিন্ত ভোটের দিন সেই আরামবাগেই চরম বিড়ম্বনায় পড়লেন তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল।