'শুনতে কি চাও', 'পুরনো গিটার', দুটোই তাঁর তৈরি পৃথক গানের অ্যালবাম। তবে এই দুটি কথা একসঙ্গে যদি জুড়ে দেওয়া যায়, তাহলে দাঁড𓆉়ায়, ‘শুনতে কি চাও-পুরনো গিটার’? আর এই প্রশ্নের উত্তরে আজও হয়ত একত্রে, একই সুরে সুর মিলিয়ে তাঁর অনুরাগীরা বলবেন হ্যাঁ। আর এই অ্যালবাম গুলি কার, তাঁর নামটা🅠 নিশ্চয় বলতে হবেনা।
হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন ইনি অঞ্জন দত্ত। আজ ৭১-এ পা দিলেন কিংবদন্তি গায়ক, অভিনেতা। নিজের জন্মদিন⛄ে অঞ্জন দত্ত লিখেছেন, ‘৭০টা বছর এমনি এমনি অতীত হয়ে যায় নি। আমার আত্মা যা করতে চেয়েছে আমি বেছে নিয়েছি। দার্জিলিং শহরে সবে শুরুটা হয়েছিল। আজ আমি আমার সেই প্রিয় দার্জিলিং শহরে এসে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এখানে সেন্ট পলস স্কুলে আমি প্রথমবার মঞ্চে পা রেখেছিলাম। থিয়েটার এবং অভিনয়ের প্রেমে পড়েছি। এখানেই আমি প্রথম জন ডেনভার, জিমি ক্যাশ এবং ডঃ হুকের কথা শুনেছিলাম এবং গিটারে কয়েকটি কর্ড বাজাতে শিখেছিলাম। ১৯-এ আমি একইভাবে মরিয়া হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে প্𝐆রথম থিয়েটার পরিচালনা করি। মৃণাল সেন হঠাৎ আমার থিয়েটার দেখেন এবং আক্ষরিক অর্থে তাঁর সিনেমায় অভিনয় করতে বলেন। পরবর্তী প্রযোজনাগুলি অনুমতিমূলক এবং রাজনৈতিকভাবে ভুল হওয়ার জন্য তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়’।
এখানেই শেষ নয়, অঞ্জন দত্ত আরও লিখেছেন, ‘আমি থিয়েটারে বেশি আগ্রহী ছিলাম এবং পশ্চিম বার্লিনে চলে যেতে চেয়েছিলাম। আমি সিনেমার প্রতি খুব একটা আগ্রহী ছিলাম না। মৃণাল সেন সিনেমার জগৎ খুলে দিলেন এবং আমিও ভেসে গিয়েছিলাম। আমি শুধু তার পাগলের জগতে পড়েছিলাম যেটা আমার থেকে আলাদা। আমি এক বছর পর বার্লিন থেকে ফিরে এসেছিলাম মৃণাল সেনের একজন সহকারী হওয়ার জন্য। আমি জানতাম, যে আমি একজন বিখ্যাত অভিনেতা হতে পারব না কারণ আমার বাংলা সিনেমায় তীব্র বাধা নিষেধ ছিল। ৮০ এর দশকে, মুষ্টিমেয় আর্ট ফিল্ম ডিরেক্টর ছাড়া যাঁরা আমার কাজের যত্ন নিতেন, আমি তেমন কিছু নির্মাতাদের কাছ থেকে কয়েকটি কাজের প্রস্তাব পেয়েছি। যাঁদের চিত্রনাট্যগুলি এতটাই খারাপ ছিল যে আমি মূলধারღাকে এড়িয়ে চলেছি।’
এখানেই থামেননি, অঞ্জন দত্ত আরও লেখেন, 'আমি আমার ব্যালাডগুলি গাওয়ার সুযোগ নিয়েছিলাম তা কেবল আর্থিক কারণেই। ৪০ বছর বয়সে তারা আমাকে দারিদ্র্যের হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। তারপর আমি নির্দিষ্ট কিছু মানুষদের জন্য আলাদা হতে পেরেছিলাম।💫 আমি আমার সিনেমার জ💦ন্য কিছু তহবিল পাই। বড়াদিন (পরিচালক অঞ্জন দত্তের ছবি) ছিল বিপর্যয়। বো ব্যারাক, বং কানেকশন আমাকে শ্রোতা দিয়েছে। আমি যেটা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতাম সেটাই করতে লাগলাম। সিনেমা...'
আমার গান এবং সিনেমা সবসময় জনপ্রিয় ছিল, কিন্তু বছর পার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৯০ এর দশকের শেষের দিকে, জনপ্রিয় বাংলা সিনেমা একটা অদ্ভুত মোড় নেয়। এটা নতুন ধারণার জন্য উন্মুক্ত হয়েছিল। তাই আমার পপুলিস্ট ফিল্মগুলো পরীক্ষামূলক হয়ে ওঠে। আমার অনুরাগীদের সিংহভাগ দেশ বা বিশ্বের অন্যান্য অংশে চলে গꦛিয়েছে। তাঁরা কলকাতার হলে আসতে পারে ন⛎া। তাঁদের Amazon বা hoichoi -এর জন্য অপেক্ষা করতে হয়…'
অঞ্জন দত্ত আরও লেখেন, ‘এমনকি আমার কনসার্টগুলি বেশিরভাগই প্যান ইন্ডিয়ান বা বিদেশে হয়। কল্যাণী বা বর্ধমানের হলগুলিতে নিয়মিত অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রথমত আমার ফি শহরতলির হলগুলিতে কার্যকর হওไয়ার জন্য খুব বেশি মাচায় অভিনয় করি না। তবুও আমি এখনও অনেক বছর ধরে পরিবর্তনগুলি উপভোগ করছি, আমার নিজের শর্তে তাদের সঙ্গে মোকাবিলা করছি।’
শিল্পীর কথায়, ‘আমি আমার🤪 সমস্ত শ্রোতা এবং দর্শকদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ, আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমার মর্যাদাকে সম্মান করার জন্য। আমি সত্যিই অভিভূত যে আমার বেশিরভাগ শ্রোতা এবং দর্শকরা আমাকে সেলিব্রিটি হিসাবে বিবেচনা করেন না। ছেড়ে দাও গুরু। অ্যাংলো বাংলার একটা ইতিহাস আছে যা আমি প্রথমবারের মতো বাংলা গান এবং বাংলা সিনেমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পেরেছি। আমি অ্যাংলো বাংলার ঐতিহ্য ভালোবাসি। আমি সেই ইতিহাসের ফসল যা এখনও কলকাতা এবং দার্জিলিংয়ে বিদ্যমান। মহাজাগতিক বাঙ্ꦐগালিয়ানা-র সারমর্মকে বাবু সংস্কৃতিতে মোচড় দেওয়ার জন্য যে শক্তিগুলি খুব চেষ্টা করে তারা পুরোপুরি জিততে পারে না। কলকাতার প্রতিটি পুরানো অংশে ইংরেজীকৃত বাঙালির ঐতিহ্য বা ইতিহাস রয়েছে। এটা বই এবং রেস্তোঁরাগুলিতেও রয়েছে যা আপনাদেরপ অনেকেই পছন্দ করেন। এটা আছে এবং সবসময় থাকবে।’
অঞ্জন দত্ত সবশেষে লেখেন, 'প্রতিটি জনপ্রিয় ব্যক্তির একটি স্ব শৈলী আছে। বংগুলি আমার গাঢ় চশমা এবং মদ্যপানের অভ্যাসকে অদ্ভুতভাবে খুঁজে পেয়েছিল। স্বাস্থ্যসচেতন, রাজনৈতিকভাবে সঠিক লোকেরা এখনও আমাকে অস্বস্তিকর, হজম করা কঠিন বলে মনে করেন। কিন্তু, আমার কোন অভিযোগ নেই। আমি কল্পনার চেয়েও বেশি ভালোবাসা পেয়েছি। জানুয়ারি খুব ভালো কাটুক। আনন্দ করুন༺, শুধু পুরানো ফ্যাশন হয়ে উঠবেন না।'