তিন দিন আগেই করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল ফকির আলমগীরের। গতকাল শারীরিক অবস্থা বিগড়ে যাওয়ায় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে কোভিড ইউনিটে ভর্তি করা হয় এই গণসংগীতশিল্পীকে। পরিস্থিতি বিগড়ে যাওয়ায় আপতত শিল্পীকে রাখা হয়েছে আইসিইউতে রাখা হয়েছে তাঁকে। শুক্রবার সকালে ফকির আলমগীরের স্ত্রী সুরাইয়া আলমগীর বলেন, ‘গত বুধবার ফকির আলমগীরের করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট ‘পজিটিভ' আসার পর চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ তার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই৷’ষাটের দশক থেকে গণসংগীতের সঙ্গে যুক্ত ফকির আলমগীর ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেব ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে শামিল হন৷ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন৷স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে মাটির সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রাখেন ৭১ বছর বয়সি এই শিল্পী৷ সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে ফকির আলমগীরকে একুশে পদক দেয় সরকার৷দীর্ঘ কেরিয়ারে শিল্পীর কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়৷ ১৯৮২ সালের বিটিভির আনন্দমেলা অনুষ্ঠানে তাঁর গাওয়া ও সুর দেওয়া ‘ও সখিনা’ গানটি এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে৷ ফকির আলমগীর সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠাতা, গণসংগীত চর্চার আরেক সংগঠন গণসংগীত শিল্পী পরিষদের সাবেক সভাপতি৷ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা ফকির আলমগীর গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করেন৷শিল্পীর লেখা ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান’, ‘গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান’, ‘আমার কথা’, ‘যারা আছেন হৃদয় পটে’সহ বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ হয়েছে৷