আরজি কর কাণ্ডে রাজ্যজুড়ে হুলুস্থুল পড়েছে। প্রতিবাদে সরব হয়েছেন রাজ্যবাসী। আর তাই স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগের দিন রাতে, অর্থাৎ ১৪ অগস্ট শহর কলকাতার রাস্তা দখল করেছিলেন এই রাজ্যের মহিলারা। আম জনতার সঙ্গে পা মিলিয়ে পথে নেমে আসেন তারকারাও। এরই মাঝে ঘটে যায় অপ্রত্যাশিত ঘটনা। ঘটনাস্থল ফের সেই আরজি কর হাসপাতালেই ভাঙচুর চালায় কিছু দুষ্কৃতী। আর এমন ঘটনায় স্তম্ভিত বহু তারকাই সরব হয়েছেন। আর এবার মুখ খুলেছেন অভিনেতা, নাট্য ব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন। আর তাঁর বক্তব্য উ💃ঠে এসেছে ছেলে ঋদ্ধি সেনের ফেসবুকের পাতা থেকে।
ঠিক কী বলছেন কৌশিক সেন?
কৌশিক সেন বলেন, ‘বিগত কয়েকদিন কলকাতা শহরে যা যা ঘটে চলেছে, তা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। এই ঘটনার আঁচ শুধু কলকাতায় নয়, কলকাতা ছাড়িয়ে রাজ্যে বাইরে, এমনকি দেশের বাইরেও এর প্রভাব পড়েছে, আর পড়াটাই স্বাভাবিক। যে জঘন্য ও নারকীয় ঘটনা আর জি করে ঘটেছে, আমাদের সহ-নাগরিক মেয়েটির সঙ্গে ঘটেছে, তা শুধু সেখানেই সীমাবদ্ধ নয়। বোঝা যাচ্ছে, এই ঘটনার শিকড় আরও গভীরভাবে প্রোথিত রয়েছে। আর তা🧔 নাহলে আমাদের রা𒅌জ্য সরকার/তৃণমূল সরকার কেন এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে? কেনই বা গতকাল (বুধবার) রাতে যখন বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের ঢল নেমেছে, মেয়েরা রাস্তায় নেমেছেন, তখন সেই প্রতিবাদের পিছনে মুখ লুকিয়ে একদল দুষ্কৃতী কীভাবে আরজি করে আবার হামলা চালালো! আর সেটাও পুলিশের সামনে!’
কৌশিক আরও বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতি) সকালবেলা জুনিয়র ডাক্তার, নার্সরা কীভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন, এমনকি পুলিশ তাঁদের কাছে এসে আশ্রয় চেয়েছেন! পুলিশ পালাতে ব্যস্ত ছিল। পুলিশও আক্রান্ত। কিন্তু কেন? কার অদৃশ্য অঙ্গুলী হেলনে পুলিশ নিষ্ক্রিয়? পুলিশ এই ভাঙচুরটা হতে দিল! তাহলে কি আবার গতকাল রাতে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছিল? এই প্রশ্নের উত্তর আপনারাও খুঁজছেন, আমরাও খুঁজছি। এছড়াও আরও প্রশ্ন আছে। যে কে মেয়েটির বাড়িতে ফোন করে বলেছিলেন, যে সে আত্মহত্যা করেছে? কে এই সন্দীপ ঘোষ? যাঁকে বাঁচানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আরজিকর থেকে সরিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অন্য জায়গায় পোস্টিং দিচ্ছেন? যে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, যাঁকে মেডিক্যালের ছাত্রছাত্রীরা মেনে নিতেই পারছেন না, বলছেন ইনি সম্পূর্ণভাবে দূর্নীতিগ্রস্ত। এমনকি তৃণমূল নেতাও সরাসরি এই সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। জ🍸ানিয়েছেন, তাঁরা একটা র্যাকেট চালায়, সেই সন্দীপ ঘোষকে বাঁচানোর জন্য তৃণমূল নেতৃত্ব এত ব্যস্ত কেন? এই প্রশ্ন তো উঠবেই।’
কৌশিক সেন আরও বলেন, ‘২০০৭ সাল থেকে আমরা যাঁরা সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের সময় থেকে সরব ছিলাম। মূলত আমি কখনও সিপিএম, তৃণমূল কিংবা বিজেপি কারোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য আমি কোন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করিনি। এমনকি এই আন্দোলনে অনেক প্রতিবাদী মুখকেই হয়ত আপনার ২১ জুলাই-এর মঞ্চেও দেখেছেন, আমাকে কিন্তু কখনও দেখেননি। আগের সরকার এবং এই সরকারের আমলে কোন কোন ক্ষেত্রে আমি সরব হয়েছি, তার তালিকা প্রকাশ করতে কুণ্ঠা বোধ হয়…। আরাবুল ইসলাম থেকে থেকে কামদুনি, সিএ, সব ক্ষেত্রেই আমি মুখ খুলেছি, তবে সেটা অরাজনৈতিক প্ল্যার্টফর্ম থে💮কে। এর জন্য আমি গণমাধ্যমেই যা বলার বলেছি। কিংবা যখন কোনও চ্যানেলে যুক্তি-তক্কের অনুষ্ঠান হয়েছে তখন আমি আমার বক্তব্য জানিয়েছি। কেউ যদি সেগুলো না শোনেন, না পড়েন, তাহলে আমার কিছু নেই।’
তৃণমূল সরকারের অরাজকতার বিরুদ্ধে আমি বলেছি, ও বলব। তবে কোনও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে বলব না। তার জন্য কেউ যদি আমায় সুবিধাবাদী বলেন তো বলবেন। তবে আমি কোনও রাজনৈতিক প্ল্যার্টফর্মে যাব না। আরজিকরের ঘটনায় জুনিয়ার ডাক্তারদের আহ্বানে আমি আর আমার স্ত্রী রেশমি তাঁদের মিছিলে হেঁটেছি, গতকাল রাতে মেয়েদের আহ্বানেও পথে নেমেছি। প্রকাশ্যে তৃণমূল সরকার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। তবে কোনও বিরোধী দলের মাধ্যমে নয়। আবার বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে বলার জ🅠ন্যও আমি কখনও তৃণমূলের কাছে যায়নি🔥। সবশেষে বলব, আরজি করের ঘটনার প্রতিকার চাই। একটা জিনিস স্পষ্ট তৃণমূল সরকার কিছু একটা লুকোচ্ছে। মানুষের আন্দোলন বলছে এগুলো চাপা থাকার নয়। তাই মনে হয় সরকারের সত্যের মুখোমুখি দাঁড়ানো উচিত। সকলের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। কারণ তৃণমূলের ভিতর থেকেই আওয়াজ উঠছে। যেটা সুলক্ষণ বলে আমি মনে করি। আপনারা যাঁরা রাজনৈতিক প্রতিবাদে বিশ্বাসী, তাঁরা তাঁদের মতো করে প্রতিবাদ করুন। তাঁদের সঙ্গে আমার বিরোধ নেই। তবে আমি কোনও রাজনৈতির প্ল্য়ার্টফর্মে নেই। নিজের জায়গা, বক্তব্য থেকে সরব না। ধন্যবাদ।'