চলতি মাসের ২৮ তারিখ আমাজন প্রাইমে মুক্তি পেয়েছে 'পঞ্চায়েত'-এর তৃতীয় সিজন। কেমন হল? পরিচালক দীপক কুমার মিশ্র কি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারলেন দꦍর্শকদের?
শহরের আরাম আয়েশ ছেড়ে কেবল অর্থ উপার্জনের আশায়, মনে একরাশ বিরক্ত নিয়ে ফুলেরা গ্রামে সচিব হয়ে এসেছিল অভিষেক ত্রিপাঠী। ঘনঘন লোডশেডিং, হ্যান্ড পাম্প, বরযাত্রী, লাউ আর গ্রামের প্রধানজি সব কিছুকেই শুরুতে অপছন্দ করা ছেলেটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে ওঠে ফুলেরার ঘরের ছেলে। বাঁধা পড়ে যায় প্রধানজি, প্রহ্লাদ এবং বিকাশের আন্তরিকতা ও সারল্যে। ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়তে থাকে গ্রামের উৎসব আনন্দ থেকে রোজকার বিবাদে। সঙ্গে ভালবেসে ফেলে গ্রাম প্রধানের মেয়ে রিঙ্কিকে। কিন্তু ঘটনাক্রমে সে রাজনীতির শিকার হয়। সচিবের হাতে আসে বদলির চিঠি, এখানেই শেষ হয়েছিল ‘পঞ্চায়েত সিজন ২’। তারপর প্রায় ২ বছরের অপেক্ষার শেষে চলতি মাসের ২৮ তারিখ আমাজন প্রাইমে মুক্তি পেয়েছে 'পঞ্চায়েত'-এর তৃতীয় সিজন। কেমন হল? পরিচালক দীপক কু﷽মার মি👍শ্র কি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারলেন দর্শকদের?
‘পঞ্চায়েত ৩’ -এর গল্প
গল্পের শুরু হচ্ছে সচিবজিকে দিয়েই। শহরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে সে, তবে তা সুখটান নয়, অভিষেকের মুখে জমে একরাশ চিন্তা। ফুলেরা এখন তাঁর জীবনে অতীত, সামনে পড়ে উজ্বল ভবিষৎ। কিন্তু সে ফুলেরাকে ছাড়লেও ফুলেরা তাকে ছাড়েনি। আলগা সুতো মতো লেগে আছে রিঙ্কির চ্যাটবক্সে। তার থেকেই সেখানকার সব খবর পাচ্ছে নিয়মিত। অন্যদিকে, প্রহ্লাদের অবস্থা হয়ে পড়ে উদ্বেগজনক। পুত্রশোকে কাতর সে। সমাজ-সংসার থেকে বিছিন্ন একটা মানুষ। মঞ্💃জুদেবী থেকে বিকাশ তাঁকে সামলাতে ব্যস্ত। পাশাপাশি বিকাশ, প্রধানজিরা নতুন 💫সচিবের জয়েনিং আটকাতে মরিয়া, কিন্তু বিধায়কের কূটনীতিতে তাঁরা ধরাশায়ী। তবে এর পরেই গল্প আসে নতুন মোড়, ঘটনাক্রমে বদলি আটকে যায় অভিষেকের। নতুন উদ্দ্যমে অভিষেকের বাইক এসে পড়ে ফুলেরার রাস্তায়। এ দৃশ্য যেন প্রথম সিজনে তার গ্রামে আসার সেই ছবি মনে করিয়ে দেয়। তবে শুধু এ দৃশ্যই নয়, সিজিন ৩-এর ছত্রে ছত্রে ছড়িয়ে রয়েছে প্রথম সিজনের নানা নস্টালজিয়া।
যাই হোক, অভিষেক গ্রামে আসার প্রায় পরপরই প্রধানজি ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করে আসন্ন নির্বাচন। নানা লোকসভা নয়, পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর তার জেরেই নিজের অজান্তে নানা ভুল সিদ্ধান্ত নিত💯ে শুরু করে সে। আর তার সব গতিবিধির উপর নজর রেখে গ্রামে নতু🎉ন নতুন সমস্যা তৈরি করতে শুরু করে ভূষণ। শেষে নিজের উদ্দেশ্য সফল করতে সস্ত্রীক, দারস্থ হয় বিধায়কের। বিধায়কের অবশ্য ফুলেরা বা ফুলেরার মানুষের দিকে তাকানোর সময় নেই। কিন্তু, ভূষণের প্ররোচনায় আবার তার নজর গিয়ে পড়ে ফুলেরার উপর। আর তারপরই ঘটতে থাকে একের পর এক কাণ্ড। অন্যদিকে, এই সবের মাঝেই আবার রিঙ্কি ও সচিবজির প্রেমে অঙ্কুর চারাগাছের রূপ নেয়। কিন্তু তারপর কী হল? কোন খাতে বইল সচিবজি, মঞ্জুদেবী, রিঙ্কি, প্রধানজি, প্রহ্লাদ, বিকাশদের জীবন? সেটা নিয়েই ‘পঞ্চায়েত ৩’।
কার অভিনয় কেমন লাগল?
অভিনয়ের দিক থেকে জিতেন্দ্র কুমার অনবদ্য। শুর𝕴ু থেকেই তিনি পুরনো ছন্দে একেবারে সাবলীল ভাবে ধরা দিয়েছেন। প্রধানজি এবং মঞ্জুদেবীর ভূমিকায় রঘুবীর যাদব এবং নীনা গু༒প্তা অতুলনীয় তো বটেই, সঙ্গে তাঁদের নজরকাড়া সম্পর্কের রসায়ন। পাশাপাশি প্রশংসার দাবে রাখে ফয়জল খানের অভিনয়, প্রহ্লাদকে পর্দায় আরও জীবন্ত করে তুলেছেন তিনি। তাঁর অভিনয় আপনার চোখে জল আনতে বাধ্য।
সঙ্গে নজর কেড়েছেন ভূষণ শর্মার ভূমিকায় দুর্গেশ সিংও। তাঁকে দেখলে রাগ হবে যতটা হাসিও ঠিক ততটাই পাবে। পাশাপাশি তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেছেন অশোক পাঠক ও সুনিতা রাজওয়ার। বিনোদ ও ক্রান্তি দেবী চরিত্রে বরাবরের মতোই সাবলীল তাঁরা। বিধায়কের চরিত্রে পঙ্কজ ঝা অতুলনীয়। অভিনেত্রী সানভিকাও রিঙ্কির চরিত্রটি অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন। আসলের🏅 সিরিজের সব কলাকুশলীর অভিনয় এতটাই মনগ্রাহী যে পর্দায় দেখে মনে হবে গল্প হলেই সবটা সত্যি।