রাজু শ্রীবাস্তবের প্রয়ানে শোক প্রকাশ করছেন বিভিন্ন মহল। অনেকেই মনখারাপ প্রকাশ করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। একই ময়দানের মানুষ ছিলেন রাজু শ্রীবাস্তব এবং মীর আফসার আলি। দু'জনেই শুরু থেকেই মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে এসেছেন। রাজু শ্রীবাস♎্তবে চলে যাওয়ায় মন খারাপী লেখা মীরের।
নেটমাধ্যমে দীর্ঘ পোস্টে শোকপ্রকাশ করে মীর লেখেন, ‘মুম্বই ২০০৪, মিরাদোর হোটেল আন্ধেরি। স্টার ওয়ান-২০১৭ দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ-এ এ প্রতিযোগী হিসেবে গিয়েছিলাম। এক্কেবারে প্রথম সিজনে নাম লিখিয়েছিলাম চ্যানেলের আমন্ত্রণে। সেখানেই প্রথম আলাপ। শ্যুটিং-এর পর হোটেলে ঢুকে যখন যে যার নিজের ঘরে বসে পরের এপিসোডের প্রস্তুতি নিচ্ছে… বিশ্বাস করুন আমি যখন লিখছি, ওরা খুব গুরুগম্ভীর ভাবে হাসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। আক্ষরিক অর্থে গম্ভীর আলোচনা চলছে ‘লোক হাসানো’ নিয়ে। সবাই যে যার রুমে ব্যস্ত আর অন্যদিকে একজনের মাথায় তখন অন্য প্ল্যান। অনেক রাতে হঠাৎ ফোন ঘরে ঘরে… রাজু ভাই ফোন করে সবাইকে নিজের ঘরে ডাকছেন।' আরও পড়ুন: প্রয়াত রাজু শ্রীবাস্তব, শোকস্তব্ধ প্রধানমন্ত্রী থেকে একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
তিনি আরও লেখেন, ‘তারপর যেটা হত সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কমেডিয়ানদের মহাসমারোহ। একটা হোটেল রুমে। সুনীল পাল, নবীন প্রভাকর, আহসান কুরেশি, বর্তমান পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান এবং রাজু শ্রীবাস্তব। সব এক ছাদের নিচে এক ঘরে! আমি ছিলাম নীরব পর্যবেক্ষক। দেখতাম কত সহজে মিশে যাচ্ছেন প্রত্যেকের সঙ্গে। সেখানে কোনও ইগো নেই। কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই। সবাই বিনা পারিশ্রমিকে হাসছে আর হাসাচ্ছে। টপ ৬-এ উঠতে পারিনি। আমি আমার মাথায় পোকা নিয়ে ফিরে এসেছি। আমাদের বাংলা টেলিভিশনেও এমন কিছু হওয়া উচিত। সেই স্বপ্নপূরণ করলো জি বাংলা ২০০৬-এ। মীরাক্কেল।’ আরও পড়ুন: মহেশের জন্মদিনে একসঙ্গে জড়ো হয়েছে ভাট পরিবার, হাজির মেয়ে-জামাই আলিয়া-রণবীরও
‘কাট টু ২০১০। মিরাক্কেল সিজন ৫ গ্র্যান্ড ফিনালে। অতিথཧি বিচারক: রাজু শ্রীবাস্তব।’
‘সেটে ঢুকেই জড়িয়ে ধরলেন আমায়। তারপর অনেক কথা। সেগুলি এখানে বলবো না। ওই কথাগুলি ছিল শুধু আমার জন্য। তাই থাক। ওগুলি তোলা থাক। একটা মজার ঘটনা বলেছিলেন। তিনি যে পোশাক পরেছিলেন তার জন্য তাকে প্রশংসা করলেন এবং তিনি হাসতে শুরু করলেন। জিজ্ঞেস করতে বললেন অনেকে নাকি তাঁকে ব্যঙ্গ করে বলতেন: কী রাজু দুর্দান্ত পোশাক পরেছ তুমি। উত্তরে রাজু ভাই বলতেন: হ্যাঁ আজকাল পরছি। আর যে সুরে তিনি বলেছিলেন সেই লাইন! সেই সুর!!!' আরও পড়ুন: মেয়েকে নিয়ে প্রথম ট্রিপ প্রিয়াঙ্কার! ছবিতে ভালোবাসায় ভরালেন রণবীর, সোনালিরা
মীরের সংযোজন, ‘তীক্𓆏ষ্ণ প꧂র্যবেক্ষণ অনুভূতি ছিল তাঁর। এমন বহু মানুষ তাঁর মিমিক্রির বিষয় ছিলেন যাঁদের কেউ চিনতো না। তারা সেলিব্রেটি ছিলেন না। তাঁদের জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন তিনি। অদম্য রাজু শ্রীবাস্তব… উদাহরণ হিসেবে, গজধর ভাইয়া ছিলেন একজন নাপিত, তাঁর গ্রামের বাড়ির।’
শেষে লেখেন, ‘তাঁর আগে সিনেমার পর্দায় বহু শিল্পী কমেডি করেছেন (রাজু ভাই ১৮ বছর কষ্টকর দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন) কিন্তু প্রকৃত অর্থে স্ট্যান্ড আপ কমেডি বলতে আমরা যা বুঝি, তার সর্বপ্রথম না হলেও পথপ্রদর্শক শিল্পী কিন্তু ছিলেন রাজু ভাই। আজকে যাঁরা শুধু কমেডি করে পেট চালাচ্ছেন, তাঁদের জন্য প্রথম মাইক ধরেছিলেন তিনি। বলিউডের বিখ্যাত গায়ক গায়িকাদের জলসায় একজন কমেডিয়ান নিছকই কোনও ‘filler artist’ নন… সেই কমেডিয়ানও যে একজন সম্মানিত শꦯিল্পী, এই দাবী 💟প্রথম শোনা যায় তাঁর মুখে। পোস্টারে কমেডিয়ানের ছবির আয়তন কত হওয়া উচিত সেটার জন্যও লড়তেন তিনি। ইতিহাস হয়তো মনে রাখবে না এসব কথা।’