দুর্গাপুজা, প্রতিবছর এই উৎসবের জন্যই তো অপেক্ষা করে থাকেন বাঙালিরা। তা তাঁরা নিজভূমে থাকুন কিংবা পরভূমে। এবারও ঠিক তাই। দুর্গাপুজোর আনন্দে ইতিমধ্যেই মেতে উঠেছেন বাঙালিরা। আবারও কলকাতার বাঙালি সেলেবদের মতোই মুম্বইতেও দুর্গাপুজোর আনন্দে মাতোয়ারা বাঙালিরা। আরꩲ এবার পুজোয় কী করছেন টিনা দত্ত, দেবিনা বন্দ্যোপাধ্য𝕴ায়, রোহিত রায়, নমিত দাস, সৃজিতা দে-রা?
১. কী বলছেন টিনা দত্ত
দুর্গাপুজো আমার কাছে সবকিছু। এইসময়টা আমরা দীপাবলির মতোই উপহার বিনিময় করি। আমরা একে অপরকে জামাকাপড় এবং নতুন জিনিস দিই, এটাই রীতি। পুজোর ঠিক আগে আগে ঘর পরিষ্কার করি, আর আমরা বাড়িতে পুজো করি, মা দুর্গাকে পদ্ম নিবেদন করি এবং প্রদীপ এবং মোমবাতি এসব জ্বালাই। আমি প্রতি বছর রানির (মুখোপাধ্যায়) দুর্গাপুজো๊য় যাই। ওখানে যেতে বেশ ভালোলাগে। এবার আমার মা এই শহরে আছেন, তাই ওকে নিয়ে প্যান্ডেলে যাব এটা ভেবে রেখেছি। তবে কলকাতার দুর্গাপুজো, থিম, প্যান্ডেল, সবকিছুই আমি খুব মিস করি। আর এটা একটা ফুড ফেস্টিভ্যালও বটে। বাসন্তী পোলাও, মাছের কারি, মটন কষা এবং এইসব খেতে আমি খুবই পছন্দ করি। প্যান্ডেলের কাছে অনেক স্টল আছে, তাই আমার কাছে Fuchka, Egg Rolls আর Chicken Rolls আমার খুব প্রিয়। আমি অষ্টমীর অঞ্জলী আর ধুনুচি নাচে অংশ নিই, কারণ, এগুলো খুবই উপভোগ করি।
২. কী বলছেন দেবিনা বন্দ্যোপাধ্যায়
দুর্গাপূজাই আমাদের বাঙালিদের প্রধান উৎসব। তবে এগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। আমরা নতুন জামাকাপড় পরতাম, সেসব পরে অবিরাম খꦐেলাধুলো করতাম। বন্ধুদের সঙ্গে সারা রাত ঘুরে বেড়ানো, এইসময়টা কোনও বিধিনিষেধ থাকত না। তবে এই মুহূর্তে আমার কাছে দুর্গাপুজো একটা নস্টালজিয়া। কারণ আমি এখন এগ🍰ুলো আমি বাচ্চাদের মধ্যে দিয়ে উপভোগ করি। রানি মুখোপাধ্যায়দের দুর্গাপুজোয় যাওয়ার প্ল্যান করছি। আমরা সবসময় বিজিতের পুজো দেখতে যাই কারণ এটা আমার বাড়ি থেকে সবচেয়ে কাছে। ভিড় তো আছেই, তবু ভিড়ের মধ্যে দিয়ে হেঁটে দুর্গা ঠাকুরের সামনে যাওয়া একটা অন্য আনন্দ। আর দুর্গা মায়ের চোখ দুটো কত সুন্দর আর প্রাণবন্ত হয়, ওটা দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। আর আমি নিশ্চয়ই কোনও প্যান্ডেলের ভিতরে গিয়ে ঝালমুড়ি খাব, এটা আমার ফেভারিট।
৩. কী বলছেন নমিত দাস
আমার বাবা হার্ডকোর বাঙালি কিন্তু আমার মা একজন পাঞ্জাবি। তাই আমি একটি মিশ্র সংস্কৃতিতে জন্মেছি এবং বেড়ে উঠেছি। আমি মুম্বইয়ের বাসিন্দা হওয়ার কারণে ডান্ডিয়া, আর নবরাত্রির সঙ্গে বেশ পরিচিত ছিলাম। মা আমাকে যখন প্যান্ডেলে নিয়ে যেত তখন জানতে পারলাম, বাঙালির দুর্গাপুজো আসলে কী!। দুর্গাপুজোয় মানে আমার কাছে খাওয়াদাওয়া। আমার কাছে তাড়িতাড়ি করে প্যান্ডেল হপিং করে নিয়ে মি💮ষ্টি দই, ঝালমুড়িসহ বিভিন্ন খাবার খাই। এই সময়টা মনে হয় আমি আমার শিকড়ের কাছে ফিরে গেলাম, আমি যে বাঙালি সেটা এই সময়টাতে অনুভব করি। দুর্গাপুজোর অন্যতম সেরা বিষয় হ'ল সামাজিক,এই সময়টাতেই আপনি নিজে সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন। আর তাই এই ৯দিন সকলেই বাইরে বের হয়ে উদযাপন করতে চান। আমি লোখান্ডওয়ালায় একটা প্যান্ডেল এবং জুহুর একটি প্যান্ডেলে যাই, যে পুজোগুলো এই বছরও হবে।
৪. কী বলছেন রোহিত রায়
আমার কাছে দুর্গাপুজো মানেই বড় আশা আর নতুন শুরুর একটা মরশুম। এই সময়টাতে আমি আমার সমস্ত বাঙালি বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করি সেটা একটা অন্য আনন্দ। এর কিছু ঐতিহ্য রয়েছে যা আমরা বহু বছর ধরে অনুসরণ করে আসছি। আমার পুরো পরিবার পুজোতে থাকে। আমরা আমাদের স্থানীয় দুর্গাপুজা মণ্ডলে গিয়ে ভোগ ও প্রসাদ খাই। এটা আপনাকে উদযাপনের একটা অংশ অনুভব করাবে। আমি প্রতি বছরই নতুন পোশাক কিনি, এ বছরও সেটা হবে। আমরা সাধারণত নিজেদের প্যান্ড🐟েলে যাওয়ার চেষ্টা করি। গত বছরও আমরা প্রচুর প্যান্ডেল হপিং করেছি, তবে এবার সেই ব😼িষয়টা একটু থিতিয়ে গেছে, আমি বরং মায়ের সঙ্গে কোনও এক প্যান্ডেলে গিয়ে সময় কাটাতে চাই। তাছাড়া মটন আর মাছের চপ খেতে কে না চায় বলুন?
৫. কী বলছেন সৃজিতা দে
দুর্গাপূজাই তো আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব। ছোটবেলায় এই সময়টার জন্যই সারা বছর অপেক্ষা করে থাকতাম। এই সময়টাতে আমরা প্রচুর নতুন জামাকাপড় কিনতাম এবং ভালো ভালো খাবার পেতাম। এটার জন্য একমাস আগে থেকে কেনাকাটা শুরু হয়ে যেত। ঢাকের তালে ধুনুচি নাচ আমার ভালো লಞাগে, আমি প্রতি বছর অষ্টমীতে অঞ্জলি দিই আর ধুনুচি নাচের জন্য যাই এবারও বছরও যাব। আমি বিভিন্ন প্যান্ডেলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি কারণ প্রত্যেকেরই একটা নিজস্ব বিষয় রয়েছে। আমি লোখান্ডওয়ালা আর রানির পুজোয় যাব। সব পুজোই সুন্দর, কারণ সবই শিল্প। পুজোয় গিয়ে ফুচকা আর মাছের কাটলেট খেতে আমার খুব ভালো লাগে, এটা খাওয়াটাও একটা ট্র্যাডিশন। বলার অপেক্ষা রাখে না, দুর্গাপুজোর সময় আমি আমার ট্র্যাডিশনাল পোশাক পরতে ভালোবাসি, বিশেষ করে কলকাতার শাড়ি।