সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার তদন্তে নেমে প্রয়াত অভিনেতার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের প্রতিটি দিক খুঁটিয়ে দেখছেন মুম্বই পুলিশের তদন্তকারী অফিসাররা। সুশান্তের আত্মহত্যার পর থেকে ইতিমধ্যেই মোট ১৪ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে,শনিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে আত্মহত্যা করেছেন সুশান্ত। তবে কী কারণে এই আত্মহত্যা? তা খতিয়ে দেখতেই সুশান্তের পরিবার,বন্ধু,সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ। রবিবার,১৪ এপ্রিল বান্দ্রার কার্টার রোডের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার করা হয় সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ।বান্দ্রা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আত্মহত্যার তদন্তের সাধারণ গাউডলাইন মেনেই এই হাই প্রোফাইল কেসের তদন্ত চলছে। এই মামলায় এখন পর্যন্ত কাদের বয়না রেকর্ড করা হয়েছে? মুম্বই পুলিশের তরফে জানানো হয়, অভিনেতার বাবা,দুই দিদি,তাঁর বন্ধু তথা ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার সিদ্ধার্থ পিঠানি,ম্যানেজার সন্দীপ সাওয়ান্ত, বন্ধু তথা শেষ ছবি দিলবেচারার পরিচালক মুকেশ ছাবড়া,বিজনেস ম্যানেজার শ্রুতি মোদি, পাবলিক রিলেশন ম্যানেজার অঙ্কিতা তেহলানি এবং সুশান্তের বেস্ট ফ্রেন্ড মহেশ শেট্টি ও বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। এই দশ জন ছাড়াও যে চাবিওয়ালা সেদিন এসে সুশান্তের বেডরুমের দরজার চাবি খুলেছিলেন তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ এবং সুশান্তের তিন হাউজ হেল্পেরও বয়ান রেডর্ক করা হয়েছে। ডেপুটি কমিশানার অভিষেক ত্রিমুখ জানান, তদন্ত চলছে।পরিবার বা বন্ধুদের তরফে কেউই কারুর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ জানায়নি। এছাড়াও সুশান্ত কাজ করেছিলেন বা তাঁর কনট্র্যাক্ট ছিল। সেই চুক্তিপত্রগুলির সমস্ত শর্ত খতিয়ে দেখবে পুলিশ। মহারাষ্ট্রের গৃহমন্ত্রী অনিল দেশমুখ আগেই জানিয়েছেন সুশান্তের মৃত্যুর ব্যাপারে পেশাগত বিদ্বেষের দিকটি জোর দিয়ে খতিয়ে দেখবে মুম্বই পুলিশ।পিঙ্কভিলা সূত্রে খবর,মুম্বই পুলিশ ইতিমধ্যেই যশ রাজ ফিল্মসের কাছে সুশান্তের কনট্রাক্টের কপি চেয়ে পাঠিয়েছে,দ্রুত সেই কপি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুশান্তের বিজনেস ম্যানেজার হিসাবে কাজ করা শ্রুতি পুলিশকে দেওয়া বয়ানে জানিয়েছেন প্রয়াত অভিনেতার সঙ্গে জুলাই ২০১৯ থেকে ৩রা ফেব্রুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত কাজ করেছেন তিনি। প্রযোজক আদিত্য চোপড়ার সংস্থাযশরাজ ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট কম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন সুশান্ত। তাঁদের সঙ্গে দুটি ছবিতে কাজও করেন তারকা-প্রয়াত অভিনেতার কেরিয়ারের দ্বিতীয় ছবি শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স (২০১৩) এবং ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সী (২০১৫)। এছাড়াও সুশান্তের সঙ্গে 'পানি' প্রজেক্টটিও করবার কথা ছিল যশরাজ ফিল্মসের। তবে ২০১৫-র শেষের দিকে আচমকাই পরিচালক শেখর কাপুরের এই প্রজেক্ট থেকে সরে আসে যশরাজ ফিল্মস। ডিসেম্বরে ২০১৫-তে ডিএনএ'তে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই প্রজেক্ট বন্ধ হওয়ার পর আদিত্য চোপড়ার বেফিকরে ছবিতে অভিনয়ের কথা ছিল সুশান্তের। কিন্তু সেই ছবিও কিছু না জানিয়েই চলে যায় রণবীর সিংয়ের ঝুলিতে। এরপর আদিত্য চোপড়ার সঙ্গে সুশান্তের মনোমালিন্য হয় এবং বাতিল হয় তাঁর চুক্তিপত্র। সেই সময় যশরাজ ফিল্মসের তরফে মিডিয়ায় জানানো হয়,' এখন সুশান্ত আমাদের ট্যালেন্ট টিমের অংশ নয়। ওর ভবিষ্যতের জন্য আমাদের তরফ থেকে রইল শুভকামনা'। সেই চুক্তিপত্রটিই চেয়ে পাঠিয়েছে মুম্বই পুলিশ।