বাসে বা ট্রাম/ ট্রেনে উঠলে আজকাল অধিকাংশ মানুষকেই দেখবেন হয় কানে হেডফোন গোঁজা, নইলে ফোনের দিকে তাকিয়ে। থুড়ি ফোনে ডুবে রয়েছে। গুটিকয় মানুষ আশপাশ দেখেন, পাশের মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। অধিকাংশের জীবন এখন♈ ওই সোশ্যাল মিডিয়𒐪ার রিলস, মিম, ইত্যাদিতে মজে। এবার সেই প্রসঙ্গ নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন তসলিমা নাসরিন।
তসলিমা নাসরিন বরাবর সমস্ত ব🌊িষয়েই বেশ ভোকাল। নিজের যা ভালো মনে হয়, যেটা ঠিক মনে হয় সেটা স্পষ্ট করে বলতে বা লিখতে তিনি দুবার ভাবেন না। এদিনও তিনি তেমন ভাবেই মনের ক্ষোভ বা বলা ভালো হতাশা জানিয়ে লিখলেন, কেউ নাকি আজকাল আর বই পড়েন না, খবরের কাগজ পড়েন না। তাই তিনি হতাশা প্রকাশ করে লিখেছেন যে এই প্রজন্মের জন্য তাঁর আর লিখতে ভালো লাগে না। নিজের মতো থাকতে চান তিনি।
কী লিখেছেন তসলিমা?
বৃহস্পতিবার বিকেলে তসলিমা তাঁর ফেসবুকে লেখেন, 'মানুষ আর বই পড়ে না, পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ার ছোট ছোট কমেন্টস। মানুষ আর সংবাদপত্র পড়ে না, বড় জোর শিরোনাম পড়ে। মানুষ এখন আর সিনেমা দেখে না, দেখে রিলস। কমেডি করো দেখবে, ভায়োলেন্স দেখবে। আমি কিছুদিন হল কবিতা পড়ার ভিডিয়ো পোস্ট করছি ফেসবুকে। প্রচুর ভিউয়ার, কিন্তু ইনসাইটে গিয়ে দেখি অধিকাংশই ৩ সেকেন্ড দেখে বেরিয়ে গেছে। অস্থির একটা প্রজন্ম তৈরি হয়েছে গত তিরিশ বছরে। এদের জন্য কষ্ট করে বই লিখতে ইচ্ছে করে না। মনে হয় লেখালেখি বাদ দিয়ে বই পড়ে আর নাটক 🐻সিনেমা দেখে, যা খেতে মন চায় তা তৃপ্তি করে খেয়ে, পৃথিবী ভ্রমণ করে, আনন্দ উল্লাস করে জীবনের বাকিটা সময় কাটিয়ে দিই।'
বহু শেয়ার হয়েছে তাঁর এই পোস্ট। অনেকেই নিজেদের মতামত জানিয়🌌েছেন এই পোস্টে। এক ব্যক্তি লেখেন, ‘আমাদের পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রও এই নিয়ে চিন্তা করে না। নতুন প্রজন্মকে বইপাঠে উদ্বুদ্ধ করা, সৃজনশীল শিক্ষিত সচেতন নাগরিক গড়ে তোলার কোনও উদ্যোগ নেই কোনও মহলের। এদের ভবিষ্যত নিয়ে আমি শংকিত।’ আরেকজন লেখেন, ‘এত সুন্দর ভাবে ভাবতে, আর বলতে আপনিই পারেন বোধহয়! কত সত্যি কথা কত সহজ ভাবে পরিবেশন করে দিয়েছেন। এরকম লেখা ভাবায়, ভাবতে শেখায়। ভাবনা যত সুন্দর ও রুচিসম্মত, তার জ্ঞানের পরিধি তত উন্নত, তত সৌন্দর্যে ভরপুর। মিশে গেলাম আপনার লেখায়, আপনার বলায়। একদম খাঁটি সত্য কথা বলে দিলেন যে! বোধ সম্পন্ন মানুষ নিশ্চয়ই মান্যতা দেবেন, বুঝবেন আপনি যেটা বলতে চাইলেন।’ অন্য এক ব্যক্তির মতে 'মানুষের এখন নিজের সাথে দুরত্ব বেড়েছে, এই রোগের কোন ওষুধ নেই। এই রোগেই মানুষের বিলুপ্তি ঘটবে হয়তো'।