নববরꦿ্ষের সকাল, তার উপর রবিবার। সব মিলিয়ে আজকের ছুটির দিনটি বাঙালিদের কাছে দারুণ হতে চলেছে। শুধু একটি নতুন বছরের সূচဣনা নয়, এর সঙ্গে মিশে আছে বাঙালি সংস্কৃতির অনেক কিছু।
বিশেষ করে গান।
ত🌱াই আজকের দিনটি ভরে থাকুক বৈশাখের গানে। তেমনই কয়েকটি গান রইﷺল আপনাদের জন্য।
এসো হে বৈশাখ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ।
তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক॥
যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে-যাওয়া গীতি,
অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক॥
মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।
রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি,
আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ।
মায়ার কুজ্ঝটিজাল যাক দূরে যাক॥
তোরা সব জয়ধ্বনি কর: কাজী নজরুল ইসলাম
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!
ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড়
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
আস্ল এবার অনাগত প্রলয়–নেশায় নৃত্য–পাগল,
সিন্ধু–পারের সিংহ–দ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল!
মৃত্যু–♌গহন অন্ধকুপে, মহাকালের চন্ড–রূপে ধূম্র–ধূপে
বজ্র–শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর!
ওরে ওই হাসছে ভয়ংকর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
দ্বাদশ রবির বহ্নি–জ্বালা ভয়াল তাহার নয়ন–কটায়,
দিগন্তরের কাঁদন লুটায় পিঙ্গল তার ত্রস্ত জটায়
বিন্দু তাহার নয়ন –জলে
সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে
কপোল–তলে!
বিশ্ব –মায়ের আসন তারই বিপুল বাহুর ‘পর –
হাঁকে ঐ ‘জয় প্রলয়ংকর!’
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
মাভৈঃ, ওরে মাভৈঃ, ম𒉰াভৈঃ, মাভৈঃ জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে
জরায়–মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ–লুকানো ঐ বিনাশে
এবার মহা–নিশার শেষে
আসবে ঊষা অরুণ হেসে
করুণ্ বেশে!
দিগম্বরের জটায় লুটায় শিশু–চাঁদের কর!
আলো তার ভরবে এবার ঘর!
তোরা সব জয়ধ্বনি কর!!
হে নূতন, দেখা দিক আর-বার: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হে নূতন,
দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ ।।
তোমার প্রকাশ হোক কুহেলিকা করি উদঘাটন
সূর্যের মতন ।
রিক্ততার বক্ষ ভেদি আপনারে করো উন্মোচন ।
ব্যক্ত হোক জীবনের জয়,
ব্যক্ত হোক তোমামাঝে অসীমের চিরবিস্ময় ।
উদয়দিগন্তে শঙ্খ বাজে, মোর চিত্তমাঝে
চিরনূতনেরে দিল ডাক
পঁচিশে বৈশাখ ।।
আলোকের এই ঝর্ণাধারায়: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও।
আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও ॥
যে জন আমার মাঝে জড়িয়ে আছে ঘুমের জালে
আজ এই সকালে ধীরে ধীরে তার কপালে
এই অরুণ আলোর সোনার-কাঠি ছুঁইয়ে দাও।
বিশ্বহৃদয়-হতে-ধাওয়া আলোয়-পাগল প্রভাত হাওয়া,
সেই হাওয়াতে হৃদয় আমার নুইয়ে দাও ॥
আজ নিখিলের আনন্দধারায় ধুইয়ে দাও,
মনের কোণের সব দীনতা মলিনতা ধুইয়ে দাও।
আমার পরান-বীণায় ঘুমিয়ে আছে অমৃতগান--
তার নাইকো বাণী, নাইকো ছন্দ, নাইকো তান।
তারে আনন্দের এই জাগরণী ছুঁই'য়ে দাও।
বিশ্বহৃদয়-হতে-ধাওয়া প্রাণে-পাগল গানের হাওয়া,
সেই হাওয়াতে হৃদয় আমার নুইয়ে দাও ॥
আনন্দধারা বহিছে ভুবনে: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আনন্দধারা বহিছে ভুবনে,
দিনরজনী কত অমৃতরস উথলি যায় অনন্ত গগনে ॥
পান করি রবে শশী অঞ্জলি ভরিয়া--
সদা দীপ্ত রহে অক্ষয় জ্যোতি--
নিত্য পূর্ণ ধরা জীবনে কিরণে ॥
বসিয়া আছ কেন আপন-মনে,
স্বার্থনিমগন কী কারণে?
চারি দিকে দেখো চাহি হৃদয় প্রসারি,
ক্ষুদ্র দুঃখ সব তুচ্ছ মানি
প্রেম ভরিয়া লহো শূন্য জীবনে ॥
গানে গানে কাটুক আজকের দিনটা। নꦡ🙈তুন বছর সকলের ভালো কাটুক।