শারীরিক কার্যকলাপ শরীর ভালো রাখে, মনও ভালো রাখে৷ গবেষকদের মত🔜ে, পড়াশোনা, পরীক্ষা, মনোনিবেশ করার ক্ষমতার উন্নতির জন্যও নিয়মিত ব্যায়🍸াম সহায়ক হতে পারে৷
ভেবে দেখুন, কোনও পড়ুয়া সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে পড়াশোনা করছেন৷ পরীক্ষার ♔আগে হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন রয়েছে৷ এমন অবস্থায় শারীরিক ব্যায়াম সময়ের অপচয় ছাড়া আর কী হতে পারে! কারণ তিনি যত পড়াশোনা করবেন, পরীক্ষার ফলও তত ভালো হবে, তাই না?
কিন্তু এমন ধারণা ঠিক নাও হতে পারে৷ ব্যায়াম কিন্তু পরীক্ষায় পারফরম্যান্সের উন্নতি ঘটাতে পারে৷ এর এক বৈজ্ঞানিক ব্যা🍰খ্যা রয়েছে৷ ব্যায়াম বাড়তি বোঝা মনে হলেও সেই কাজ কিন্তু স্ট্রেস দূর করতে সত্যি সাহায্য করতে পারে৷
যখনই প্রবল স্ট্রেস বোধ হয়, তখন আসলে শরীরের হাইপোথ্যালমাস পিটিউটারি অ্যাড্রিনাল অ্যাক্সিস সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ স্ট্রেস দেখা দিলেও সেটাই শরীরের অন্যতম প্রণালী হিসেবে মোকাবিলার কাজ করে৷ সেটি শরীরের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের সঙ্গে এন্ডোক্রিন সিস্টেমের যোগসূত্র স্থাপন করে এবং স্ট্রেস হরমোন হিসেবে কর্টিসল নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে৷
সমস্যা হলো, শরীর বেশি মাত্রায় কর্টিসল নিঃসরণ করলে আবার কর্মক্ষমতা ও একাগ্রতাও কমে যায়৷ সেই ঘাটতি পূরণ করতে শারীরিক ব্যায়াম অবদান রাখতে পারে৷ সেটা করলে কর্টিসলের মাত্রা কমে যায়৷ সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রেসের অনুভূতিও হালকা হয়ে যায়৷ ব্যায়াম এইচপিএ অ্যাক্সিসও 🦋শান্ত করে৷ তখন আসন্ন পরীক্ষা সম্পর্কে আপনার মনে ভয়ও কমে যাবে৷ নিউরোসাইকোলজিস্ট হিসেবে ড. স্বাতী গুজরাল বলেন, ‘শরীরের শক্তির মাত্রার নিরিখে দেখতে গেলে সেটা ঠিক হবে না, কারণ মাঝারি বা জোরালো মাত্রার ব্যায়ামের পর আপনি ক্লান্ত থাকেন, তাই না? কিন্তু আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করলে টের পারবেন, যে দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য আপনার এনার্জি বেড়ে গেছে, আপনি অনেক বেশি সজাগ রয়েছেন৷'
শারীরিক কার্যকল꧙াপের আরেকটি উপকার হলো, এর ফলে মস্তিষ্কে নিউরোট্রান্সমিটার বা এন্ডরফিনের উৎপাদন বেড়ে যায়৷ তখন আপনার মনমেজাজ আরো ভালো লাগবে, সব মিলিয়ে ভালো বোধ করবেন৷ সেটা আবার পড়াশোনা শুরু করার ভালো সময়৷
শরীর সঞ্চালনের সময়ে মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়, যা তথাকথিত ‘এক্সিকিউটিভ ফাংকশন' করতে সাহায্ꦡয করে৷ ড. গুজরালের মতে, ‘আসলে সেই পরিভাষার সার্বিক অর্থ হল সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা, বিভিন্ন কাজের মধ্যে রদ🤡বদলের ক্ষমতা, বাছাই করা কাজের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এবং চারিপাশের সব বিঘ্ন উপেক্ষা করার ক্ষমতা৷'
ব্যায়ামের ফলে পড়াশোনায় আরো মনোযোগ দেওয়া যায়, ফর্মুলা মুখস্ত করা যায়৷ অর্থাৎ ফোন বাজলেও সেটা বেশি বিঘ্ন বলে মনে হবে না৷ ব্যায়াম শুধু মনোযোগ বাড়াতেই নয়, কম সময়ে বেশি শিখতেও সাহায্য করে৷ ড. স্বাতী গুজরাল বলেন, ‘সেটা আমাদের প্রসেসিং 🍷স্পিডের উন্নতি করে৷ আমাদের সামনে আসা তথ্য কোন গতিতে আমরা অনুধাবন করছি এবং আমরা আরো ভালোভাবে তথ্য গ্রহণ করতে পারছি বলে আমরা প্রয়োজনীয় বিষয়গুলির প্রতি মনোযোগ দিতে পারছি৷ আমরা সেটা আরো ভালোভাবে শিখতে পারছি৷'
ব্যায়াম মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস অংশে নিউরন সৃষ্টির কাজেও অবদান রাখে, যꦜা দীর্ঘকালীন স্মৃতিভাণ্ডার রক্ষার দায়িত্ব পালন করে৷ গবেষণায় দেখা গেছে, যে শারীরিক কার্যকলাপ পড়াশোনার উপর ইতিবাচক প্রভাব রাখে৷
কিন্তু পরীক্ষা﷽র চাপের মতো স্ট্রেসে ভরা সময়ে কীভাবে ব্যায়াম শুরু করা সম্ভব? আগে থেকেই কিছুটা ব্যায়ামের অভ্যাস থাকলে পরীক্ষার সময়েও তা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত৷ না থাকলে ধীরে ধীরে শুরু করা যায়৷ পছন্দের কোনো সঞ্চালন বেছে নিলেই হবে৷ দ্রুত হাঁটার মতো সহজ ব্যায়াম হলেও চলবে৷ ভলিবল খেলা বা বাসায় এয়ারোবিক্স করলেও চলবে৷ যে শারীরিক কসরৎ হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয়, তা জীবনযাত্রা বদলে দিতে পারে৷
একটি মাত্র ওয়ার্কাউটের 🃏পরেই অনেকে শরীরে বেশি শক্তি অনুভব করতে পারেন৷ সপ্তাহে তিন থেকে পাঁচবার অনুশীলন করতে পারলে সেই প্রভাব আরো বেশি অনুভব করা যায়৷