পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখর মাউন্ট এভারেস্ট। সেই শৃঙ্গ ছোঁয়ার স্বপ্ন সব অভিযাত্রীই দেখে থাকেন। কিন্তু উত্তেজনা ও স্বপ্নের সঙ্গেই বেড়ে চলেছে সুনাম অর্জনের গিমিক। সম্প্রতি তেমনই এক ঘটনা দেখা গেল ব্রিটেনে। চার অভিযাত্রীদের অদ্ভুত শৃঙ্গজয় পরিকল্পনা অবাক করেছে অনেককেই।
দু’মাসের অভিযান ৭ দিনে!
সাধারাণত মাউন্ট এভারেস্ট চড়তে সময় লাগে কমবেশি ২ মাস। এর মধ্যে বেশিরভাগ সময়টাই যায় আবহাওয়া তথা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। ৮৮৪৮ মিটার উঁচু এই পর্বতশৃঙ্গ। অত উঁচুতে অক্সিজেনের পরিমাণ খুব কম থাকে। তাই বেস ক্যাম্পে গিয়ে প্রথমে শরীরকে খাপ খাইয়ে নেন অভিযাত্রীরা। এর পর সেই খাপ খাওয়ানো হয়ে গেলে শুরু হয় অভিযান। ওই চার ব্রিটিশ অভিযাত্রীদের পরিকল্পনা, তারা ৭ দিনেই জয় করবেন এভারেস্ট। জয় করবেন একটি গ্যাসের মাধ্যমে। সেটি হল জেনন।
আরও পড়ুন - ফেস হেয়ার রিমুভাল কিনতে কাঁড়ি কাঁড়ি খরচ করেন? আটার এই ফেসপ্যাকই তো যথেষ্ট
কেন খাপ খাওয়ানো জরুরি?
জেনন কী এমন ম্যাজিক জানে? তা জানতে হলে, প্রথমে জানতে হবে পাহাড়ে ওঠার সময় কেন খাপ খাওয়ানো জরুরি। আমাদের শরীরে অক্সিজেন পৌঁছায় ফুসফুস দিয়ে তারপর সেটি রক্তে মিশে যায় লোহিত রক্ত কণিকা দিয়ে। অক্সিজেন পর্যাপ্ত না থাকলে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদনও কমে যায়। তাই খাপ খাওয়ানোর জন্য বেস ক্যাম্পে একটা বড় সময় কাটান অভিযাত্রীরা। এতে শরীর কম অক্সিজেনে অভ্যস্ত হয়ে যায়। তারপর লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদন স্বাভাবিক হয়। এরপর শুরু হয় অভিযান।
আরও পড়ুন - পুলিশ বিপদে পড়লে ডাক পড়ে তাঁর! ২০০ প্রাণ বাঁচিয়েছেন ‘ব্যাঙমানব’ আকাশ, কীভাবে?
জেননে কী এমন ম্যাজিক?
কিন্তু জেনন গ্যাস শরীরে প্রবেশ করে কিডনিকে উত্তেজিত করে। এর ফলে শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বেড়ে যায়। আলাদা করে কম অক্সিজেনের দরকার পড়ে না। ওই চার অভিযাত্রীদের বক্তব্য, তারা অভিযানের ১০ দিন আগে এই গ্যাস শুঁকবেন। তাতেই তাদের শরীর অভ্যস্ত হয়ে যাবে।
আসল বিপদ যেখানে
- শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়লেও জেনন গ্যাস ব্রেনের ক্ষতি করতে পারে। ক্ষতি করতে পারে শ্বাসযন্ত্রেরও।
- এতে কম অক্সিজেনে অভ্যস্ত হওয়ার দরকার পড়ে না। আর সেটাই বিপদ। শরীর যখন কম অক্সিজেনের এলাকায় হঠাৎ গিয়ে পড়বে, তখন লোহিত কণিকা স্বাভাবিক থাকলেও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- তদুপরি ওয়ার্ল্ড অ্যান্টিডোপিং অরগানাইজেশনের তরফে ২০১৪ সালেই এই গ্যাসকে ব্যান করা হয়।