ইসলামিক ক্যালেন্ডারের নবম মাস হল রমজানের। এ সময় ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ফজির বা সূর্যাস্তের আগে থেকে মগ্রিব বা সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা বা উপবাস পালন করেন। ইসলামিক ক্যালেন্ডার চাঁদের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। প্রতিবছর ১০-১১ দিন এগোতে থাকে রমজান মাস। এই পুরো মাসটি আল্লাহের ভক্তিতে কাটান মুসলমানরা। তবে রমজানের সময় ২৯-৩০ দিনের রোজা পালনের ক্ষেত্রে কিছু অবশ্য পালনীয় নিয়মও রয়েছে।ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে চতুর্থ স্তম্ভ হল রোজা পালন। রোজা রাখা আত্ম-সংযম পালনের প্রতীক।রমজানের সময় রোজাদার (যাঁরা রোজা বা উপবাস রাখেন)-এর দিন শুরু হয় সেহেরি ও সুহুরের মাধ্যমে। সূর্যোদয়ের আগে সেহেরি খেয়ে থাকেন রোজাদাররা। তার পর সারা দিন ধরে চলে নির্জলা উপবাস। সূর্যাস্তের পর নামাজ ও ইফতারির মাধ্যমে সেদিনের রোজা ভঙ্গ করা হয়।ইসলামে রোজা রাখার নিয়ম১. অসুস্থ, গর্ভবতী, কোনও মহিলা যদি স্তনদুগ্ধ পান করিয়ে থাকেন, ডায়বিটিক, বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য রোজা পালন আবশ্যক নয়। এর পরিবর্তে ফিদিয়ার মাধ্যমে রোজার কর্তব্য পালন করতে হয়। ফিদিয়া অর্থাৎ রমজানের সময় প্রতিদিন দরিদ্র ব্যক্তিদের খাবার দান করে রোজা পালন না-করার ক্ষতি পূরণ করা হয়। আবার কোনও দিন যদি কেউ রোজা পালন করতে অক্ষম থাকেন, সে ক্ষেত্রেও ফিদিয়ার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ করা যেতে পারে।২. আবার ঋতুস্রাব চলাকালীন বা সন্তান প্রসবের পর ঋতুস্রাব হলে রোজা রাখা উচিত নয়। পরিবর্তিকালে এর ক্ষতি পূরণ করতে হয়।৩. এ সময় ফজ্র (গোধূলি), ধুর (দুপুর), অস্র (বিকেল), মগ্রিব (সন্ধে) এবং ইশা (রাত)-র নামাজ পড়তে হয়। এ ছাড়াও রোজার সময় ইচ্ছাকৃত ভাবে কিছু খাওয়া বা পান করা নিষিদ্ধ। আবার ধূমপান বা মদ্যপান করলে রোজা বাতিল হয়ে যায়।৪. তবে ভুলবশত কিছু খেয়ে ফেললে, উপবাসের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না বা সেই রোজদারের রোজাও বাতিল সাব্যস্ত হয় না। এ ক্ষেত্রে ভুল বোঝার সঙ্গে সঙ্গে প্রায়শ্চিত্ত করে রোজা পূর্ণ করা যেতে পারে।৫. রোজা পালনের সময় মিথ্যা ভাষণ, কটূক্তি করা, ঝগড়া করা বা অস্রাব্য ভাষায় কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হয়। কঠোর ভাবে এই বিষয়গুলি পালন না-করলে উপবাসের পুণ্য অর্জন বাধাপ্রাপ্ত হয়।৬. এ সময় অসহায় ব্যক্তিদের সাহায্য করা হয়, একে জাকাত বলে। রমজানের সময় জাকাতের মূল্য নির্ধারিত থাকে। ব্যক্তির সঞ্চয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ জাকাতে দিতে হয়। এটি সাদাক বা স্বেচ্ছা দান থেকে পৃথক। ৭. রমজানের ২৯-৩০ দিন যৌন সম্পর্কে লিপ্ত না-হওয়ার বিধান দেওয়া রয়েছে। সাংসারিক সুখ ত্যাগ করে আল্লাহের ইবাদতে মগ্ন থাকতে বলা হয় এ সময়।গত বছরের মতো, এ বছরও করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত ও নানান রাজ্যে লকডাউন বা কার্ফুর মধ্যে পালিত হচ্ছে রোজা।