এবারের সাহিত্য অ্ꦏযাকাডেমি পুরস্কার ঘোষণা হয়েছে শনিবার। তাতে যুব পুরস্কার প্রাপকদের মধ্যে রয়েছে অসমের শিলচরের সুতপা চক্রবর্তীর নাম। কবিতার বই ‘দেরাজে হলুদ ফুল, গতজন্ম’-র জন্য সাহিত্য অ্যাকাডেমি তাঁকে যুব পুরস্কারে সম্মানিত করꦬেছে।
বাংলা ভাষায় সাহিত্যচর্চার জন্য তিনি অসমের প্রথম মানুষ, যিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন। তবে পুরস্কার পেয়ে ততটা উচ্ছ্বসিত নন সুতপা। তিনি বলেন, 'পুরস্কার পেলে ভালোই🍃 লাগে। তবে আমি বেশি আনন্দ পাই আমার লেখালিখিতেই।' তিনি জানান, শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ সাহিত্য অ্যাকাডেমি তরফে তাঁর কাছে ফোন আসে এবং তারা যুব পুরস্কারের কথা জানায়।
কলকাতার আদম প্রকাশনী থেকে ২০২২ সালে প্রকাশিত হয় ‘দেরাজে হলুদ ফুল, গতজন্ম’। এটা সুত༺পার তৃতীয় বই। এর আগে তাঁর 'ভ্রমরযান' এবং 'মায়াবিদ্যা' নামের দুটো কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। মায়াবিদ্যা ১০০টি সনেটের সংকলন। তিনি 'তবুও প্রয়াস' প্রকাশনীর 'নারী ও ভারতীয় আইন' নামের তার পরবর্তী বইয়ের কাজে ব্যস্ত। এর ফাঁকেই হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে কথা বলেন।
সুতপা জানান, তিনি অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলায় স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ড🍰িগ্রি অর্জন করেছেন। এরপর গবেষণার কাজ শুরু করেন এবং ২০২২👍 সালে তাঁকে ডক্টরেট উপাধি দেওয়া হয়। কলেজ জীবন থেকেই কবিতার প্রতি তাঁর টান ছিল এবং একটু অন্য ধাঁচের কবিতা লিখতে পছন্দ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘শনিবার সকালে যখন ফোন করে আমায় পুরস্কারের কথা জানানো হয়, আমি খুশি হয়েছি। তবে পুরস্কারের প্রতি টান নেই, আমার আসল টান লেখালেখি এবং অনেক বেশি পড়াশোনা করায়। বরাক উপত্যকায় থেকে বাংলা চর্চা করা একটা কঠিন কাজ, কারণ আমরা কলকাতার মতো চর্চার জায়গা কম পাই। তবে আমাদের এলাকায় বাংলা সাহিত্যচর্চা অনেক পুরনো এ🌟বং সমৃদ্ধ। অমিতাভ দেব চৌধুরীর থেকে শুরু করে অনেক বরিষ্ঠ এবং সমৃদ্ধ লেখক ও গবেষকদের সান্নিধ্য পেয়েছি। তাঁরা সবসময় সাহস জুগিয়েছেন।’
অসমের গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উষারঞ্জন ভট্টাচার্য ২০০২ সালে বাংলা ভাষায় অনুবাদ কাজের জন্য সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০০৭ সালে ওই একই ক্যাটেগরিতে পুরস্কার পেয়েছিলেন সু♔জিত চৌধুরী। উষারঞ্জন জানিয়েছেন, মৌলিক বাংলায় কাজ করে অসম থেকে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পাওয়া প্রথম ব্যক্তি হলেন সুতপা।
উষারঞ্জন বলেন, ‘এটা এক অসাধারণ কৃতিত্ব এবং আমরা প্রত্যেকে আনন্দিত। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে অসম থেকে একজন যুব প্রজন্মের লেখিকা এই পুরস্কার পেয়েছেন। এখনও বাংলা সাহিত্যের মূল কেন্দ্র কলকাতাকেই বলা হয়। তবে সুতপার এই প্রাপ্তি বুঝিয়ে দিয়েছে, মূল কেন্দ্রের বাইরে🔜ও উন্নতমানের♌ সাহিত্যচর্চা হচ্ছে। আমরা প্রান্তভাষী বাঙালি, আমাদের অঞ্চলের সাহিত্যচর্চা অনেক সময় যোগ্য সম্মান পান না। এছাড়া বাংলা সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে বয়স্ক ব্যক্তিরাই বেশিরভাগ সময় এগিয়ে থাকেন। এই দুই ধারণাকেই ভেঙে দিয়েছেন সুতপা। তাঁর এই প্রাপ্তি অসমের যুব প্রজন্মকে বাংলা সাহিত্যচর্চায় উদ্বুদ্ধ করবে।’
অসমের বিভিন্ন সংগঠন সুতপার এই প্রাপ্তিতে আনন্দিত। শিলচরের বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের পক্ষ থেকে গৌতম প্রসাদ দত্ত বলেন, ‘শুধুমাত্র বরাক উপত্যকা নয়, গোটা অসমের মুখ♈ উজ𒐪্জ্বল করেছে সুতপা। আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই। তার এই সাফল্য আরও অনেককেই উৎসাহ দেবে। আমরা চাই এভাবেই যুব প্রজন্মের মধ্যে বাংলা সাহিত্য চর্চা এগিয়ে যাক।’