দূষণের মধ্যেই রোজ শ্বাস নিচ্ছি আমরা প্রত্যেকে। ক্রমেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে পৃথিবী। দূষণ একটি স্লো পয়জানের মতো মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে মানবজাতিকে। তাই এখন প্রয়োজন পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানোর। সাধারণ মানুষ হিসেবে আমাদের হাতে যেটুকু ক্ষমত🥂া আছে, তা দিয়েই প্রকৃতিকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করতে পারি। ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এই দিনটি থেকেই শুরু হোক পরিবেশ রক্ষার নতুন অভিযান। কী ভাবে? জেনে নিন—
১. ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপলায়েন্সের ব্যবহারে রাশ টানুন- এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ শক্তি বাঁচানো 🦋যাবে। এমন অ্যাপলায়েন্স কিনুন যা পরিবেশবান্ধব হওয়ার পাশাপাশি অধিক পরিমাণে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারে। আবার কাজ শেষ হয়ে গেলে লাইট, পাখা, টিভি, এসির সুইচ বন্ধ করে রাখুন। এমনকি ছোটখাটো কাজের জন্য সোলার পাওয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে।
২. কাঠের উনুনের ব্যবহারও কম করুন🦹- কাঠের উনুন থেকে অত্যধিক পরিমাণে ধোঁয়া নির্গত হয়। যা বায়ুর সঙ্গে মিশে গিয়ে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। তাই গার্ডেন পিকনিক বা ট্রেকিংয়ে এই কাঠের উনুন ব্যবহারের পরিবর্তে বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী সস্তার অ্যাপলায়েন্স ব্যবহার করতে পরেন।
৩. পরিবেশবান্ধব যানবাহনের ওপর জোর দিন- গাড়ি ব্যবহারের ফলে, তা থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ুর সঙ্গে মিশে দূষণ ঘটাতে পারে। দিনে দিনে পথেঘাটে গাড়ির সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূষণ। তাই দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পরিবেশবান্ধব যানবাহন ব্যবহার করুন। এর সবচেয়ে ভালো উদাহরণ সাইকেল। এক কালে এই সাইকেলই ছিল আমাদের পথ চলার সাথী। সময়ের দৌড়ে এই বাহনটি পিছিয়ে গেলেও, এখনও একে ছোট করে দেখার কোনও কারণ নেই। বরং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাইকেলের জুড়ি মেলা ভার। তাই আবার সেই দুইচাকার ওপর ভর করে🐎 অফিসে বা কাজে যেতে ক্ষতি কী। পরিবেশ ও শরীর— উভয়ের সুস্থতার ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এটি।
৪. বাস্তুতন্ত♐্রকে সুস্থ রাখুন- গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও বায়ু দূষণের কারণে বাস্তুতন্ত্র প্রভাবিত হচ্ছে। প্রভাব পড়ছে গাছপালা, পশুপাখির ওপর। একটি সুস্থ পরিবেশে গাছপালা ও পশুপাখির সঙ্গে বাস্তুতন্ত্রের যোগাযোগ স্থাপন প্রয়োজনীয়। তাই বাস্তুতন্ত্রকে সুস্থ রাখার বিষয় জোর দিন।
৫. কীটনাশক ও কেমিক্যালের ব্যবহার কম করুন- বাড়িতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে কেম♌িক্যাল যুক্ত সামগ্রীর ব্যবহার কম করুন। এর পরিবর𒆙্তে বেকিং সোডা, ভিনিগার ও লেবুর মিশ্রণ সাফাইয়ের কাজে লাগান। বাজারে প্রথাগত ও পরিবেশবান্ধব নানান সামগ্রী পাওয়া যায়। আবার কীটনাশকের ব্যবহারও যথাসম্ভব কম করা উচিত।
৬. কার্বন ফুটপ্রিন্ট ও বায়ুদূষণ কম করুন- কার্বন ফুটপ্রিন্ট বৃদ্ধির কারণে বাড়তে থাকে বায়ু দূষণ। কার্বন ফুটপ্রিন্ট কম করতে ওয়াটার হিটারের ব্যবহার বা টেম্পারেচার কমিয়ে দিতে পারেন। বাড়িতে ডিশওয়াশার থাকলে, সেই মেশিনে বাসন না-ধুয়ে হাত দিয়ে বাসন ধোয়া শুরু করুন। আ༒বার এয়ার কন্ডিশনারের ব্যবহারও কম ক🎉রা উচিত।
৭. বর্জ্য পদার্থ রিসাইকেল করুন- কাঁচ, প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়াম বা খবরের কাগজ ফেলে ൩দেওয়ার পরিবর্তে রিসাইকেল করতে পারেন। এর ফলে আবর্জনা জমে দূষণ ছড়াবে না। এমনকি এই বর্জ্যগুলি পোড়ানোর ফলে নির্গত ধোঁয়া পরিবেশের ক্ষতি কর🍰তে পারবে না। তাই প্লাস্টিক বা কাঁচের বোতল, এমনকি খবরের কাগজ না-ফেলে পুনর্ব্যবহার যোগ্য করে তুলতে পারেন। যেমন- কাঁচের বোতল বা গ্লাসে কারকার্য করে সুন্দর ফুলদানি বানিয়ে ফেলতে পারেন।
৮. স্থানীয় এলাকাতেই ফল-সবজি উৎপাদন করুন- এর ফলে ফল-সবজি সরবরাহের জন্য যে গাড়ি চলাচল করা হয়, তা কমানো যাবে। পাশাপাশি ফল ও সবজি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সংরক্ষণের জন্য কীটনাশক ও প্রিসারভেটিভের ব্যবহারও 🐬কম করা যাবে। এই প্রিসারভেটিভগুল💃ি সরাসরি বায়ু দূষণ ঘটায়। অর্গ্যানিক খাদ্য বস্তুর ওপর জোর দেওয়া ভালো। সংরক্ষিত ফল ও সবজির তুলনায় অর্গ্যানিক খাদ্যবস্তু অধিক টেকসই হয়। কারণ এতে ক্ষতিকর কীটনাশক ও কেমিক্যাল কম ব্যবহৃত হয়। তাই অর্গ্যানিক ফল সবজি কেনার ওপর জোর দিতে পারেন। এমনকি নিজের বাগানে এগুলি উৎপাদন করতে পারেন।
৯. দূষিত জিনিসের ব্যবহার কম করুন- বাড়িতে দূষিত ও টক্সিক জিনিসের ব্যবহার𓄧 কম করাই সবচেয়ে ভালো। বাড়ি থ🥂েকেই একটি সুস্থ পরিবেশ গড়ে তোলার যাত্রা শুরু করা যায়। প্লাস্টিক টুথব্রাশ, ক্যান, বোতলের পরিবর্তে কাঠের জার, ক্যানন বা বোতল ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার বাড়িতে মশা বা আরশোলা মারার জন্য কেমিক্যাল যুক্ত স্প্রে ব্যবহারের পরিবর্তে কিছু প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপায়ে তৈরি সামগ্রী দিয়ে পোকামাকড় তাড়াতে পারেন।
১০. নির্দিষ্ট স্থানে আবর্জনা ফেলুন- যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলবেন না। বায়োডিগ্রেডেবেল ও নন- বায়োডিগꦯ্রেডেবেল আবর্জনা ফেলার জন্য পৃথক পৃথক ডাস্টবিন রাখুন। আবায় বায়ু বা জলদূষণের কারণে পরিবেশকে দূষিত করে তোলার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের অসুস্থ করে তুলতে পারে।
প্রত্যেকে যদি💎 এই ছোটোখাটো অভ্যাস গড়ে তুলতে পারি, তা হলে পরিবেশকে সুস্থ রাখা যাবে।