সিনেমার পর্দায় দেখা গিয়েছিল। এবার যেন সেই একই ধরনের ঘটনা বাস্তবেি হল। সৎ পথে থেকে নিজের কর্তব্য পালনের প্রতিদান পেলেন এক রিক্সাচালক। জীবিত অবস্থাতেই ৬৩ বছরের এক মহিলা তাঁর কোটি টাকার সম্পত্তি লিখে দিয়ে গেলেন সেই রিক্সাচালককে। কটকের বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সি মিনতি পট্টনায়ক ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাশ। তাঁর স্বামী কৃষ্ণ পট্টনায়ক একজন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। গত বছর জুলাই মাসে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মিনতিদেবীর একমাত্র মেয়ে ৩০ বছর বয়সি কমলের চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে হৃদরোগে মৃত্যু হয়। কমল রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছিলেন। মেয়ে, স্বামীকে হারিয়ে একা হয়ে পড়েছিলেন মিনতিদেবী। তখন তাঁর সর্বক্ষণের দেখভালের দায়িত্ব নেন বুদ্ধ শামল নামে এক রিক্সাচালক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। মিনতিদেবীর যখনই কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তাঁকে রিক্সা চালিয়ে নিয়ে যেতেন ওই ব্যক্তি।মিনতিদেবীর কথায়, ‘যখনই তাঁর কোনও প্রয়োজন হয়, তাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বুদ্ধ। বুদ্ধ অনেকদিন ধরেই তাঁর পরিবারের সেবা করে আসছেন। আমার মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসতেন বুদ্ধই। যখনই আমাদের নানা কাজে রিক্সার প্রয়োজন হত, তখনই ওকে ডাকতাম। ২৫ বছর ধরে রিক্সা চালিয়ে আসছেন তো। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়ে যাওয়ায় এখন ওর ওপর একটা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। ওঁর স্ত্রী আমাদের বাড়িতে গৃহস্থালির কাজ করেন। ওঁর স্ত্রী আমাকে খুবই মানসিক শান্তি দিয়েছে।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, ‘যখন আমি আমার সম্পত্তি হস্তান্তরের কথা ভাবি, তখন আমার পরিবারের অন্যান্যরা আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম। ফলে তাঁরা আর আমার বিরোধিতা করেননি।’ জানা যায়, মিনতিদেবীর তিন তলা বাড়ি, গয়না মিলিয়ে ১ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। সেই সম্পত্তি ওই রিক্সাচালকের নামে লিখে দিয়েছেন তিনি। সম্পত্তি হস্তান্তরের পর বুদ্ধ জানান, ‘প্রথম দিকে আমি ওঁনার সম্পত্তি নিতে রাজি হচ্ছিলাম না। কিন্তু উনি আমাদের তাঁর সঙ্গে থাকতে জোরাজুরি করলেন। তাই ওঁনার কথা আর ফেলতে পারলাম না।’