গুজরাটের দুই কিংবদন্তি শিল্পপতি। দু'জনেই ভারতের শিল্পক্ষেত্রকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছেন। নিজেরা সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেছেন। সেই সঙ্গে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান করেছেন দু'জনেই। এক জন হলে আদানি গোষ্ঠীর প্রধান গৌতম আদানি। ভারতের ধনীতম ব্যক্তি। অপরজন মুকেশ আম্বানি, রিলায়েন্স গোষ্ঠীর প্রধান।তবে, কিছুদিন আগে পর্যন্তও দু'জনের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সেভাবে কোনও মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দিতা ছিল না। তবে সময়ের সঙ্গে সেটা পাল্টাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর তার ফলে, আগামিদিনে দুই মহারথীর অশ্বমেধের ঘোড়া হতে পারে পরস্পরের মুখোমুখি- এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।এক বিদেশি টেলিকমিউনিকেশন জায়ান্ট কেনার কথা ভাবছে আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। অন্যদিকে ভারতে 5G এয়ারওয়েভের প্রথম বড় সেলে বিড করতে তৈরি আদানি গোষ্ঠী।ভারতের মোবাইল যোগাযোগের বাজারে আম্বানির রিলায়েন্স জিও ইনফোকম লিমিটেড এক নম্বরে রয়েছে। এদিকে, আদানি গ্রুপের কাছে এখনও ওয়্যারলেস টেলিকমিউনিকেশন পরিষেবা দেওয়ার লাইসেন্সই নেই। কিন্তু শিল্প মহলের ধারণা, শীঘ্রই আম্বানিকে টক্কর দিতে পারেন আদানি। আগামীর 'মূল' ব্যবসায় মুখোমুখি লড়াই হতে পারে দেশের দুই বৃহত্তম সংস্থার।ইতিমধ্যেই আসন্ন প্রতিযোগিতাকে নাকি নোট করেছে রিলায়েন্স। গোপন সূত্রের খবর, এখন থেকেই নাকি প্রস্তুত তারা। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, আম্বানিকে একদল পরামর্শদাতা ভারতের বাইরে পোর্টফোলিও শক্তিশালী করার পরামর্শ দিচ্ছে। অন্যদিকে অপর দলের মতে, ভারতের আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য তহবিল সঞ্চয় করে রাখুক রিলায়েন্স। এই 'আসন্ন চ্যালেঞ্জ'-ই কি আদানি? তা অবশ্য জানা যায়নি।গত কয়েক দশক ধরে, আদানির মূল ব্যবসা ছিল বন্দর, কয়লা খনি এবং শিপিংয়ের মতো সেক্টরে। অন্যদিকে তেলের ব্যবসাই মূল লক্ষ্য ছিল আম্বানির। কিন্তু গত কয়েক বছরে, এটি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।মার্চ মাসে, আদানি গ্রুপ সৌদি আরবের তেল সংস্থায় সম্ভাব্য অংশীদারিত্বের আলোচনা করেছে বলে জানা যায়। নামী তেল রপ্তানিকারক আরামকোতে অংশীদারিত্ব কেনার সম্ভাবনার কথা জানা যায়।তার কয়েক মাস আগেই, রিলায়েন্স আরামকোর কাছে তার শক্তি ইউনিটের ২০% অংশীদারিত্ব বিক্রি করার একটি পরিকল্পনা বাতিল করেছিল। রিলায়েন্স এখনও অপরিশোধিত তেলের ব্যবসা থেকেই তার সিংহভাগ আয় করে।দুই সংস্থারই সবুজ শক্তিতেও উল্লেখযোগ্য 'ওভারল্যাপ' রয়েছে। দুই সংস্থাই এই ক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ফলে আগামিদিনে দুই সংস্থা বিভিন্ন ক্ষেত্রে একই ব্যবসায়িক লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। শেষমেশ তাতে কে জয়ী হবেন? তা অবশ্যই সময়ই বলবে।