ছিলেন পুলিশি হেফাজতে। মেডিক্যাল চেকআপের জন্য তাঁকে এবং তাঁর ভাইকে নিয়ে আসা হয়েছিল হাসপাতালে। সেখানে ঘটা বিপত্তি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় গ্যাংস্টার থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা আতিক আহমেদকে মাথায় গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সামনে থাকলেও কিছুই করতে পারল না। আতিককে মারার পরই তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভাই আশরাফকেও গুলি করে মারে দুষ্কৃতীরা। তবে কে, কী কারণে মারল এই দুই ধৃতকে? উঠছে নানান প্রশ্ন। আঙুল উঠেছে যোগীর পুলিশের দিকে। জানা গিয়েছে, আতিক হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।রিপোর্ট অনুযায়ী, আতিককে গুলি করে খুন করার ঘটনায় অভিযুক্তদের নাম হল সানি, লাভলেশ এবং অরুণ। প্রতক্ষদর্শীদের দাবি, আতিক ও আশরাফকে গুলি করার পর সানি, লাভলেশরা 'জয় শ্রী রাম' স্লোগান তুলেছিল। এদিকে আতিক ও আশরাফকে খুনের পরই সানি, অরুণ এবং লাভলেশকে ধরে ফেলে পুলিশ। জানা গিয়েছে, গুলি চালনার ঘটনায় এক সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। এদিকে পুলিশ এখনও এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কোনও বিবৃতি পেশ করেনি। পুলিশের তরফে শুধুমাত্র এটুকুই জানানো হয়েছে, এখনও অভিযুক্তদের জেরা করা হয়নি। জেরা করা হলে বিবৃতি জারি করে ঘটনা সম্পর্কে বিশদে জানাবে পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সানি, লাভলেশ এবং অরুণ সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল। উল্লেখ্য, একদিন আগেই আতিকের ছেলে আসাদ আহমেদের মৃত্যু হয়েছিল এক এনকাউন্টারে। ছেলের শেষযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আতিক আবেদন জানালেও তাঁকে ছাড়া হয়নি। এই আবহে গতকাল প্রায় রাত ১০টা নাগাদ আতিককে প্রয়াগরাজের এক সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য। সেখানেই গাড়ি থেকে নামার পর আতিককে ঘিরে ধরেছিলেন সাংবাদিকরা। তাঁর ছেলের শেষযাত্রা না যেতে পারা নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছিল আতিককে। প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও কয়েক পা যাওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে শুরু করেছিলেন আতিক। কিছু কথা বলার পরই আচমকা আতিকের বাঁদিক থেকে একটি বন্দুকধারী এসে মাথায় 'পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে' গুলি করে তাঁকে। এরপর আতিকের পাশে থাকা তাঁর ভাই আশরাফকেও গুলি করে খুন করা হয়। এই গোটা ঘটনা সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এরপরও বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলার আওয়াজ শোনা যায়। ঘটনাটির ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।প্রসঙ্গত, আতিকের বিরুদ্ধে শতাঝিক মামলা রয়েছে। তবে সাম্প্রতিককালে তাঁর নাম জড়িয়েছিল আইনজীবী উমেশ পাল হত্যাকাণ্ডে। ২০০৫ সালে বিএসপি বিধায়ক রাজু পাল হত্যাকাণ্ডে অন্যতম মূল সাক্ষী ছিলেন উমেশ পাল। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সেই উমেশ পাল এবং দুই পুলিশকর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছ গত ৫০ দিনে। বাকিদের মৃত্যু পুলিশি এনকাউন্টারে হয়েছে। আর গতকাল আতিক ও আশরাফের খুন হল দুষ্কৃতীদের গুলিতে।