ভোলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদল সভাপতি নূরে আলমের মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সাধারণ মানুষের ‘ভোগান্তির কথা চিন্তা করে’ দুপুরেই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ হরতাল প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর বলেন, সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকা হলেও সাধারণ মানুষের ‘ভোগান্তির কথা চিন্তা করে’ দুপুরেই তা প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন তাঁরা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে।লোডশেডিং এবং জ্বালানি খাতে ‘অব্যবস্থাপনার’ প্রতিবাদে সারাদেশে বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ৩১ জুলাই ভোলা জেলা সদরেও বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ছিল৷ সেদিন নেতা-কর্মীরা জেলা কার্যালয়ে সমাবেশ করে মিছিলের প্রস্তুতি নিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘাত বাঁধে।ভোলা শহরের মহাজনপট্টি এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বিএনপি ও তার অঙ্গ সংঘঠনের নেতাকর্মীরা।গত রবিবার (৩১ জুলাই) বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপির সামবেশে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলম। পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর প্রতিবাদে ভোলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে জেলা বিএনপি। হরতালের সমর্থনে সকাল ১০টার দিকে বিএনপির একটি বিক্ষোভ মিছিল ভোলা শহরের সদর রোড ঘোরে তবে কোথায়ও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির সোপান বলেন, ‘ভোলার বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হরতালের সমর্থনে মিছিল করছেন৷ তবে কোন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হরতাল ও বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।এদিকে হরতালের কারণে মহাজনপট্টি এলাকায় দোকান-পাট বন্ধ দেখা গেলেও সদর রোডে খোলা রয়েছে, চলছে যানবাহনও। তাছাড়া ভোলা-চরফ্যাশন রুটের বাসও চলাচল করছে।ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ফরহাদ সরদার জানান, হরতালকে ঘিরে কোনও ধরনের বিশৃংখলা এড়াতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে৷ পুলিশ বিভিন্ন স্থানে টহল দিচ্ছে।লোডশেডিং এবং জ্বালানি খাতে ‘অব্যবস্থাপনার' প্রতিবাদে সারাদেশে বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার জেলা সদরেও বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ছিল। সেদিন নেতা-কর্মীরা জেলা কার্যালয়ে সমাবেশ করে মিছিলের প্রস্তুতি নিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘাত বাঁধে৷ সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে নিহত হন স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল রহিম। ওই ঘটনায় নুরে আলমের মাথায় গুলি লাগে। পরে তাঁকে ভোলা থেকে ঢাকায় নিয়ে এসে কমফোর্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির চার শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে পুলিশ।এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)