জঙ্গি হামলায় গতকাল ব্রাসেলসে মৃত্যু হয়েছিল দুই সুইডিশ ফুটবলপ্রেমীর। সেই ঘটনায় অভিযুক্তকে অবশেষে গ্রেফতার করল বেলজিয়ান পুলিশ। বেলজিয়ামের ফেডারেল প্রসিকিউটার সার্ভিসের মুখপাত্র এরিক ভ্যান ডুসে আজ জানান, ব্রাসেলসের শকারবিক এলাকায় সেই বন্দুকবাজকে ধরে পুলিশ। তাকে গ্রেফতার করতে গেলে নাকি সে গুলিও ছুঁড়েছিল। তবে জবাবি হামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি জখম হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। (আরও পড়ুন: ༺ইজরায়েলের বদলায় ৬ বছরের শিশুকে ২৬ কোপ USA-তে, এরই প্রতিশোধে বেলজিয়ামে ২ সুইডিশ ফুটবলপ্রেমীকে খুন জঙ্গির)
꧅উল্লেখ্য, গতকাল সন্ধ্যায় ব্রাসেলসের রাস্তায় খুন হন দুই সুইডিশ নাগরিক। ঘটনায় আরও এক সুইডিশ নাগরিক জখম হন। এই ঘটনার পর রাতের দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় একটি ভিডিয়ো। তাতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি কমলা রঙের জ্যাকেট ও লাল রঙের টুপি পরে আছে। সে নিজেকে আইএস জঙ্গি হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। তার দাবি, সেই সুইডিশ নাগরিকদের সে গুলি করে খুন করেছে। এদিকে জঙ্গি হামলার আবহে সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা জারি করা হয় বেলজিয়াম জুড়ে। জানা যায়, হামলার পর সীমান্ত পার করে বেলজিয়াম থেকে ফ্রান্সে যাওয়ার চেষ্টা করে সেই জঙ্গি। এরপরই সীমান্তেও জারি হয় উচ্চ সতর্কতা। এদিকে মৃত দুই সুইডিশ নাগরিক তাঁদের দেশের ফুটবল জার্সি পরেছিল বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত হওয়া বেলজিয়াম বনাম সুইডেনের ইউরো কোয়ালিফায়ার ফুটবল ম্যাচ দেখতেই এসেছিলেন তাঁরা।
🌄এদিকে ভাইরাল ভিডিয়োতে সেই জঙ্গিকে বলতে শোনা যায়, 'ইসলামিক সালাম। আল্লাহু আকবর। আমার নাম আবদেসালেম আল গিলানি এবং আমি আল্লাহর একজন যোদ্ধা। আমি ইসলামিক স্টেট থেকে এসেছি। যে আমাদের ভালোবাসে আমরা তাকে ভালোবাসি এবং যারা আমাদের ঘৃণা করে তাকে আমরাও ঘৃণা করি। আমরা আমাদের ধর্মের জন্য বাঁচি এবং আমরা আমাদের ধর্মের জন্য মরতেও পারি। আলহামদুলিল্লাহ। তোমার ভাই মুসলমানদের নামে প্রতিশোধ নিল। আমি এ পর্যন্ত তিনজন সুইডিশকে হত্যা করেছি। তিন সুইডিশ, হ্যাঁ। যাদের মনে হয় আমি কিছু ভুল করেছি, তারা যেন আমাকে ক্ষমা করে দেয়। আর আমি সবাইকে ক্ষমা করে দিচ্ছি। সালাম ওয়ালেকুম।' সেই জঙ্গি নিজের ভিডিয়ো বার্তায় বলে, আমেরিকার ইলিনয় প্রদেশে ৬ বছর বয়সি এক মুসলিম শিশুকে হত্যার ঘটনায় 'উদ্বুদ্ধ' হয়েই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সে। এদিকে কয়েক মাস আগেই সুইডেনে কোরান শরিফ পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছিল। এরপর থেকে সুইডেনের নিরাপত্তা স্তর বৃদ্ধি করা হয়েছিল। বিদেশেও সুইডিস নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল।
ꦜএদিকে এই জঙ্গি হামলার পর বাতিল করা হয় বেলজিয়াম বনাম সুইডেনের ম্যাচটি। রিপোর্ট অনুযায়ী, দুই সুইডিশ সমর্থকের খুন হওয়ার ঘটনায় বিচলিত হয়ে পড়েন সুইডেনের ফুটবলাররা। হাইফটাইমে ঘটনার বিষয়ে জানতে পারেন তাঁরা। এই আবহে দ্বিতীয়ার্ধ্বে তাঁরা ম্যাচ খেলতে চাননি। এদিকে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পারেন বেলজিয়ামের ফুটবলাররাও। এরপরই স্পোর্টসম্যানশিপের নজির গড়ে বেলজিয়াম দল জানিয়ে দেয়, তাঁরা সুইডিশ ফুটবলারদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন। এদিকে ঘটনার পরই সুইডিশ সমর্থকদের মাঠ ছেড়ে যেতে বারণ করা হয়। রাস্তায় বের হলে তাঁদের ওপর আবার হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে স্টেডিয়ামেই কড়া নিরাপত্তায় সুইডিশ সমর্থকদের রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় পুলিশের সবুজ সংকেত মিললে সুইডিশ সমর্থকদের স্টেডিয়াম থেকে ধীরে ধীরে বের করে আনা হয়।