বিহারের জন্য স্পেশ্যাল স্টেটাস ও জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবিতে বহুবার সরব হয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তবে তাঁর মন্ত্রিসভার বিজেপি সদস্যদের তরফে এই ইস্যুতে সেভাবে সোচ্চার সমর্থন তিনি পাননি। এদিকে, এমন এক রাজনৈতিক অঙ্কের মাঝেই বিহারে নীতীশ শিবিরের মূল বিরোধী দল লালু প্রসাদের আরজেডি জানিয়েছে, জাতিভিত্তিক জনগণনা ও বিহারকে স্পেশ্যাল স্টেটাস দেওয়ার বিষয়ে আরজেডি নীতীশের পাশে থাকতে রাজি। তবে, জেডিইউয়ের নীতীশ শিবিরের সামনে এই ইস্যুতে কয়েকটি শর্ত রেখেছে আরজেডি।বিহারে আরজেডির রাজ্যসভাপতি জগদানন্দ সিং সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন,'ওঁদের সরিয়ে দিন (বিজেপির মন্ত্রী) যাঁরা সরকারের বিরোধিতা করছেন। নীতীশ কুমারের বিজেপির সামনে ঝোঁকার দরকার নেই। যদি জাতিভিত্তিক জনগণনা ও স্পেশ্যাল স্টেটাস নিয়ে নীতীশ রকারের ওপর কোনও প্রভাব পড়ে, তাহলে বিরোধী মহাজোট রয়েছে তাঁরে সমর্থনের জন্য।' এখানেই শেষ নয়। বিহারের রাজনীতি তোলপাড় করে আরজেডি জানিয়ে দিয়েছে, এই প্রস্তাবের নির্দেশ এসেছে খোদ আরজেডি নেতা তথা লালুপুত্র তেজস্বী যাদবের তরফে। উল্লেখ্য, বিহারে ২০২০ সালের বিধানসভার ভোট-গণিত দেখলে , দেখা যাবে, ২৪৩ সদস্যের বিধানসভায় ৭৫ টি আসন নিয়ে বিহারে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে উঠে আসে লালু প্রসাদের পার্টি আরজেডি। বিজেপি সেখানে ৭৪ টি আসনে জয় ছিনিয়ে নেয়। নীতীশ কুমারের জেডিইউ বিহারে সেবার ৪৫ টি আসন পেয়েছিল। এরপর জিতেন রাম মাঝির এইচএএম ও বিকাশশীল পার্টি সহ একাধিক দলকে নিয়ে নীতীশ কুমার সরকার গড়ে। জেডিইউয়ের সবচেয়ে বড় শরিক দল হয় বিজেপি।উল্লেখ্য, এর আগে লালু-নীতীশ জোট বিহারে সরকার গড়লেও, তা ভেঙে যায়। এদিকে, এই প্রথম নীতীশকে সমর্থনের বার্তা দেয়নি আরজেডি। এর আগেও বিজেপি-জেডিইউ মন কষাকষিতে উস্কানি দিতে ছাড়েনি তেজস্বী শিবির। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে অরুণাচল প্রদেশে জেডিইউয়ের ৬ নেতা যোগ দেন বিজেপিতে। তখনই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে , আরজেডি আরও একটি প্রস্তাব দেয়। সেই সময় তাদের তুরুপের তাস ছিল ২০২৪ সালে নীতীশ কুমারকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে সমর্থনের প্রস্তাব। তবে এক্ষেত্রেও শর্ত ছিল, যদি তেজস্বীকে বিহারের মসনদে নীতীশ আনেন, তবেই আরজেডির তরফে ২০২৪-এ প্রধানমন্ত্রিত্বের ইস্যুতে সমর্থন পাবেন নীতীশ। এদিকে, ফের নতুন করে বিহারের রাজনীতিতে আরজেডির প্রস্তাব বিজেপি কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে। বিজেপির তরফে প্রেম রঞ্জন প্যাটেল বলেন, 'আরজেডি বুঝে গিয়েছে যে তারা সরকার গড়তে পারবে না। যেভাবে আগে তাঁকে অপমান করা হয়েছে, নীতীশ কুমার ওঁদের টোপে পা বাড়াবেন না।' এদিকে, আরজেডির প্রস্তাব খারিজ করে জেডিইউর নীরজ কুমার জানিয়েছেন, 'জগদানন্দবাবুর কথা আরজেডিতে কেউ শোনেননা। সেখানে লালু প্রসাদের কথা শোনা হয়। পার্টির কাছে আর কোনও ইস্যু নেই।'