ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর দেখা গিয়েছিল সারাদিন দুর্ঘটনাস্থলেই ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। আর গতকাল বিহারের রঘুনাথপুরে নর্থ-ইস্ট এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরও সারা রাত জেগে থেকে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখলেন রেলমন্ত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মৃত যাত্রীদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ব্যক্ত করেন রেলমন্ত্রী। এদিকে এই দুর্ঘটনার আসল কারণ বের করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন রেলমন্ত্রী। পরে রাত ১টা নাগাদ রেলমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, শীঘ্রই উদ্ধারকাজ শেষ হবে। এরপরই লাইন মেরামতির কাজ শুরু হয়ে যাবে। এদিকে উদ্ধারকাজে নিযুক্ত রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয়দের প্রশংসা করে রেলমন্ত্রী জানান, সবাই একজোট হয়ে কাজ করছেন। (আরও পড়ুন: লাইনচ্যুত হয় ২১টি কামরা, নর্থ-ইস্ট এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় বাড়ল মৃতের সংখ♛্যা)
এদিকে দুর্ঘটনার পরই মেডিক্যাল দল নিয়ে বিশেষ ট্রেন রওনা হয়ে গিয়েছিল রঘুনাথপুরের দুর্ঘটনাস্থলে। এদিকে গভীর রাতে ট্রেনের বাকি যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেনও গিয়ে পৌঁছায় রঘুনাথপুর স্টেশনে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব নিজে গভীর রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান যে বিশেষ ট্রেন এসে যাত্রীদের নিয়ে যাত্রা দিয়েছে গন্তব্যের দিকে। রাত প্রায় ২টো নাগাদ রেলমন্ত্রী জানান, উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়েছে। লাইনচ্যুত প্রতিটি কামরা খতিয়ে দেখা হয়েছে। কোথাও আর কোনও যাত্রী নেই। সেই ট্রেনের যাত্রীদের বিশেষ ট্রেনে চাপিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে পাঠানো হবে বলে জানান রেলমন্ত্൲রী। সকাল থেকে লাইন মেরামতের দিকে মন দেওয়া হবে বলেও জানান রেলমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, জানা গিয়েছে, গতরাত সাড়ে ৯টার কিছু পরে বিহারের রঘুনাথপুর রেল স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয় নর্থ-ইস্ট সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। দুর্ঘটনার জেরꦕে আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন যাত্রী। এদিকে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৪। এর আগে গতরাতে দুর্ঘটনার পর বক্সার পুলিশ সুপার ১ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিলেন। তবে আজ সকালের রিপোর্ট অনুযায়ী, আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে এই দুর্ঘটনায়। এদিকে জানা গিয়েছে, ট্রেনটির ২১টি কামরা লাইনচ্যু হয়ে যায়। এদিকে ট্রেনের তিনটি এসি কামরার মধ্যে দু'টি ছিটকে পড়ে গিয়েছিল লাইনে।
এদিকে দুর্ঘটনার জেরে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ সকল পর্যন্ত রঘুনাথপুরে লাইন মেরামতির চলছে। লাইনচ্যুত কামরাগুলি এখনও রেললাইꦇনে এলোমেলো ভাবেই পড়ে আছে। সেগুলিকে সরালে এই লাইনে রেল চলাচল স্বাভাবিক হবে। দুর্ঘটনার জেরে বৈদ্যুতিক খুঁটি, সিগন্যাল পোস্ট এবং আপ-ডাউন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লি-হাওড়া মেন লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। বহু ট্রেনেরই পথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। দ্রুত পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান রেলের শীর্ষ কর্তারা। উল্লেখ্য, দিল্লির আনন্দ বিহার টার্মিনাল-কামাখ্যা জংশনের মধ্যে চলাচল করে ১২৫০৬ নর্থ-ইস্ট সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। যাত্রাপথের একটা অংশ পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়েও যায়। পশ্চিমবঙ্গের নিউ আলিপুরদুয়ার, নিউ কোচবিহার, জলপাইগুড়ি রোড এবং নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে দাঁড়ায়। এই দুর্ঘটনার কারণ বের করতে ইতিমধ্যে গঠিত হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি।