গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিতে হয়েছে বিজেপিকে। এবারে ব্যর্থ হলেও এর পুনরাবৃত্তি পরের নির্বাচনে হবে না। মঙ্গলবার দলীয় বৈঠকে কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে এই বার্তাই দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। তাঁর কথায়, ‘৫ বছর পর বিজেপি এই রাজ্যে সরকার গঠন করবে ও তৃণমূলকে উচিত শিক্ষা দেবে।’ রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূলের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজয়ের পর বিভিন্ন জেলায় বিজেপিতে ভাঙন ধরছে। এই পরিস্থিতিতে কর্মীদের মনোবল যাতে ভেঙে না যায়, সেকথা মাথায় রেখেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির এই বার্তা।এদিন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মারফত বিজেপির এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে যোগ দেন জেপি নড্ডা। সভায় তিনি রীতিমতো পরিসংখ্যান তুলে ধরে রাজ্যে বিজেপির ক্রমবর্ধমান উত্থানের কথাই তুলে ধরেন। এই প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জানান, ‘২০১৪ সালে বিজেপি মাত্র ২টি আসনে জয়লাভ করেছিল। ১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৬ সালে বিজেপি রাজ্যে মাত্র ৩টি আসনে জেতে। ১০.১৬ শতাংশ ভোট পায়। এরপর ২০১৯ সালে ৪২টির মধ্যে ১৮টি আসনে জেতে এবং ৪০.২৫ শতাংশ ভোট পায়। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৭৭টি আসনে জিতেছে। ৩৮.১ শতাংশ ভোট পেয়েছে।’এদিন ভোট পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি নিয়েও তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন নড্ডা। তাঁর মতে, যেখানে তৃণমূল রয়েছে, সেখানেই হিংসা ছড়াচ্ছে। ভোট তো অন্য রাজ্যেও হয়েছে। কিন্তু বাংলার মতো হিংসা তামিলনাডু, কেরালা, অসম, পুডুচেরি কোথাও হয়নি। কারণ, সেখানে তৃণমূল নেই। তাই সেখানে হিংসাও হয়নি। একইসঙ্গে তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে যে পরিমাণ সন্ত্রাস হয়েছে, তা কল্পনাতীত। তিনি জানান, বিজেপি কর্মীদের প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। ১৩৯৯টি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। ১০৮টি বিজেপি পরিবার খুনের হুমকি পেয়েছে। বিজেপি করায় প্রতিহিংসাবশত ৬৭৬টি লুঠের ঘটনা ঘটেছে। বিষ্ণুপুর ও আরামবাগের দলীয় কার্যালয় জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিন তৃণমূল ও মমতাকে একসঙ্গে আক্রমণ করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জানান, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন, সেখানেই নৈরাজ্য রয়েছে। সেখানেই দুর্নীতি রয়েছে। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা। অথচ এই রাজ্যের মহিলারাই নিরাপদ নন।ভ্যাকসিন দেওয়ার নামে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নড্ডা জানিয়েছেন, যেথানে ভ্যাকসিনের নামে দুর্নীতি হয়, সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার কী কাজ করছেন, সবাই তা ভালোভাবেই বোঝেন। সাংসদ মিমি চক্রবর্তী পর্যন্ত জাল ভ্যাকসিন পেয়েছেন। এরপরও যদি দুর্নীতিকে সমর্থন করা হত, তাহলে রাজ্যের মন্ত্রীরাও হয়ত ভুয়ো ভ্যাকসিন পেতে যেতেন।