হাই কোর্টে এবং সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে কলেজিয়ামের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত লেগেই রয়েছে। এই আবহে কয়েকদিন আগেই এক আইনজীবীকে বিচারপতি পদের জন্য সুপারিশের পক্ষে যুক্তি দিয়ে কলেজিয়ামের তরফে গোয়েন্দা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, যখন কোনও আইনজীবী বা বিচারককে হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি করার জন্য সুপারিশ করা হয়, তখন আইবি বা 'র'-এর তরফে 'ব্যাকগ্রাউন্ড চেক' করা হয়। এই ক্ষেত্রে সেই আইনজীবীর 'ব্যাকগ্রাউন্ড চেক'-এর রিপোর্টের কিছু অংশ সুপ্রিম রেজোলিউশনের মাধ্যমে প্রকাশ করেছিল কলেজিয়াম। আর তাই নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। এই নিয়ে কিরেন রিজিজু বলেন, 'দেশের জন্য গোপনে কাজ করেন ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির আধিকারিকরা। এভাবে যদি তাঁদের ফাইল জনসমক্ষে প্রকাশ করে দেওয়া হয়, তাহলে এরপর তাঁরা এই কাজ করার আগে দু'বার ভাবতে বাধ্য হবেন।' (আরও পড়ুন: ফের ঝামেলায় জড়ালেন কাউন্সিলররা, দ্বিতীয়বার স্থগিত হয়ে গেল দিল্লি♔র মেয়র নির্বাচন)
এদিকে আইবি এবং 'র'-এর রিপোর্টের অংশ সুপ্রিম কো♍র্টের রেজোলিউশনে থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও আলোচনা করবেন বলে আভাস দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমরা সবসময়ই যোগাযোগ রেখে চলি একে অপরের সঙ্গে। তিনি বিচার ব্যবস্থার প্রধান। আমি সরকার এবং বিচার ব্যবস্থার মধ্যকার সেতু। আমাদের একসঙ্গেই কাজ করতে হবে। আমরা একা একা কাজ করতে পারব না।' প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই সমকামী আইনজীবী সৌরভ কৃপালকে দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি পদে নিয়োগ করতে বলে ফের কেন্দ্রকে সুপারিশ পাঠিয়েছꩲিল সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। এর আগে স্বার্থের সংঘাতের যুক্তি দেখিয়ে সমকামী আইনজীবী সৌরভ কৃপালের নাম ফিরিয়েছিল কেন্দ্র। 'র'-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, কৃপালের সঙ্গী একজন ইউরোপীয় এবং তিনি সুইজারল্যান্ডের দূতাবাসে কাজ করেন। সেই যুক্তিতেই তাঁকে বিচারপতি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়েছিল কেন্দ্র। এদিকে অ্যাডভোকেট আর সত্যনকেও মাদ্রাস হাই কোর্টের বিচারপচতি নিয়োগ করার ক্ষেত্রে 'আইবি'র রিপোর্টকে হাতিয়ার করেছিল কেন্দ্র। তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই আপত্তির কথা তুলে ধরতে রিপোর্টের অংশ নিজেদের রেজোলিউশনে লেখে। আর এই নিয়েই রিজিজুর আপত্তি।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে প্রথমবার দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি পদে নাম সুপারিশ করা হয়েছিল কৃপালের। সেই সময় কলেজি𓂃য়ামের সুপারিশ অগ্রাহ্য করেছিল কেন্দ্র। এরপর ২০১৯-এর জানুয়ারি, এপ্রিল এবং গত বছরের অগস্টে কৃপালকে নিয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখে কলেজিয়াম। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রের যুক্তির স্বপক্ষে তথ্য চেয়ে সেই সময়কার আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদকে চিঠি লেখেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে। গোয়েন্দা তথ্যের ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠান বিচারপতি বোবদে। তবে কেন্দ্রের তরফে একটি জবাবই দেওয়া হয়, 'কৃপালের সঙ্গী বিদেশি।' পরে ফের কৃপালের নাম ফেরত পাঠিয়ে দেয় কেন্দ্র। সেই প্রেক্ষিতে বর্তমান কলেজিয়াম বলে, কৃপালের সঙ্গী সুইৎজারল্যান্ডের নাগরিক। কলেজিয়ামের পর্যবেক্ষণ, সুইৎজারল্যান্ড ‘মিত্র রাষ্ট্র’। সাংবিধানিক পদাধিকারী অনেকেরই স্বামী বা স্ত্রী বিদেশের নাগরিক। সেই ক্ষেত্রে কৃপালের নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গীর নাগরিকত্ব বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। এই আবহে কেন্দ্রের আপত্তির 'কারণ' প্রকাশ্যে চলে আসায় অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বিজেপিকে। আর তাই ফের একবার বিচার ব্যবস্থাকে নিশানা করলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক