রেজাউল এল লস্করআগেই থেকেই খবর আসছিল। এবার গোয়েন্দা রিপোর্টে জানা গেল, তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের চুম্বি উপত্যকায় স্থানীয়দের নিয়ে দুটি সামরিক বাহিনী তৈরি করেছে চিন। নাম গোপন রাখার শর্তে একথা জানিয়েছেন কয়েকজন আধিকারিক। ওই আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তিব্বতিদের নিয়ে দুটি বাহিনী গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি বাহিনীতে ১০০ জনের মতো যুবক-যুবতী আছেন। ইতিমধ্যে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) কাছে প্রশিক্ষণ শেষ করেছে একটি বাহিনী। সেই বাহিনীকে ইয়াদং , চিমা, রিনচেনগ্যাং, পিবি থ্যাং এবং ফাঁড়ির মতো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ চুম্বি উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তে মোতায়েন করা হয়েছে। দ্বিতীয় বাহিনী আপাতত ফাঁড়িতে চিনা সেনাবাহিনীর কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ করছে। সেই বাহিনীর কোনও পদমর্যাদা বা উর্দি নেই। বিভিন্ন তথ্য এবং কথাবার্তা চালাচালির উপর নজরদারি চালিয়ে এরকম খবর পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিকরা। কিন্তু পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্বের মধ্যে স্থানীয়দের কেন সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ করা হচ্ছে? এক আধিকারিক বলেন, ‘মূলত স্থানীয় সীমান্তে মোতায়েনের লক্ষ্যে সেই স্থানীয়দের সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ করা হচ্ছে। যাতে স্থানীয় এলাকা, ভাষা, জনতাত্ত্বিক গঠন এবং আবহাওয়ার বিষয়ে তাঁদের যে জ্ঞান আছে, তা পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়।’সেই পরিস্থিতিতে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। পুরো বিষয়টির উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। বিশেষত চিনা ভূখণ্ডে অবস্থিত ১০০ কিলোমিটারের চুম্বি উপত্যকা কৌশলগত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। যার পূর্বদিকে আছে ভুটান এবং পশ্চিমে আছে সিকিম। আধিকারিকদের বক্তব্য, চুম্বি উপত্যকায় এমন জায়গায় অবস্থিত যে তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ সেখান থেকে অভিযান চালিয়ে অনায়াসে শিলিগুড়ি করিডরের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা নষ্ট করে দেওয়া যায়।তারইমধ্যে বিশেষ তিব্বতি সেনাবাহিনী গঠন করেছে সম্প্রতি পিপলস লিবারেশন আর্মি। তবে ওই আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সেই বিশেষ তিব্বতি সেনাবাহিনীর থেকে পৃথকভাবেই কাজ করবে স্থানীয়দের নিয়ে গঠিত বাহিনী। এমনকী গোয়েন্দা সংস্থাগুলি জানতে পেরেছে যে সেই বিশেষ তিব্বতি বাহিনীতে যাদের নতুন নিয়োগ করা হচ্ছে, প্রশিক্ষণের পর তাদের বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের আশীর্বাদ চাওয়া হচ্ছে। এক আধিকারিক বলেন, ‘আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য আগে নবনিযুক্ত তিব্বতিদের তিব্বতি সন্ন্যাসীদের কাছে নিয়ে যাওয়ার কোনও প্রমাণ নেই। সম্ভবত নবনিযুক্ত তিব্বতি সৈন্যদের মধ্যে ধর্মীয় ভাবাবেগ জাগ্রত করতে এটা চিনা সেনাবাহিনীর নয়া কৌশল।’