চিনের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন লি কেকিয়াং। ভয়েস অফ আমেরিকার রিপোর্ট অনুসারে এমনটাই জানা গিয়েছে। আসলে দল ও সরকারের প্রতি তাঁর প্রভাব যে কতটা সুদৃঢ় সেটাই যেন দেখিয়ে দিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এতদিন চিনের কমিউনিস্ট পার্টির কার্যত সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং। প্রথমে তাকে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো থেকে তাকে ছেঁটে ফেলা হয়। গত অক্টোবর মাসে দেখা যায় সেন্ট্রাল কমিটিতে ২০৫জন নতুন সদস্যকে নির্ধারন করা হয়েছিল। সেই তালিকায় দেখা যায় লি সহ কয়েকজনের নাম নেই। এদিকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে তাদের নাম না থাকার জেরে তারা আর পলিটব্যুরোর সদস্য়ও হতে পারবেন না। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে তখনই তিনি অপসারিত হননি। কথা ছিল আরও কিছু দিন তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব সামলাবেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ওই পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন। কিন্তু কেকিয়াংকে কেন সরিয়ে দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছিল। এদিকে সাধারণ বয়সের ভারে অনেক সময় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হয়। আসলে বিগত দিনে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডেন্ট পদে জি জিনপিংয়ের অন্য়তম প্রতিযোগী ছিলেন লি কেকিয়াং। দুজনের চলার পথে ও মতেরও কিছু অনৈক্য ছিল। কেকিয়াং মূলত বাজার ভিত্তিক আর্থিক সংস্কারের পক্ষপাতী ছিলেন। অন্যদিকে জিনপিং অর্থনীতির উপর রাষ্ট্রের একেবারে কড়া নিয়ন্ত্রণ চাইতেন।এদিকে বিগত দিনে কমিউনিস্ট পার্টির যুব সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন কেকিয়াং। তবে অবসরের আগেই তাকে পলিটব্যুরোর সদস্যপদ ছেড়ে দিতে হয়েছিল। আসলে একটা সময় চিনের সম্ভাব্য শীর্ষ নেতা হিসাবে মনে করা হত কেকিয়াংকে। কিন্তু জিনপিংয়ের দাপটে তিনি ক্রমেই কোণঠাসা হতে শুরু করেছিলেন। তিনি যে পার্টির নম্বর ২ এটাও মাঝেমধ্য়ে বোঝা যেত না। গোটা কেরিয়াতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ, প্রচন্ড বুদ্ধিমান কূটনীতিবিদ। ভয়েস অফ আমেরিকার রিপোর্ট অনুসারে ৯০ এর দশকে তিনি হেনানের গভর্নর ছিলেন। সেই সময় তিনি একাধিক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ১৯৬৬-৬৭ এর সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সময় তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়়েছিলেন। পেকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন আইনের ছাত্র পরবর্তী সময় প্রধানমন্ত্রীর পদও পেয়েছিলেন। কিন্তু অবশেষে ছাড়লেন সেটাও।