চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নের সাম্প💟্রতিক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব৷ অভিযুক্ত দুই ছাত্রকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে৷
গত এক বছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ জন ছাত্রী হেনস্থার শিকার হয়েছেন৷ এর আগের ঘটনাগুলিতে একজনও গ্রেফতার হয়নি৷ এবার এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিয়ো তোলার চেষ্টার পর আন্দোলনে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা৷ অবশেষে এই যৌন নিপীড়নের🅺 ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব৷ ধৃতরা সবাই ছাত্রলিগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গিয়েছে৷𒊎
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘ঘটনার হোতা আজিম হোসাইন নিজের মোবাইল দিয়ে ভিডিয়ো ধারণের কথা স্বীকার করেছে৷ এই ঘ𒅌টনাটির সঙ্গে ছয়জনের সম্পৃক্ততার কথা তারা নিজেরাই স্বীকার করেছে৷ এর মধ্যে তিনজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তিনজন স্থানীয় বহিরাগত৷ আটক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হল ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আজিম হোসাইন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের নুর হোসেন শাওন ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নুরুল আবছার বাবু৷ বহিরাগতরা হল মো. সাইফুল, হাটহাজারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষেღর ছাত্র মাসুদ রানা ও মো. সাইফুল৷ তাদের মধ্যে দুই সাইফুল ছাড়া বাকিরা গ্রেফতার হয়েছে৷'
আরও পড়ুন: Bangladesh Power crisis- লোডশেডিং কি বিদ্যুৎ পর𒈔িস্থিতি সামাল দিতে পারবে?
র্যাব কর্মকর্তা এম এ ইউসুফ বলেন, ‘শুক্রবার ঘটনার মূল অভিযুক্ত আজিমকে গ্রেফতার করা হয়৷ সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই তার বাড়ি৷ তার নেতৃত্বে পুরো ঘটনা ঘটেছে৷ তাকে গ্রেফতারের পর আমরা বাকিদের নাম পাই৷ আজিম এর আগেও ছাত্রীদের ইভটিজিং করেছে বলে আমাদের কাছে ꦅস্বীকার করেছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বাড়ি হওয়ার সুবাদে নিজেকে অনেক ক্ষমতাধর মনে করত সে৷'
সেদিন যা ঘটেছিল
ꦫ র্যাব-৭-এর অধিনায়ক জানান, অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি, সেদিন রাত ১০টা-সাড়ে ১০টার দিকে ওই ছাত্রী তার এক বন্ধু-সহ হলের দিকে ফিরছিলেন৷ আজিম ও তার গ্রুপটি মোটরসাইকেল নিয়ে রাতে ঘোরাঘুরি ও আড্ডা দিতে থাকে৷ ঘোরাঘুরির সময় হঠাৎ তাদের নজরে আসে, একটি ছেলে ও একটি মেয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের দিক থেকে হেঁটে আসছে, জায়গাটি একটু নির্জন৷ শুরুতে তারা গিয়ে ভুক্তভোগীদের চার্জ করে৷ ছাত্রীর সঙ্গে থাকা ছেলেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন না৷ অভিযুক্তরা তাদের কাছে গিয়ে এত রাতে বাইরে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করে৷ ছেলেটির কাছে দাবি করা হয় চাঁদা৷ একপর্যায়ে তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়৷
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, এরপরই তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়৷ পরে ছয়জন তাদের ওপর চড়াও হয়৷ ছেলেটিকে আটকে রেখে মেয়েটিকে তারা নির্যাতন করে৷ প্রথমে চড়-থাপ্পড় মারে, তারপর বিবস্ত্র করে ভিডিয়ো তোলার চেষ্টা করে৷ ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ভ্যানিটি ব্যꦛাগ ও টাকা পয়সা নিয়ে নেওয়ার পর তারা (জড়িতরা) ঘটনাস্থল ত্যাগ করে৷ তখন ভুক্তভোগীরা একটি হলে গিয়ে এক ছাত্রের মোবাইল থেক🃏ে ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অভিযোগ জানায়৷
শনিবার সকালে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযুক্ত সবাই বলছে তারা ছাত্রলিগ সমর্থন করে৷' চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলিগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘এরা বগিভিত্তিক সংগঠন সিএফসির সদস্য৷ এর দায় ছাত্রলিগ নেবে না৷ বিশ্ববিদ্যালয় আইনি ব্যবস্থা নেবে৷ ঘটনার পরপরই আমরা চেষ্টা করেছি অভিযুক্তদের খুঁজে বের করে র্যাবের হাতে ধরিয়ে দিতে৷ কোনও ব্যক্তির অপরাধের দায় তো সংগঠন নেবে না৷ এখন আসলে কিছু হলেই সবাই ছাত্রলিগকে অভিযুক্ত করার জন্য উঠে পড়ে ল🎶েগে যায়৷'
বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্তে যা এসেছে
ছাত্রীর কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়৷ ওই কমিটি রিপোর্টও দিয়েছে৷ সেখানে তারা দুই জনের নাম পাওয়ার কথা জানিয়েছিল৷ তাদের একজন মূল অভিযুক্ত🌄 মোহাম্মদ আজিম হোসাইন ও ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মেহেদি হাসান হৃদয় (বান্টি)৷ প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, ‘র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে হৃদয়ের সম্পৃক্ততার তথ্য আসেনি৷ র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, ভুল করে হয়ত হৃদয়ের নাম তদন্ত কমিটি বলে থাকতে পারে৷
এবার কেন আন্দোলন?
১৭ জুলাই ওই ছাত্রী নির্যা✱তনের শিক🎃ার হওয়ার পর ক্যাম্পাস এমনিতেই থমথমে ছিল৷ তারপর আবার গত ১৯ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের আবাসিক হলে রাত ১০টার মধ্যে প্রবেশের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ এতে আরও ক্ষুব্ধ হন ছাত্রীরা৷
আরও পড়ুন: নড়াইলের হামলাকারীরা অধরা, আকাশ আদৌ ধর্ম অবমাননা করেছিল কিℱনা, অনিশ্চিত পুলিশ