দিল্লির প্রশাসনের ক্ষমতা থাকবে কার হাতে? এই প্রশ্নের জবাবে কয়েকদিন আগেই অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে বড় স্বস্তি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। পদস্থ আমলাদের বদলির বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, নিজেদের আধিকারিকদের নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার দিল্লির সরকারের রয়েছে। এর আগে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের হাতে ছিল দিল্লি সরকারের আমলা বদলির ক্ষমতা। এই আবহে সরকারের সঙ্গে আমলাদের মতভেদ দেখা যাচ্ছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই বিবাদে ইতি পড়ে। অবশ্য দিল্লি সরকারের হাতে সেই ক্ষমতা থাকলে হাতে গোনা কয়েকদিন। কারণ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অকার্যকর করে এই স♊ংক্রান্ত নতুন অধ্যাদেশ পাཧশ করাল কেন্দ্রের মোদী সরকার। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে একটি আইন এনে দিল্লির আমলা নিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিয়েছিল কেন্দ্র। তবে গত ১১ মে-র নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এই সংক্রান্ত ক্ষমতা থাকা উচিত জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের হাতেই।
প্রায় ১০ দিন আগেই সর্বসম্মতিক্রমে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, আইন-শৃঙ্খলা এবং ভূমি ছাড়া যাবতীয় বিষয়ের ক্ষেত্রে দিল্লি সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকবে। তবে গতকাল রাতে মোদীর নেতৃত্বাধীন ౠক্যাবিনেট একটি অধ্যাদেশ এনে 'ন্যাশনাল ক্যাপিটাল সিভিল সার্ভিসেস অথরিটি' গঠন করে। ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টেরিটরি অফ দিল্ꦉলি অ্যাক্ট, ১৯৯১-কে সংশোধন করে এই অধ্যাদেশ এনেছে মোদী সরকার। এই আবহে ফের একবার দিল্লির আমলাদের বদলির ক্ষমতা চলে গেল কেন্দ্রীয় সরকারেরই হাতে। নয়া অধ্যাদেশের ফলে আমলা বদলির ক্ষেত্রে ফের একবার 'সর্বশক্তিমান' হয়ে উঠলেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর।
ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টেরিটরি অফ দিল্লি অ্যাক্ট নতুন একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে গতরাতের অধ্যাদেশের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে ইউপিএসসি পাশ করা আমলাদের থেকে দিল্লির জন্য পৃথক ক্যাডার তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া দিল্লি সাবঅর্ডিনেট সার্ভিসেস বোর্ড থেকেও নিয়োগের ক্ষমতা চলে গিয়েছে কেন্দ্রের হাতেই। উল্লেখ্য, এর আগে আলাদা করে দিল্লির জন্য কোনও ক্যাডার ছিল না ইউপিএসসি-র থেকে। এই নয়া সিভিল সার্ভিস অথরিটির মাথায় থকবেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে থাকবেন দিল্লির মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব। তারা সম্মিলিত ভাবে বদলি বা নিয়োগ সংক্রান্ত সুপারিশ 💖পাঠাবেন লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে। এরপর নিজের ইচ্ছে মতো সেই সুপারিশ গ্রহণ বা খারিজ করতে পারবেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর। এমনি রাজ্যের ক্ষেত্রে যেভাবে রাজ্যপালকে সরকারের পরামর্শে চলতে হয়, জাতীয় রাজধানী দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে সেভাবে সরকারের পরামর্শে চলতে হয় না। তাঁর ক্ষমতা কোনও রাজ্যের রাজ্যপালের থেকে বেশি। ♉এই পরিস্থিতিতে কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন সার্ভিসেস অথরিটি যদি কোনও সুপারিশ করেও, তা মানতে বাধ্য থাকবেন না লেফটেন্যান্ট গভর্নর।
এদিকে কেন্দ্রের এই অধ্যাদেশকে 'আদালত অবমাননা'র সামিল বলে অভিযোগ তুলেছে দিল্লির ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি। উল্লেখ্য, বিগত দু'দিন ধরে আম আদমি পার্টি অভিযোগ করে আসছিল যে সুপ্রিম নির্দেশিকাকে অকার্যকর করতে নয়া ছক কষছে কে𒅌ন্দ্রীয় সরকার। এরই মধ্যে দিল্লি🍬র অপসারিত সার্ভিসেস সেক্রেটারি অভিযোগ করেছিলেন যে আপ মন্ত্রী তাঁর সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেন। এই সব বিতর্ক, ষড়যন্ত্রের অভিযোগের মাঝেই কেন্দ্র নয়া অধ্যাদেশ এনে ফের ক্ষমতা নিজেদের হাতেই নিয়ে নিল।