কর্ণাটক বিধানসভার নির্বাচনী ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতি ছিলই, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বাজেটে ঘোষণা করেছেন, অ্যাপনির্ভর পণ্য সরবরাহকারী সংস্থার কর্মীদের জন্য রাজ্য সরকার মোট চার লক্ষ টাকার বিমা করে দেবে কর্নাটক সরকার। অর্থাৎ, সুইগি, জোমাটো সহ বিভিন্ন গিগ কর্মীদের আনা হবে ২ লক্ষ টাকা মূল্যের জীবন বিমার আওতায় এবং আরও ২ লক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে দুর্ঘটনাজনিত বিমার ক্ষেত্রে। পুরো বিমার ক্ষেত্রেই প্রিমিয়াম বহন করবে রাজ্য সরকার, বাজেট পেশ করার সময় মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এমনই জানিয়েছেন।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অসংগঠিত ক্ষেত্রের 'গিগ ওয়ার্কারদের' সামাজিক সুরক্ষা প্রদানের জন্য, অর্থাৎ সুইগি, জোমাটো, অ্যামাজন ইত্যাদির মতো ই-কমার্স সংস্থাগুলিতে কর্মরত পূর্ণ সময়ের বা পার্ট টাইম ডেলিভারি কর্মী হিসাবে নিযুক্ত ব্যক্তিদের বিমার সুবিধা প্রদান করা হবে। জীবন বিমা এবং দুর্ঘটনাজনিত বীমার জন্য ৪ লক্ষ টাকা ধার্য্য করেছে কর্নাটক সরকার।’ কোভিড মহামারির ফলে এবং বিগত সরকারের শ্রম বিরোধী নীতির কারণে শ্রমিক শ্রেণীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সিদ্দারামাইয়া আরও বলেন, ‘আমাদের সরকার কঠোর পরিশ্রমকে সম্মান জানায়, এবং রাজ্যে শ্রমিক-বান্ধব পরিবেশ তৈরি করে শ্রমিক শ্রেণীর স্বাস্থ্য ও কল্যাণের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে’। বাজেট প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায়, ইন্ডিয়ান ফেডারেশন অফ অ্যাপ বেসড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স (IFAT) -এর সাধারণ সম্পাদক শেখ সালাউদ্দিন বলেছেন, কংগ্রেস পার্টি তার নির্বাচনী ইস্তেহারে বলেছিল, গিগ শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য ৩০০০ কোটি টাকায় একটি তহবিল গঠন করবে তারা। কিন্তু বাজেটে এর কোনও উল্লেখ ছিলনা। কেন্দ্রীয় সরকারের মোটর ভেহিকেল অ্যাগ্রিগেটর নির্দেশিকা অনুসারে, গিগ কর্মীরা ১৫ লক্ষ টাকার মেয়াদী বিমা এবং ১০ লক্ষ টাকা স্বাস্থ্যবিমা পাওয়ার অধিকারী। কর্ণাটকের শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ লাদ জানিয়েছেন, ক’দিন আগে গিগ কর্মীদের সংগঠন শ্রম দফতরে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে সরকারকে ভাবার প্রস্তাব দিয়েছিল। তার পর থেকেই সরকার এ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে। শেষ পর্যন্ত বাজেটে তার প্রতিফলন দেখা গেল।কোনও দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে শ্রমিকের আঘাত বা প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটলে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়, বাজেটে ঘোষিত বিমার পরিমাণ সেই তুলনায় অনেকটাই কম বলে উল্লেখ করেন সালাউদ্দিন। পশ্চিমবঙ্গ সম্প্রতি গিগ কর্মীদের জন্য মোটর ভেহিকেল অ্যাগ্রিগেটর নির্দেশিকা প্রয়োগ করেছে। মহারাষ্ট্র বর্তমানে এই নির্দেশিকাগুলি গ্রহণ করার দিকে এগোচ্ছে বলে জানায় তিনি। অর্থাৎ সার্বিক ভাবে গিগ অর্থনীতি ও গিগ শ্রমিকরা দেশের রাজনৈতিক পরিসরে গুরুত্ব পেতে আরম্ভ করেছে। আগামীতে এই অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সত্যিই কতটা সরকারি সহযোগিতা পান, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতেই হবে।