বাংলা থেকে অসম - সর্বত্রই স্থানীয় ভাবাবেগ উস্কে দিতে কোনও কসুর ছাড়ছে না বিজেপি।তারই রেশ ধরে অসমে নিজের ভাষণে ভূপেন হাজারিকা, আচার্য শংকরাদেবদের প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন অমিত শাহ। সঙ্গে দাবি করলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে উত্তর-পূর্ব ভারতে অভূতপূর্ব ‘উন্নয়ন’ হয়েছে।তিনদিনের উত্তর-পূর্ব ভারত সফরে শনিবার সকালে গুয়াহাটিতে পৌঁছান শাহ। কামরূপের একটি অনুষ্ঠান থেকে গুয়াহাটির দ্বিতীয় মেডিক্যাল কলেজ এবং ‘বাতদ্রব থান’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেয়াল। সেই মঞ্চ থেকে শাহ দাবি করেন, ‘আচার্য শংকরাদেবদের জন্মস্থানের জন্য কিছু করেনি কংগ্রেস। যাঁর অবদানের ফলে অসমের ইতিহাস, নাটক রচনা, শিল্প এবং কবিতা স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্ত বিজেপি রাজ্যের ভাষা, সংস্কৃতি, কলায় বিশ্বাস করে বিজেপি। রাজ্যগুলির সংস্কৃতি এবং ভাষা শক্তিশালী না হওয়া পর্যন্ত ভারত মহত্ব লাভ করতে পারবে না বলে বিশ্বাস করে বিজেপি। অসম ছাড়া ভারতের সংস্কৃতি এবং শিল্প অসম্পূর্ণ।’ভাবাবেগ উসকে দেওয়ার পাশাপাশি মোদীর আমলে অসম-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে যে ‘উন্নয়ন’ হয়েছে, তাও স্মরণ করিয়ে দেন শাহ। তিনি দাবি করেন, একটা সময় অসমে বিভিন্ন আন্দোলন হত। তাতে শয়ে শয়ে যুবক-যুবতির মৃত্যু হত। তার জেরে বিঘ্নিত হত শান্তি। থমকে থাকত উন্নয়নের গতি। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। প্রায় সমস্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী সমাজের মূলস্রোতে ফিরে এসেছে। বোড়ো চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে শাহ বলেন, ‘যে বোড়ো যুবকরা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন, তাঁরা সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসছেন।’ তাই অসমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উন্নয়নই একমাত্র পন্থা। যা মোদীর আমলে হয়েছে বলে দাবি করেন শাহ। জানান, আগে কালেভদ্রে উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রধানমন্ত্রীদের পা পড়ত। কিন্তু গত ছ'বছরে ৩০ বার উত্তর-পূর্ব ভারতে এসেছেন মোদী। আর প্রতিবারই উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ‘উপহার’ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন শাহ। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অসম সরকারের প্রশংসা করেন। জোর দেন বন্যা পরিস্থিতির উপর। সেইসঙ্গে সতর্কতাবাণীও শোনান শাহ। জানান, আগামী বছর নির্বাচনের আগে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হবে। যা কার্যত গত লোকসভা ভোটে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী সতর্কবার্তার প্রতিধ্বনি বলে মত রাজনৈতিক মহলের।