ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও লাখ লাখ টাকা। গ্ৰাহকদের সচেতন করার পরেও এমন ঘটনার সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। এই ভুয়ো লেনদেন ও ব্যাঙ্ক জালিয়াতির হার কমাতেই এবার নয়া পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্র। নতুন ব্যবস্থায় টাকা লেনদেন করতে এবার থেকে মুখ ও আইরিস অর্থাৎ চোখের মনির ছবি চাইতে পারে ব্যাঙ্ক। তিনটি সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, কর ফাঁকি দেওয়ার ঘটনা এড়াতেও এই নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বছরে একটি নির্দিষ্ট আঙ্কের লেনদেন হয়ে গেলে পরবর্তী লেনদেন করার সময় এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। তবে একটি অন্তর্বর্তী নির্দেশিকা হিসেবে এটি সবকটি ব্যাঙ্কের কাছে পাঠানো হয়েছে। ফলে প্রকাশ্যে এখনও কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি।পরিচয় নিশ্চিত করার পদ্ধতিটি এই প্রথম ব্যাপকভাবে চালু করতে চলেছে সরকার। তবে ইতিমধ্যেই অল্প কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কে এই পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেন চালু রয়েছে। এবার এটিই বৃহত্তরভাবে আসতে চলেছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই নতুন পদ্ধতি লেনদেনের জন্য বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে না। যেসব ক্ষেত্রে করদাতা গ্ৰাহকেরা প্যান (পারমানেন্ট অ্যাকাউন্ট নাম্বার) কার্ডের বদলে অন্য পরিচয়পত্র ব্যবহার করেন, তাদের জন্যই এই ব্যবস্থা।তবে ব্যাঙ্কের এই নয়া ব্যবস্থা ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিয়েও বেশ কিছু প্রশ্নচিহ্ন রেখে যাচ্ছে। যেহেতু এই পদ্ধতিতে মুখ ও আইরিশের ছবি পরিচয় হিসেবে জরুরি, তাই তথ্যগুলি বেহাত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। প্রবীণ আইনজীবী ও সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ পবন দুগ্গালের কথায়, ভারতীয় আইনে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা, সাইবার সিকিউরিটির আইন এখনও বেশ দুর্বল। ফলে নয়া পদ্ধতিতে গ্ৰাহক তথ্য বেহাত হওয়ার আশঙ্কা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে সূত্র মারফত খবর, ২০২৩-এর প্রথমদিকেই এই সংক্রান্ত আইন লোকসভায় পাশ করানো হতে পারে। এতে দেশ জুড়ে সব ব্যাঙ্কে একই নিয়ম চালু করা সহজ হবে।নয়া পদ্ধতিতে একটি আর্থিক বছরে অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ লাখ টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে এমন গ্ৰাহকদের জন্য এই পরিচয় শনাক্তকরণের ব্যবস্থা থাকবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই আধিকারিক জানান, যেসব গ্ৰাহকরা শুধু আধার কার্ড দিয়েই তাদের অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রেখেছেন তাদের লেনদেন শনাক্ত করতেই এমন ব্যবস্থা।