🅠 ভয়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অসমে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র। একই অবস্থা আরও একাধিক নদীরও। ফলে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করেছে একাধিক জায়গায়। ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে অসমের বহু এলাকা। তার ফলে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৫ জন। ঘরছাড়া হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়াও ডিব্রুগড় জেলায় ব্রহ্মপুত্রের একটি চরে আটকে পড়েছিলেন ১৩ জন মৎস্যজীবী। তিনদিন পর তাঁদের ভারতীয় বায়ুসেনা হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে অসম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এএসডিএমএ)। অন্যদিকে, অরুণাচল প্রদেশেও ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: ౠচোখের নিমেষে বন্যার গ্রাসে ভেঙে পড়ল বাড়ি! অসমে আতঙ্কের ছবি
ꦫএএসডিএমএ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত অসমে বন্যা কবলিত জেলার সংখ্যা ১৯টি। শেষ ২৪ ঘণ্টায় অসমের বিভিন্ন জেলায় আরও চার লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সবমিলিয়ে অসমে বন্যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৬.৪৪ লাখ মানুষ। তাছাড়া, অরুণাচলের সীমান্ত এলাকার দিকে ভূমিধসের ফলে দুই রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে। প্রসঙ্গত, ৫ জুলাই পর্যন্ত অসমে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করেছে আইএমডি।
🌳অসমের লখিমপুরে ১.৪৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ এবং অরুণাচল সীমান্তবর্তী জেলা ধেমাজিতে ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অসমের বিভিন্ন জেলা জুড়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ৮ হাজারের বেশি মানুষ। এদিকে, তিনসুকিয়া জেলায় বন্যার ফলে আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তার ফলে মোট ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
😼অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, অরুণাচলে ভারী বৃষ্টিপাত হল বন্যার প্রধান কারণ। তিনি জানান, যে কোনও জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় এনডিআরএফ এবং সেনাবাহিনী প্রস্তুত। এদিকে, ডিব্রুগড় জেলায় ব্রহ্মপুত্র নদীর মাঝা মাঝি অবস্থিত একটি চরে মাছ ধরতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন ১৩ জন মৎস্যজীবী। শুক্রবার থেকে তারা সেখানে আটকে ছিলেন। পরে তাদের উদ্ধারের জন্য এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফের কর্মীরা নৌকায় করে সেখানে পৌঁছনোর জন্য বারবার চেষ্টা করেন। কিন্তু, নদীর প্রবল স্রোতের কারণে তারা সেখানে পৌঁছতে ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত সোমবার তাদের হেলিকপ্টারের সাহায্যে উদ্ধার করে অসম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট।
🌠অসমের বেশ কয়েকটি নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র জল বিপদসীমার অনেকটা উপরে বইছে। গত পাঁচদিনে নদীর জল স্তরে বেড়েছে ১০৫ মিটার। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পরিস্থিতি জানার জন্য হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে কথা বলেছেন। সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র।
🐟অন্যদিকে, অরুণাচলের কুরুং কুমে জেলার কুরুং নদীর ওপর একটি সেতু ভেসে গিয়েছে। এই সেতুটি চিনের সঙ্গে এলএসি সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম ছিল। নামসাই এবং চাংলাং জেলায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করতে এবং বন্যা-বিধ্বস্ত গ্রামে ত্রাণ সরবরাহ করতে তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে প্রশাসন। পূর্ব সিয়াং জেলায় সিয়াং নদী এবং তার উপনদীগুলির জলস্তর মারাত্মকভাবে বেড়েছে। প্রবল বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য ইটানগরে ২ জুলাই থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে।