মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, হত্যা, লুঠপাট, অগ্নিসংযোগের মত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকায় বিএনপির প্রাক্তন সাংসদ আবদুল মোমিন তালুকদার খোকার ফাঁসির রায় ঘোষণা করেছে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল৷ ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এ মামলার রায় ঘোষণা করেছে বুধবার৷ ট্রাইবুনাল পলাতক আবদুল মোমিন তালুকদারের বিরুদ্ধে আনা তিনটি অভিযোগেই তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে৷ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে হবে৷আবদুল মোমিন তালুকদার চারদলীয় জোট সরকারের আমলের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন এবং তিনি বগুড়া-৩ আসন থেকে দু'বার এমপি হয়েছিলেন৷এ মামলার শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন ও রেজিয়া সুলতানা চমন৷ আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আবুল হাসান৷ গত ৩১ অক্টোবর মামলার রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়৷ যুদ্ধাপরাধের তিন অভিযোগ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে আসামি আবদুল মোমিন তালুকদার-সহ পাঁচ থেকে ছয়জন স্বাধীনতাবিরোধী ও ২০ জন পাকিস্তানি সেনা সদস্যকে নিয়ে বগুড়া জেলার আদমদিঘি থানার কলসা বাজার, রথবাড়ি এবং তিয়রপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যা করতে অপারেশন চালান৷ ওই দিন আসামী নিজে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কলসা গ্রামের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ইসলাম উদ্দিন প্রামাণিক-সহ হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করেন৷১৯৭১ সালের ২৪ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে একই থানার কাশিমালা গ্রামের ১৬ থেকে ১৭টি বাড়ি লুঠ করেন মোমিন৷ সেদিন পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়৷ ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর রাতে আব্দুল মোমিন তালুকদার রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনী নিয়ে আদমদিঘী থানার তালশন গ্রামের অভিযান চালিয়ে চারজনকে হত্যা করেন৷তদন্তকারী কর্মকর্তা জেডএম আলতাফুর রহমান ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে এ মামলার তদন্ত কাজ শুরু করেন৷ মামলায় জব্দ তালিকা ছাড়াও ২৯ জনকে ঘটনার স্বাক্ষী করা হয় এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ১৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়৷ স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সালে আবদুল মোমিন তালুকদার বিএনপিতে যোগ দেন৷ পরে আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি হন৷ বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন তিনি৷ ২০০১ ও ২০০৮ সালে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন৷ সেইসময় বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন আবদুল মোমিন তালুকদার৷ (বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)