২০১৬ সালে পর্নস্টার স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় মোট ৩৪টি অভিযোগের সবকটিতেই দোষী সাব্যস্ত হলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পই প্রথম প্রাক্তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি কি না ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন। এদিকে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হতেই ট্রাম্প এই বিচার প্রক্রিয়ায় কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। ট্রাম্প বলেন, 'স্বার্থের সংঘাতে জড়ানো এক দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারকের বিচার এটা। এতে কারচুপি হয়েছে। এটা খুবই লজ্জাজনক। আমাদের পুরো দেশ এখন কারচুপির শিকার হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আঘাত করার জন্য বাইডেন প্রশাসন এটি করেছে। আমাদের দেশ এখন বিভক্ত জগাখিচুড়ি হয়ে গিয়েছে।' এদিকে ট্রাꦍম্পের সাজা ঘোষণা করা হবে আগামী ১১ জুলাই।
উল্লেখ্য, নিজের যৌন কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেওয়🌼ার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছিল নিউ ইয়র্কের আদালতে। প্রসঙ্গত, প্রথম মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোনও ফৌজদারি মামলার বিচারে হাজির হয়ে লজ্জার ইতিহাস গড়েছিলেন ট্রাম্প। আর সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে নয়া 'ইতিহাস' গড়লেন তিনি। এদিকে আর কয়েক মাসের মধ্যেই আমেরিকায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ট্রাম্প রিপাবলিকান প্রার্থী হয়ে বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়বেন সেই নির্বাচনে। তার আগে অবশ্য এই মামলার রায় অস্বস্তিতে ফেলবে ট্রাম্পকে।
এই মামলায় মোট ৩৪টি অভিযোগ ছিল ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এদিকে এই মামলায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলেও প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন। তবে রয়টার্সের এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, মা♔মলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্পের নির্বাচন জেতার সম্ভাবনা অনেকটা বড় ধাক্কা খেতে পারে। প্রাথমিক ভাবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্ক দণ্ডবিধির ১৭৫ ধারা অনুযায়ী ব্যবসায়িক রেকর্ড জালিয়াতির একাধিক অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এই মামলা।🐻 এদিকে জালিয়াতির অভিযোগে ট্রাম্প যদি দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় প্রতিটি অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ চার বছর করে কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন তিনি। তবে এই অভিযোগগুলির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক কারাদণ্ডের বিধান নেই। এই আবহে দোষী সাব্যস্ত ট্রাম্পকে জেলে যেতে নাও হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারের সময় পর্নস্টার স্টর্মির মুখ বন্ধ করতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল এই মামলা। স্টর্মি♑র দাবি, ২০০৬ সালে নেভেদায় সেলেব্রিটিদের একটি গলফ প্রতিযোগিতায় ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। এরপর ২০০৭ সালে একটি শো'তে অংশগ্রহণ করে লস অ্যাঞ্জেলসে বেভারলি হিলসে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বাংলোয় দেখা করেছিলেন স্টর্মি। এরপর ২০১১ সালে ইন টাচ ম্যাগাজিনে স্টর্মি দাবি করেন যে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। সেই সংক্রান্ত একাধিক তথ্যও দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন। এই বিতর্কের পর ২০১৬ সালে রিপাবলিকানদের হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ান ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের অক্টোবরে ট্রাম্পের সঙ্গে 'সম্পর্কের' বিষয় নিয়ে মুখ না খোলার জন্য স্টর্মিকে ১৩০,০০০ মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের আইনজীবী। এরপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে ট্রাম্পের আইনজীবী দাবি করেছিলেন যে স্টর্মিকে নিজের থেকে অর্থ দিয়েছিলেন। ট্রাম্প ওই বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেননি।