শিশির গুপ্তচিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ করারও দরজা খোলা আছে। কিন্তু সামরিক স্তরে আলোচনা এবং কূটনৈতিক প্রক্রিয়া ফলপ্রসূ না হলে তবেই সেই পদক্ষেপ করা হবে। এমনটাই জানালেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল বিপিন রাওয়াত।‘হিন্দুস্তান টাইমস’-এ জেনারেল রাওয়াত বলেন, 'প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান নিয়ে মতভেদ থাকায় সেখানে লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এরকম লঙ্ঘন যাতে অনুপ্রবেশে পরিণত না হয়, তার উপর নজর রাখা এবং তা রোখার দায়িত্ব আছে প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির। সরকারের তরফে শান্তিপূর্ণভাবে এরকম যে কোনও গতিবিধি সমাধানের দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে যাবতীয় পদক্ষেপ (গ্রহণের পাশাপাশি) সামরিক পদক্ষেপেরও জন্য সবসময়ে প্রস্তুত থাকে প্রতিরক্ষা বিভাগ।'তিনি জানান, লাদাখে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) যাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনে, সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন বিকল্প উপায়গুলির পর্যালোচনা করে দেখছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল-সহ জাতীয় সুরক্ষার জন্য যুক্ত আধিকারিকরা।দেশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবও উড়িয়ে দিয়েছেন জেনারেল রাওয়াত। যিনি ২০১৭ সালে ডোকলাম বিবাদের সময় সেনাপ্রধান ছিলেন। তিনি জানান, পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে ভারতের দীর্ঘ সীমান্ত আছে। সেখানে টানা নজরদারির প্রয়োজন আছে। একইসঙ্গে নিজেদের স্বার্থের জায়গায় সর্বদা নজরদারি এবং তথ্য জোগাড় ও একত্রীকরণের জন্য দেশের সব সংস্থার মধ্যে নিয়মিত আলোচনার বিষয়ে ভারত কাজ করছে বলে জানিয়েছেন জেনারেল রাওয়াত। তাঁর বক্তব্য, নিয়মিত আলোচনায় বসছে সর্বোচ্চ মাল্টি-এজেন্সি কেন্দ্র। যা সর্বদা লাদাখ-সহ দেশের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ জায়গার বিষয়ে সবাইকে অবহিত রাখছে।লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় ও চিনার সেনার সংঘাত নিয়ে শনিবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, তিন সামরিক প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকও করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। লাদাখে এমনিতেই নিজেদের উপস্থিতি জাহির করেছে চিন। পালটা হিসেবে ভারতও সৈন্য এবং সামরিক সম্ভার সমাবেশ করেছে।তারইমধ্যে জেনারেল রাওয়াত জানিয়েছেন, কয়েক বছর ধরেই সীমান্ত এলাকায় উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে ভারত। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার এবং তহবিলের জন্য নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে। তাদের জন্য যে প্রতীক্ষিত উদ্যোগের প্রয়োজন, বিগত তিন-চার বছরে তা দেওয়া হয়েছে। দাববুক-শিয়ক-দৌলত বেগ ওল্ডি রোডের মতো উন্নয়নমূলক কাজ বা উত্তরাংশের সীমান্তে উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়েছে, যাতে সেইসব মানুষকে যোগাযোগের সুবিধা দেওয়া যায়, যাঁরা অন্যথায় অন্য জায়গায় চলে যেতে চান। একইসঙ্গে সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি চালানোর সুরক্ষা বাহিনীকেও সাহায্য করে তা। অগ্রাধিকারের মাধ্যমে সেই প্রকল্পগুলিতে জোর দেওয়ার ফলে ভবিষ্যতে কৌশলগত যোগাযোগের গড়ে তোলার ক্ষেত্র বিকশিত হয়েছে।’ উল্লেখ্য, দাববুক-শিয়ক-দৌলত বেগ ওল্ডি রোড তৈরি চিনা আগ্রাসনের অন্যতম প্রাথমিক কারণ বলে ধারণা অনেকের।