আইএমডি অর্থাৎ ভারতের জলবায়ু বিষয়ক দপ্তর সম্প্রতি প্রকাশ করল আবহাওয়া জলবায়ু সংক্রান্ত কিছু পরিসংখ্যান। ১৯০১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত হিসেব করে দেখা যাচ্ছে ২০২৩ সাল ভারতের নিরিখের দ্বিতীয় উষ্ণতম বছর। আশঙ্কা করা হচ্ছিল এমন কিছুই, একবিংশ শতাব্দীর গোড়া থেকেই ক্রমশ উষ্ণ থেকে উষ্ণতর হচ্ছিল বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে ভারতবর্ষও। উর্ধ্বক্রমে সাজান গেলে সবথেকে উষ্ণ বছরগুলি হচ্ছে ২০১০, ২০১৭, ২০০৯, ২০২৩ এবং ২০১৬ অর্থাৎ, ১২০ বছরের ইতিহাসে ভারতের সাপেক্ষে ২০১৬ সাল হচ্ছে সবথেকে উষ্ণতম এবং গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সাল দ্বিতীয⛄় উষ্ণতম বছর হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। গত ১৪ বছরের মধ্যেই পাঁচটি উষ্ণতম বছর পেয়েছে এই দেশ, যা অত্যন্ত আশঙ্কার এবং উদ্বেগের মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। তাপমাত্রার দ্রুত বৃদ্ধি এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন এই অবস্থার জন্য দায়ী বলে মনে করছেন তারা।
আইএমডি’র ডিরেক্টর মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানাচ্ছেন, সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি গড় তাপমাত্রার তুলনায় ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা ০.৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকে কিন্তু, ২০১৬ সালে ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা ০.৬৫-এর পরিবর্তে ০.৭১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। সার্বিকভাবে দেশ দুনিয়া জুড়েই জলবায়ু সংকটের কারণে কখনও কখনও উষ্ণতা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত, তেমনই কখনও কখনও বর্ষণের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বাভাবিকের তুলনায়। ২০২৩ সালে তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, উপকূলীয় অন্ধপ্রদেশ, কেরল, কর্নাটকের দক্ষিণ অংশের আবহাওয়া সংক্রান্ত উপ-বিভাগ নিয়ে গঠিত দক্ষিণ ভারতীয় উপদ্বীপীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বিগত ২০-২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অন্য একটি তথ্য বলছে ১৯০১ সাল থেকে যদি হিসাব করা যায়, দেখা যাবে ২০২৩-এর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতযুক্ত দশটি বছরের মধ্যে আসে। এবছর ১২৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয🌠়েছে এই অঞ্চলে।
সার্বিকভাবে একদিকে যেমন উষ্ণ থেকে উষ্ণতর হচ্ছে ভারতবর্ষ, তেমনই বর্ষণপ্রবণ অঞ্চলগুলিতে আরও বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এই ব🐟িষয়টিকেই বলছেন ‘এক্সট্রিম ক্লাইমেটিক ফেনোমেনন’। বঙ্গোপসাগরের জলের উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে উত্তর ভারত এবং মধ্যভারত জুড়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোনের তীব্রতা এবং পরিসংখ্যান। আমরা দেখেছি ২০২৩ সালে মোচা, বিপর্যয় এবং তেজের মতো তিনটি মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়। অন্যদিকে আইএমডির নিজস্ব বিশ্লেষণ বলছে, বজ্রপাতের ফলে দেশে মৃত্যু হয়েছে ১২৭০ জনের। এছাড়া বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ৮৬০ জন ব্যক্তির। মধ্যভারত এবং উত্তর ভারত জুড়ে উত্তপ্ত তাপপ্রবাহের ফলে ১৬০ জন ব্যক্তি মারা গেছে গত বছর। এই পরিসংখ্যানগুলি আমাদের ইঙ্গিত দেয় আগামীতে আসতে চলেছে আরও বড় বিপর্যয়, পরিবেশ এবং সভ্যতার সংকট।