শীতকাল মানেই সর্দি-কাশির মরশুম। তার উপর বাড়িতে বাচ্চা থাকলে তো কথাই নেই। এ সময় বাচ্চাদের সুস্থ রাখাই হয়ে ওঠে চ্যালেঞ্জ। বাচ্চাদের সর্দি-কাশির হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে থাকেন সকলেই। সেজন্য আবার পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়ার উপর জোর দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাধ সাধে বাচ্চাদের ইচ্ছা। শুরু হয়, খাবার হাতে নিয়ে কচিকাঁচাদের পিছনে ছোটাছুটি। তাই এই সমস্যার সমাধান করতে এখানে এমন কয়েকটি খাবারের রেসিপি দেওয়া রইল, যা চেখে দেখার ইচ্ছা ত্যাগ করতে পারবে না খুদেরা।প্রায় সব বাচ্চাই মিষ্টি পছন্দ করে। এমনই কয়েকটি মিষ্টি স্বাদের খাবারকে নতুন মোড়কে হাজির করুন তাদের সামনে।১. আনারসের হালুয়াউপকরণ:আধ কাপ কোড়া আনারস।১ কাপ সুজি।১/৪ কাপ গুড়।১ চা চামচ ঘি।১ চা চামচ দারচিনি পাউডার।সাজানোর জন্য আমন্ডপদ্ধতি:একটি প্যানে ঘি গরম করে এতে সুজি দিয়ে সেঁকে নিন। এর পর এতে দুধ দিয়ে, ততক্ষণ নাড়াচাড়া করুন, যতক্ষণ সুজিতে সমস্ত দুধ ভালো ভাবে মিশে না-যায়। এবার এতে গুড় দিয়ে মেশান। শেষে আনারস, দারচিনি পাওডার মিশিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য নাড়ুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে আমন্ড দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।সুজি সহজপাচ্য ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। ভিটামিন বি, ই, আয়রন, পটাশিয়াম, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেটে ভরপুর সুজি। আবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি থাকায় আনারস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। অন্য দিকে গুড় শীতকালে শরীর গরম রাখে। দারচিনির অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টি ব্যাক্টিরিয়াল উপাদান সর্দি-কাশির হাত থেকে রক্ষা করে। ২. ওটস ওয়ালনাট চিক্কিউপকরণ:১ কাপ রোলড ওটস১/৪ কাপ কুচনো আখরোট১/৪ কাপ গুড়১ চা চামচ ঘিপদ্ধতি:প্রথমে ওটসকে মাঝারি আঁচে কিছুক্ষণের জন্য সেঁকে নিন। এবার অন্য একটি কড়াইয়ে ঘি গরম করে এতে গুড় দিন। গুড় গলে গেলে গ্যাস নিভিয়ে এতে আখরোট কুচি ও আগে থেকে সেঁকে রাখা ওটস দিয়ে ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন। গ্রিস করে রাখা, অর্থাৎ তেল লাগিয়ে রাখা একটি প্লেটে এটি ছড়িয়ে বেলন দিয়ে মসৃণ হওয়ার পর্যন্ত বেলে দিন। গুড় ও ওটস জমে গেলে চৌকো কেটে পরিবেশন করুন।ভিটামিন বি১ ও বি৫, আয়রন, জিঙ্ক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, প্রোটিন ও বিটা গ্লুকেন নামক এক ফাইবারে সমৃদ্ধ ওটস। আবার এতে অ্যাভেনানথ্রামাইডস নামক এক ধরণের অ্যান্টি অক্সিডেন্টও বর্তমান, যা ওটসেই পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, নানান গবেষণা অনুযায়ী ওটস বাচ্চাদের মধ্যে অ্যাস্থমার আশঙ্কাও কম করে। অন্য দিকে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ আখরোট শীতকালে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।পঞ্চরত্ন ফাজউপকরণ:১/২ কাপ আমন্ড১/৪ কাপ আখরোট১/৪ কাপ খেজুর১/৪ কাপ কিসমিস২ চা চামচ সূর্যমুখীর বীজ৩ টেবিল চামচ গুড়১ চা চামচ ঘিপদ্ধতি:প্রথমে সামান্য জলে খেজুর ও কিসমিস ভালো করে ফুটিয়ে নিন। খেজুর ও কিসমিস নরম এবং মাখা মাখা হয়ে গেলে গ্যাস থেকে নামিয়ে নিন। এবার একটি ব্লেন্ডারে দিয়ে আমন্ড ও আখরোটকে মোটা করে বাটুন। এর পর এতে খেজুর ও কিসমিস দিয়ে মসৃণ করে বেটে নিন। একটি প্যানে ঘি গরম করে এতে গুড় দিন। গুড়টি গলে গেলে এতে বেটে রাখা মিশ্রণটি দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। এর পর মোটা করে বাটা সূর্যমুখীর বীজ ভালো ভাবে মিশিয়ে গ্রিস করা ট্রেতে বিছিয়ে দিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে চৌকো করে কেটে এটি পরিবেশ করুন।প্রোটিম, ভিটামিন ই, জিঙ্কে সমৃদ্ধ আমন্ড রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। আবার ক্যালশিয়ামে সমৃদ্ধ খেজুর হাড় ও দাঁত মজবুত রাখে। অন্য দিকে চোখ ও ত্বককে সুস্থ রাখতে কিসমিস সাহায্য করে। এমনকি দ্রাব্য ফাইবার থাকার কারণে কিসমিস সহজপাচ্য ও কোষ্ঠকাঠিন্যর হাত থেকে রক্ষা করে। একাধিক ভিটামিন ও মিনারেলে সমৃদ্ধ সূর্যমুখীর বীজ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে উপস্থিত জিঙ্ক ও সেলেনিয়াম শরীরে রোগ প্রতিরোধকারী কোষ সৃষ্টিতে সহায়ক।