ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই 'ডিসকাউন্টে' রাশিয়া থেকে তেল কিনে চলেছে ভারত। ইউরোপ, আমেরিকার চাপের মুখেও নিজেদের অবস্থান থেকে এতটুকু সরেনি দিল্লি। রাশিয়ার ওপর যখন আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তখন তারা চেয়েছিল, ভারতও যেন রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেয়। তাতে অর্থনৈতিক ভাবে চাপে পড়বে রাশিয়া। এই আবহে নরমে-গরমে ওয়াশিংটন অনেক বার্তাই দিয়েছিল। মার্কিন আধিকারিকরা ভারতে এসে এই নিয়ে আলোচনাও করেছিল। তবে আমেরিকার দেখানো পথে হাঁটেনি ভারত। বরং রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক মধুর রাখার দিকে মন দিয়েছে দিল্লি। আমেরিকাও মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে, ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্কে চিড় ধরানো সহজ নয়। এর নেপথ্যে ইতিহাস আছে। এই আবহে আপাতত রাশিয়া সফরে আছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। আর সেখানে গিয়ে জয়শংকর বললেন, 'বিশ্ব রাজনীতিতে একমাত্র স্থায়ী সম্পর্ক হল ভারত-রাশিয়া বন্ধুত্ব।' (আরও পড়ুন: পরপর হামলার জের, সাগরে ব্রহ্মোস মিসাইল বহনকারী ৪টি রণতরী মোতায়েন করল ꦅনৌসেনা)
আরও পড়ুন: এই প্রথ🦂ম! পাক নির্বাচনে মনোনয়ন জমা হিন্দু তরুণীর, গতবছরই পাশ করেন ডাক্তারি
ভারতের বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, 'বিশ্ব রাজনীতিতে অনেক দেশের পারস্পরিক সম্পর্কেই ওঠা পড়া থাকে। তবে ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রে একমাত্র স্থায়ী সম্পর্ক হল ভারত ও রাশিয়ার বন্ধুত্ব।' জয়শংকর বলেন, 'প্রতিরক্ষা থেকে মহাকাশ এমনকী পরমাণু ক্ষেত্রে কোনও দেশ এমন দেশকেই সাহায্য করে যাদেক ওপর উচ্চ পর্যায়ে ভরসা আছে। আর ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে এই সব ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা রয়েছে।' উল্লেখ্য, ভারতের প্রতিরক্ষা খাতে ব্যবহৃত যুদ্ধবিমান থেকে ট্যাঙ্কের একটা বড় অংশ রাশিয়া থౠেকে প্রাপ্ত। এমনকী কয়েক বছর আগে রাশিয়া থেকে এস৪০০ মিসাইল সিস্টেমও কেনে ভারত। এই ক্ষেপণাস্ত্র যাতে রাশিয়া থেকে ভারত না কেনে, তার জন্য আমেরিকা অনেক চাপ দিয়েছিল দিল্লির ওপর। এমনকী সরাসরি নিষেধাজ্ঞা জারির হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল। তবে ভারত তাতে টলেনি। বিগত বছরগুলিতে আমেরিকার সাথে ভারতের সুসম্পর্ক গড়ে উঠলেও রাশিয়াকে কোনও ভাবেই😼 ভোলেনি দিল্লি।
আরও পড়ুন: 💜বাস্তবের 'ডাঙ্কি'! ছিলেন ৩০৩, ফ্রান্স থেকে ফিরলেন ২৭৬, এবার বাকিদের কী হবে?
এই আবহে গতকাল রাশিয়ার এক অনুষ্ঠানে সেখানে বসবাসরত ভারতীয়দের উদ্দেশে বক্তব্য রাখার সময় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেন, 'ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ক অনেক দিক দিয়েই অভাবনীয়। যদি আমরা গত ৬০, ৭০ বা ৮০ বছরের দিকে তাকাই... বিশ্বের বড় বড় দেশগুলির পারস্পরিক সম্পর্কের সমীকরণে ওঠা পড়া লেগেই থেকেছে। রাশিয়াꦦ এবং চিন, রাশিয়া এবং আমেরিকা, রাশিয়া এবং ইউরোপ, ভারত ও চিন, ভারত ও আমেরিকা। অনেক সময়ই দুই দেশের সম্পর্ক ভালো থেকেছে তো আবার কখনও খারাপ থেকেছে। সব ক্ষেত্রেই দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা গিয়েছে, আবার ভালো অনেক স্মৃতিও আছে। তবে এতবছর ধরেও ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ক স্থায়ী থেকেছে। ৫০-এর দশক থেকেই ভারত ☂ও রাশিয়ায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল। তা ভেঙে রাশিয়া হয়েছে। ভারতও অনেক উন্নতি করেছে। তবে দিল্লি আর মস্কোর সম্পর্ক একই রকম থেকেছে।'
এদিকে রুশ সফর কালে সেদেশের বিদেশমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক করার কথা এস জয়শংকরের। এ♛ই আবহে জয়শংকর দাবি করেন, জি২০ সম্মেলনে ভারতের সভাপতিত্বে রাশিয়া অনেক সহযোগিতা করেছে। এই আবহে আগামী বছর ব্রিকস-এ রাশিয়ার সভাপতিত্বকে ভারত সমর্থন করবে। প্রসঙ্গত, জয়শংকর গত সোমবার মস্কোতে গিয়ে পৌঁছেছিলেন। চারদিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার তাঁর দেশে ফেরার কথা।