পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার জেরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেই রবিবার কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলিকে দল থেকে বহিষ্কার করল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। এ দিন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ওলির সদস্যপদ খারিজ করা হয়। দলীয় মুখপাত্র নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠা এএনআই-কে জানিয়েছেন, ‘ওঁর সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।’এর আগে পার্লামেন্ট ভেঙে নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ জানিয়ে পথে নামে কমিউনিস্ট পার্টির বিরোধী গোষ্ঠী। তাঁরা ওলিকেদল থেকে বহিষ্কারের হুমকিও দেন। এনসিপি-র বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা মাধব কুমার নেপাল জানিয়েছেন, ‘আমরা এনসিপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে ওলিকে বহিষ্কার করেছি। এবার আমরা তাঁর বিরুদ্ধে নীতিগত ব্যবস্থা নেব কারণ তিনি আর কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য থাকার যোগ্য নন। নিজের সিদ্ধান্তের জন্য তাঁকে জবাবদিহিও করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত তিনি কোনও ব্যাখ্যা পেশ করেননি।’সেই সঙ্গে, ভুল স্বীকার করে নিয়ে নিজের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের চেষ্টা করলেও ওলির সঙ্গে তাঁদের মিটমাটের কোনও সম্ভাবনা নেই বলে সাফ জানিয়েছেন মাধব। তাঁর মতে, ‘কেউ যেন মনে না করেন যে, ওলির সামনে এনসিপি মাথা নত করবে। এমন কখনও হবে না কারণ আমরা মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে রাজনীতি করি।’প্রসঙ্গত, তিন বছর আগে নির্বাচনে জয়লাভ করে নেপালে এনসিপি ও প্রাক্তন মাওবাদী বিপ্লবীদের জোট ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হন ওলি। পূর্ব শর্ত অনুযায়ী শাসনকালের পাঁচ বছরের মেয়াদ নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছিলেন ওলি এবং বিপ্লবী নেতাপুষ্প কুমার দহল ‘প্রচণ্ড’। কিন্তু সেই শর্ত উপেক্ষা করে নির্দিষ্ট সময়ে প্রচণ্ডের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেন ওলি। এই নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চরম মতবিরোধ দেখা দেয়। ওলি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও এনেছেন প্রাক্তন মাওবাদী বিপ্লবীরা। এ ছাড়া কোভিড অতিমারী মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতা নিয়েও সরব হয়েছে বিরোধী গোষ্ঠী। একই সঙ্গে ভারতের সখ্যতা উপেক্ষা করে চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি নিয়েও বিরোধীদের কোপে পড়েছেন ওলি।