মাদক চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোয় সেনাবাহিনী ও পুলিশের হাতে হেনস্থা হওয়ার অভিযোগ তুললেন জাতীয় পর্যায়ের কাশ্মীরি মহিলা অ্যাথলিট।কাশ্মীরের বারামুলা জেলার সোপোরের সীলু অঞ্চলের বাসিন্দা জাতীয় পর্যায়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা ক্যারাটেকা নিঘাত বশিরের অভিযোগ, স্থানীয় ড্রাগ মাফিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর পর থেকেই তাঁর জীবনে সমস্যা তৈরি হয়েছে। নিঘাতের দাবি, তাঁর এক ভাই মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে স্থানীয় মাদক মাফিয়ার বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ জানান। তার জেরে সোপোরে ড্রাগ চক্রের ঘাঁটিতে হানা দিয়ে এক সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু তার পরে গত মঙ্গলবার রাতে ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে নিঘাতের দুই তুতো ভাইকে মারধর করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। খোঁজ করা হয় অ্যাথলিটের বাবাকেও। নিঘাতের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে তাঁর বাড়িতে হানা দিয়ে তাঁর এক আত্মীয়কে হেনস্থা করেন সেনাবাহিনীর এক মেজর। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি চিৎকার করলে মেজর হুমকি দেন যে, তাঁর বন্দুকের সব গুলি নিঘাতের শরীরে বিঁধিয়ে দেবেন। ওঁরা বাড়ির আলমারি-সহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। ড্রাগ মাফিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আমি কী ভুল করেছি?’সোশ্যাল মিডিয়ায় তছনছ করা বাড়ির ছবি পোস্ট করে নিঘাত প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কেন আমাকে হুমকি দেওয়াহল, তার জবাব চাই। ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে কি আমার এমন আচরণ পাওয়া উচিত? যদি অ্যাথলিটদের এই পরিণতি হয় তা হলে সাধারণ মানুষের ভাগ্যে কী রয়েছে?’শনিবার তিনি ফের অভিযোগ করেঠছেন যে, শ্রীনগরের হাসপাতালে ভাইকে নিয়ে যাওয়ার পথে টাপ্পর পাঠান এলাকায় তাঁকে ফের হেনস্থা করেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। নিঘাতের দাবি, ‘ওরা আমাদের হেনস্থা করার সময় উপস্থিত অফিসার জানান, যারাই ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যাবে, তার ভাগ্যেই এমন ঘটবে। ওরা আমার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। আমি সেখানে কিছু পোস্ট করতে পারছি না।’নিরাপত্তার অভাবে ভুগছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অ্যাথলিটের দাবি, ‘প্রশাসনের কাছে আমার পরিবারের নিরাপত্তার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আমাদের গোটা পরিবার আতঙ্কগ্রস্ত। কেউ অনুসন্ধানও করছে না।’জাতীয় অ্যাথলিটের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেনা মুখপাত্র রাজেশ কালিয়া জানিয়েছেন, ‘অসামরিক ব্যক্তির সম্পত্তি নষ্ট করার ঘটনায় কোনও সেনা সদস্য জড়িত নন। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।’পাশাপাশি, সোপোর পুলিশের সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট জাভেদ ইকবাল জানিয়েছেন, ‘সীলুতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে তল্লাশি অভিযান চলে। ওঁর বাড়ি তল্লাশি এলাকার বাইরে ছিল। তবে ওঁর ভাইদের বাড়ি তল্লাশির আওতায় ছিল। ওঁর এক আই ভিডিয়ো বার্তায় মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ওঁর অভিযোগ সত্যি নয়।’শুধু তাই নয়, জাতীয় অ্যাথলিট নিঘাত বশিরের অভিযোগের পিছনে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও দাবি করেন এসএসপি।