বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি সমৃদ্ধ দেশ কাজাখস্তানে সরকার বিরোধিতায় নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। জ্বালানির দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহ থেকেই বিক্ষোভের আগুনে ফুটছে দেশ। ইতিমধ্যেই এই বিক্ষোভের জেরে ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সেদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রক।উল্লোখ্য, সরকার বিরোধিতার প্রবল ঝড়ে কার্যত ধরাশায়ী মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম দেশ কাজাখস্তান। ১৯ মিলিয়ন মানুষের এই দেশে ছয় হাজার জন এপর্যন্ত এই বিক্ষোভের জেরে আটক হয়েছেন। আটক হওয়া মানুষের মধ্যে রয়েছেন বহু বিদেশীও। দেশে অস্থিরতার দেরে জায়গায় জায়গায় হিংসা ছড়িয়ে পড়ছে। ইতিমধ্যেই সেদেশের আলমাতিতে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই হিংসার ঘটনায়। পুলিশ বনাম বিক্ষোভকারীদের এই হিংসার রেশ কবে থামে, তার দিকে তাকিয়ে দেশবাসী। এর আগে, পুলিশ জানিয়েছিল, ২৬ জন সশস্ত্র বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। পাশাপাশি, নিরাপত্তাবাহিনীর ১৬ জনেরও মৃত্যুর খবর আসে। এদিকে, সেই সংখ্যা থেকে মৃতের সংখ্যা কীভাবে কয়েকদিনের মধ্যে দেড়শোর গণ্ডি ছাড়িয়েছে, তা নিয়ে রয়েছে বহু উদ্বেগ। ইতিমধ্যেই সেদেশে শুধু ৫ হাজার ৮০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভে বিদেশীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ঘটনাতেও কড়া নজর রয়েছে কাজাখ সরকারের। উল্লেখ্য, কাজাখস্তানে ভেঙে পড়া আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জেরে সেনা বাহিনী নামাতে সরকার বাধ্য হয় বলে খবর। আপাতত সেদেশের রাজধানী আলমাটিতে পরিস্থিতি নিরাপত্তা মজবুত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আপাতত আগের থেকে সেখানের পরিস্থিতি খানিকটা নিয়ন্ত্রণে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, গোটা ঘটনার সূত্রপাত, জ্বালানির দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে। আর তার জেরে একটি থানা দখল করতে যায় বিক্ষোভকারীরা। এরপরই পুলিশ বনাম বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে দেশ জুড়ে হিংসা ছড়ায়। বাড়তে থাকে মৃত্যু মিছিল। প্রেসিডেন্ট কাইসেম জোমরাত টোকিয়ায়েভ ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডেকেছেন।উল্লেখ্য, দেশের পশ্চিমপ্রান্তে জ্বালানির দাম ঘিরে বিক্ষোভ , হিংসার আগুন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এক সপ্তাহের মধ্যে। সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, বিক্ষোভপর্বের জন্য তাঁদের ১৯৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। ১০০ টিরও বেশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা চলেছে। লুঠ হয়েছে বহু ব্যাঙ্ক। ৪০০ গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশের প্রাক্তন নিরাপত্তা প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়েছে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে। মনে করা হচ্ছে, দেশের সর্বোচ্চ মসনদ দখল ঘিরে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের জেরে এই বিক্ষোভ নতুন করে ভয়াবহ রূপ পেয়েছে। কাজাখস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী করিম মসিমোভের আটক হওয়ার ঘটনা এক্ষেত্রে জল্পনা বাড়িয়ে দিচ্ছে।