🥂 দিল্লি সার্ভিসেস বিল ইতিমধ্যেই লোকসভায় পাশ হয়েছে। রাজ্যসভায় বিলটি পেশ হয়েছে এবং তা নিয়ে আলোচনা হয় গতকাল। এরপর তা নিয়ে হয় ভোটাভুটি। দিল্লির আমলাদের রাশ নিজেদের হাতে রাখতে মরিয়া কেন্দ্র এই বিলটিকে পাশ করাতে চাইছিল সংসদের উচ্চকক্ষে। বিজু জনতা দল, ওয়াইএসআরসিপি-র মতো এনডিএ-র বাইরের বেশ কিছু দলও এই বিলকে সমর্থন জানানোর বার্তা দিয়েছিল। এই আবহে বিরোধীরা সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপায় এই বিল পাশ রুখতে। এই আবহে গতকাল রাজ্যসভায় হাজির হতে দেখা যায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা কংগ্রেস সাংসদ মনমোহন সিংকে। অসুস্থ হলেও হুইলচেয়ারে করে সংসদে পৌঁছান মনমোহন। তাঁর সেই ছবি ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। এর আগে হুইলচেয়ারে করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
꧃উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে এইমসে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। এর আগে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ভরতি হয়েছিলেন মনমোহন সিং। পরে অক্টোবরে ফের একবার জ্বর, শারীরিক দুর্বলতার জন্য এইমসে ভরতি করা হয়েছিল মনমোহন সিংকে। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ নীতিশ নায়েকের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এই আবহে সেবছর শীতকালীন অধিবেশনের সময় সংসদে পা রাখেননি মনমোহন। পরেও সংসদে খুব একটা দেখা যায়নি তাঁকে।
ꦛএদিকে রাজ্যসভায় দিল্লি সার্ভিসেস বিল পাশ হয় ১৩১-১০২ ভোটের ব্যবধানে। দিল্লি সার্ভিসেস বিল নিয়ে রাজ্যসভায় প্রায় ৬ ঘণ্টার আলোচনা হয়। এরপর এই বিল নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার ভাষণ রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি দাবি করেন, ১৯৯০ সালের আনা আইনের থেকে খুব একটা আলাদা নয় এই বিল। 'নীতি' অনুযায়ী দিল্লির রাশ কেন্দ্রের হাতে রাখতেই মোদী সরকার এই বিল এনেছে। অমিত শাহ দাবি করেন, জওহরলাল নেহরুর সময় থেকেই দিল্লি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ছিল। পাশাপাশি অমিত শাহ আশ্বাস দেন, কোনও রাজ্যের অধিকার খর্ব করতে এই ধরনের কোনও বিল আনবে না কেন্দ্রীয় সরকার। এদিকে গতকাল ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেমে গলদ দেখা দেয়। এই আবহে কাগজে করে ভোটদান হয় এই বিল নিয়ে। ২০ মিনিট ধরে চলে এই ভোটদান প্রক্রিয়া। এদিকে এই বিলের সংশোধনীর দাবিতে আনা সব প্রস্তাবই ধ্বনি ভোটে খারিজ হয়ে যায়।
ཧপ্রসঙ্গত, দিল্লির প্রশাসনের ক্ষমতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েন চলছিল। এই আবহে গত মে মাসে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে বড় স্বস্তি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। পদস্থ আমলাদের বদলির বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, নিজেদের আধিকারিকদের নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার দিল্লির সরকারের রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এই সংক্রান্ত ক্ষমতা থাকা উচিত জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের হাতেই। এর আগে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের হাতে ছিল দিল্লি সরকারের আমলা বদলির ক্ষমতা। এই আবহে সরকারের সঙ্গে আমলাদের মতভেদ দেখা যাচ্ছিল। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই বিবাদে ইতি পড়ে। তবে এর পরপরই নতুন অধ্যাদেশ জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টেরিটরি অফ দিল্লি অ্যাক্ট, ১৯৯১-কে সংশোধন করে এই অধ্যাদেশ আনে কেন্দ্র। আর সেই অধ্যাদশের বদলেই এই নয়া বিল পেশ করা হয় সংসদে। এবং উভয় কক্ষে তা পাশ হওয়ায় এখন তা আইনে পরিণত হতে চলেছে।