মানুষের দ্বারা ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ঠেকানোর সেরা অস্ত্র মাস্ক। আবার বাতাসে ভর করা সংক্রমণের গতি রুখতেও মাস্কই সবচেয়ে উপযোগী। সাম্প্রতিক গবেষণায় ফের প্রমাণিত হয়েছে এই তত্ত্ব।করোনা সংক্রমণের আতুরঘর চিনের উহান শহর থেকে শুরু করে ইতালি ও নিউ ইয়র্ক থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে সমীক্ষার পরে জানা গিয়েছে, সংক্রমণ রোধ করায় সামাজিক দূরত্ব বিধি, কোয়ারেন্টাইন এবং স্পর্শের তালাশের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ফেসমাস্কের ব্যবহার। আমেরিকার টেক্সাস এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটি, টেক্সাস ইউনিভার্সিটি, দ্য ক্যালিফোরনিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এহং ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা তাঁদের অনুসন্ধানমূলক রিপোর্টে লিখেছেন, ‘শুধুমাত্র এই নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপের জোরেই ইতালিতে গত ৬ এপ্রিল থেকে ৯ মে-র মধ্যে ৭৮,০০০ এর বেশি সংক্রমণ রুখে দেওয়া গিয়েছে। আবার নিউ ইয়র্কে ১৭ এপ্রিল থেকে ৯ মে পর্যন্ত ৬৬,০০০ এর বেশি সংক্রমণ আটকানো গিয়েছে।’গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, WHO এবং আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা করোনাভাইরাসের বায়ুবাহিত সংক্রমণের বিষয়টি বরাবর এড়িয়ে গিয়েছে। যদিও দুই তরফই স্পর্শজনিত সংক্রমণ নিয়ে আগাগোড়া মাথা ঘামিয়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে WHO জানাতে বাধ্য হয়েছে যে, প্রকাশ্যে সামাজিক দূরত্ব বিধি যেখানে মানা অসম্ভব, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে একমাত্র মাস্ক ব্যবহারেই কোভিড ঠেকানো যায়।মজার কথা এই যে, এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, সুস্থ মানুষের মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। গত ৬ জুন সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল তেদ্রোস ঘেব্রেইয়েসাস জানিয়েছেন, ‘প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে জানানো হচ্ছে যে, যে সমস্ত স্থানে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলা অসম্ভব, সেখানে জনসাধারণকে মাস্ক ব্যবহারে জন্য উৎসাহ দেওয়ার দরকার সরকারের।’ভারতের মতো জনবহুল দেশে WHO-এর এই পরামর্শ বিশেষ ভাবে মেনে চলা উচিত, কারণ করোনা সংক্রমণ রোধ করতে মাস্ক ব্যবহারই সবচেয়ে সস্তা উপায়। WHO-এর দাবি, বিশ্বজুড়ে করোনার দাপট বেড়ে চললেও চিনে সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণ করতে পারার পিছনে সরকারি নির্দেশিকায় মাস্ক ব্যবহারের উল্লেখ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গবেষকতা বলছেন, হাওয়ায় ভেসে বেড়ানো জলকণায় ভর করে থাকা জীবাণু নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ রুখে দেয় মাস্ক। সামাজিক দূরত্ব বিধি, হাত ধোয়া, সরাসরি স্পর্শ এড়ানো, কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন প্রক্রিয়া কার্যকর হলেও বায়ুবাহিত সংক্রমণ রোধে ব্যর্থ। এই বিপদ থেকে বাঁচাতে পারে একমাত্র মাস্ক।