কয়েকদিন আগে যৌনতা সংক্রান্ত একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, দু’মিনিটের আনন্দের বদলে কিশোরীদের যৌন ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। কিন্তু এই নির্দেশ বা পর্যবেক♊্ষণকে ঘিরে সমাজে বিতর্ক তৈরি হতে শুরু করে। একাংশ মানুষজন বলেই ফেলেন, খিদে তো সকলেরই পায়। তাহলে তা সম্বরণ কেন? আবার একাংশ আদালতের রায়ের পক্ষেই সওয়াল করেন। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের ওই পর্যবেক্ষণে সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত একটি মামলা হয়। আজ, বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং উজ্জল ভূয়ানের বেঞ্চ। এমনকী এই নির্দেশ ভুল বার্তা দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন বিচারপতিরা।
এদিকে আ🌺জ সর্বোচ্চ আদালতের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এরকম নির্দেশে জনমানসে ভুল বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে। কোনও আদালত এভাবে মেয়েদের যৌন ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণের কথা বলতে পারে না। এই কথা বলতে গিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা মামলার শুনানিতে তাঁদের পর্যবেক্ষণ, ‘এই ধরনের নির্দেশে ভুল বার্তা পৌঁছয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৮২ ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে বিচারপতিরা যেভাবে তাঁদের ক্ষমতা ব্যবহার করছেন সেটা উদ্বেগের।’ কলকাতা হাইকোর্ট পকসো মামলার কথা মাথায় রেখে এমন পর্যবেক্ষণ করেছিল। যদিও এখানে কারও ইচ্ছার বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের বিষয়টি উঠে আসে।
অন্যদিকে পকসো আইনে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা𒀰র শুনানি হয়। সেখানে ১৮ বছরের নীচে কোনও কিশোর বা কিশোরী নির্যাতিতা হলে সেটি পকসো আইনের অধীনে পড়ে। ১৮ বছরের পরিবর্তে ওই বয়স কমিয়ে ১৬ বছর করার প্রস্তাব আদালতে আবেদন হিসাবে জমা পড়ে। সেখানে যুক্তি হিসেবে বলা ꦚহয়েছিল, ১৬ বছর বয়সের ছেলে বা মেয়ের মধ্যে যৌনমিলন হলে সেটিকে সম্মতিমূলক বলেই ধরা যেতে পারে। কারণ, বয়ঃসন্ধিকালের শারীরিক চাহিদা সম্পর্কে ওই বয়সে দু’পক্ষই অবগত থাকে বলেও জানানো হয়েছিল। আর যাতে এই বিষয়ে সমস্যা না হয় তার জন্য যৌন শিক্ষার পক্ষে সওয়াল করা হয়।
আরও পড়ুন: শীতেই🎃 বৈশাখী সাক্ষাৎ করলেন কুণাল, শোভন সৌজন্যে ফ্ল✤্যাটে বসল নিশি–বৈঠক
কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে যৌন আকাঙ্ক্ষা বা আবেদন নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ 🌃দেওয়া হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্টের যুক্তি ছিল, একজন নাবালিকা যখন দু’মিনিটের যৌন আনন্দ উপভোগ করতে রাজি হয় তখন সে সামাজিক দিক থেকে অনেক কিছু হারিয়ে ফেলে। এরপরই সমাজের অন্যান্য কর্তব্যের মতো কিশোরীদেরকে ‘যৌন আকাঙ্ক্ষা বা আবেদন নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ’ দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। তখনই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে শুনানি শুরু হয় সর্বোচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ, বৃহস্পতিবার ওই বেঞ্চের পক্ষ থেকেই কলকাতা হাইকোর্টের এমন রায়কে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এই নির্দেশের ফলে সমাজে ভুলবার্তা যাবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। রাজ্যের পক্ষ থেকে এজলাসে সওয়াল করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট হুজেফা আহমাদি। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১২ জানুয়ারি।