সম্প্রতি কুকুরের কামড়ানোর বেশ কয়েক ঘটনা ঘটেছে। হঠাত্ই বিনা প্ররোচনায় কুকুর কামড🌳়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ মানুষ কিছুটা তো ভয় পাচ্ছেনই। ভয়ে কুকুরের মালিকরাও। আর এমন অবস্থায় অনলাইনে দেদার বিক্রি হচ্ছে 'আল্ট্রাসনিক ডগ রেপেলেন্ট' নামের এক ডিভাইস। কুকুর তেড়ে এলে বা এগিয়ে এলেই নাকি এটি টিপে দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে কুকুর পড়িমরি করে পালাবে। রাস্তায় কুকুর তেড়ে এলে বা অন্য কোনও পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষার্থে ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু আদৌ কি তাই?
বিশেষজ্ঞদের মতে, কুকুর হয় তো এই আল্ট্রাসনিক শব্দ শুনতে পাবে। কিন্তু সেটা আর পাঁচটি শব্দের মতোই শুনবে তারা। ফলে এতে তারা ভয় না-ও পেতে পারে। এর কোনও কার্যকর প্রমাণও মেলেনি। উল্টে এতে ক্ষিপ্ত কুকুর আরও রেগে বা ভয় পেয়ে তেড়ে আসতে পারে। ফলে গাঁটের কড়ি খরচ করে এই ডিভাইস কিনে লোকসানের সম্ভাবনাই বেশি। আরও পড়ুন: Supreme C🌠ourt: পথ🌌কুকুরকে কি খেতে দেন? কামড়ালে দায় কার? কী প্রস্তাব আদালতের!
তাহলে উপায়?
নিজের মতো নেচে রিলস বানাচ্ছিলেন এক কিশোরী। হঠাত্ নেড়ি কুকুর এসে কামড়ে দিল তাঁকে। এমন ভিডিয়ো এর আগেಞ ভাইরাল হয়েছে। আচ্ছা, সেটি না হয় রাস্তায় থাকা কুক⛄ুর।
সম্প্রতি আরও ভয়ানক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। আবাসনে ঢুকছেন এক একজনের পোষা গোল্ডেন রিট্রিভার। আবার আরেক ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, লিফটে এক ⛦শিশুকে কামড়ে দিল একটি পোষা বিগল। দু'টি ঘটনাই বিনা প্ররোচনায়। দু'টিতেই মালিকের হাতে কুকুরের লিশ ছিল। তা সত্ত্বেও এমন অঘটন।🌳 আর অদ্ভুত বিষয় হল, দুই ক্ষেত্রেই নিজের উদাসীনতা বা কুকুর নিয়ন্ত্রণ করতে পারার অক্🃏ষমতাকে অস্বীকার করছেন মালিকরা।
ফলে অনেকেই কুকুরের বিষয়ে বেশ ভয় পাচ্ছেন। বিশেষত,
- যাঁরা পেশার কারণে রাতে ফাঁকা রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরেন।
- ফুড, ই-কমার্সের ডেলিভারি পার্সন, ডাক বিভাগের কর্মীরা।
- সাফাইকর্মীরা।
কাজের সূত্রে বিভিন্ন কর্মীদের বিভিন্ন স্থানে যেতে হয়। আর সেই সময়ে অচেনা লোক দেখে তাঁদের দিকে কুকুর তেড়🍬ে আসার ঘটনা খুব সাধারণ ব্যাপার। তাছাড়া শিশুদের কুকুরের বিষয়ꦑে ধারণা কম। তাই স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত মা-বাবারা।
এমন পরিস্থিতিতে আপনাকেই সাবধান হতে হবে
- কুকর আছে, এমন আবাসনে প্রবেশের আগে সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনে যিনি ডেলিভারি নেবেন, তাঁকে নিচে বা বাড়ির বাইরে আসতে অনুরোধ করুন।
- কুকুর চেন দিয়ে বাঁধা বা কারও হাতে থাকলেও সাবধান থাকুন। কাছে যাবেন না। এক লিফটেও ওঠা এড়িয়ে চলুন।
- রাস্তায় নেড়ি কুকুর দেখে ভয় লাগলে অন্য রাস্তা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। দ্রুত বাইক বা সাইকেলে যাওয়ার চেষ্টা করলে, ঢিল মারলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
- কুকুর চেঁচিয়ে তেড়ে এলে আর যা-ই করুন, দৌড়বেন না। চেঁচিয়ে তার দিকে এক ধাপ এগিয়ে যান। নিজের জমি ধরে রাখুন। আস্তে আস্তে হেঁটে সরে যান।
- শিশুদের কুকুরের থেকে ভয় না পাওয়ার, এবং অপরিচিত কুকুরের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে সচেতন করুন।
- আবাসন বা প্রতিবেশীর কুকুর বা পাড়ার নেড়িদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে ফেলাই ভাল। কুকুর নিয়ে অযথা নার্ভাস হলে তা তারা ধারণা করতে পারে।
সতর্ক হতে হবে কুকুরের মালিক/কুকুর প্রেমীদেরও
কুকুরের মালিকরাও চান না তাঁদের সন্তানসম পোষ্যটি কাউকে কামড়ে দিক। তাই নিজের সন্তানের মতোই, পোষা কুকুরের বিষয়ে✅ও ꧃তাঁদের সাবধান হতে হবে।
- ছোট বাড়ি বা আবাসনে ল্যাবরেডর, জার্মান শেফার্ড, ডোবারম্যান, রটউইলারের মতো বড়, ওয়ার্কিং ডগ না কেনাই ভাল। এই জাতীয় কুকুর বহু বছর ধরে অত্যন্ত পরিশ্রম করার জন্য আদর্শভাবে ব্রিড করা হয়েছে। তাই জিনগতভাবেই এমন কুকুরদের রোজ ১-২ ঘণ্টা খেলা, পরিশ্রম করা প্রয়োজন। তাতেই ওরা খুশি থাকে। ছোট আবাসন বা বাড়িতে তা রোজ সম্ভব হয় না। আর তাতেই তাদের মধ্যে আগ্রাসী ভাব এসে যায়। এটি বিশেষত যাঁরা প্রথম কুকুর পুষছেন, তাঁদের জন্য প্রযোজ্য।
- যে কোনও কুকুরেরই রোজ বাইরে বের হওয়া, খেলা করা প্রয়োজন। সেই সময় দিতে না পারলে কুকুর না পোষাই ভাল।
- ছোট অবস্থা থেকেই কুকুরকে ট্রেন করুন। ইউটিউবে কুকুরের বেসিক সহবত শিক্ষা দেওয়ার একাধিক ভিডিয়ো পাবেন। কুকুর পোষা শুধু ভালবাসা নয়, দায়িত্বেরও বটে।
- ছোট বয়স থেকেই কুকুরকে 'সোশ্যালাইজ' করান। রোজ হাঁটাতে বের হন, বেড়াতে নিয়ে যান, মানুষ, ভিড়, অন্য কুকুর, বিড়াল দেখতে অভ্যস্ত করে তুলুন।
- বাড়িতে ডেলিভারি পার্সন বা অন্য কেউ এলে, তাঁর অনুমতি ছাড়া কুকুর ছেড়ে রাখবেন না। আলাদা ঘরে রাখুন। লিশে বাঁধা থাকলে তা শক্ত করে ধরে রাখুন। একই লিফটে ওঠা এড়িয়ে চলুন।
- অচেনা শিশুদের থেকে কুকুর দূরে রাখাই শ্রেয়।
- পথ কুকুরদের খাওয়নো নিঃসন্দেহে খুব ভাল বিষয়। তবে তারা যাতে আবাসনে প্রবেশ না করে এবং অন্যদের ভয়ের কারণ না হয়, সেই বিষয়ে সচেতন থাকুন। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে নির্বীজকরণ, টিকাকরণ, চিকিত্সার মতো ব্যবস্থা করুন।